বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর

আচমকা তাপমাত্রা কমায় গম ও
আলু চাষির কপালে চিন্তার ভাঁজ

সুখেন্দু পাল, বহরমপুর: জানুয়ারির গরমে মুর্শিদাবাদ জেলার গম চাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। আলু চাষিদেরও চিন্তা বেড়েছে। কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদ জেলার লালবাগ, জিয়াগঞ্জ, আজিমগঞ্জ, ডোমকল, জলঙ্গি, নওদা, রানিনগর সহ বিভিন্ন এলাকায় গম চাষ হয়। ভাইরাসের আক্রমণে জেলায় দু’বছর এই চাষ বন্ধ ছিল। এবছর অনেকেই আশা নিয়ে চাষ শুরু করেছিলেন। কিন্তু এবার প্রকৃতি বিমুখ। শীত না পড়লে গাছ বাড়বে না। ফলনও ঠিকমতো হবে না। এমনই দাবি চাষিদের।
জেলার কান্দি মহকুমায় সবচেয়ে বেশি আলু চাষ হয়। এছাড়া বেলডাঙা, রেজিনগর, নবগ্রাম লালবাগ এলাকাতেও এই চাষ হয়ে থাকে। শীত উধাও হয়ে গেলে আলু জমিতেও বিভিন্ন ধরনের রোগের সংক্রমণ দেখা দেবে বলে চাষিরা জানিয়েছেন। তাঁরা বলেন, এই আবহাওয়ার জন্য গম ও আলু চাষিরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়বেন। এবছর অনেক বেশি দাম দিয়ে বীজ কিনে আলু চাষ করতে হয়েছে। গম বীজের দামও ভালো ছিল। এই অবস্থায় ফলন ঠিকমতো না হলে চাষিদের পথে বসা ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না।
লালবাগের কাপাসডাঙা এলাকার চাষি ফিরোজ শেখ বলেন, গম চাষের জন্য শিশির এবং শীত এই দু’টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তা না হলে গাছে শিষ আসবে না। রোদের তাপে গাছ লাল হয়ে যাবে। প্রতি বিঘা জমিতে ইতিমধ্যেই কয়েক হাজার টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। সার ও বীজের অনেক বেশি দাম ছিল। এরকম আবহাওয়া চলতে থাকলে বিঘার পর বিঘা জমির গম গাছ নষ্ট হয়ে যাবে। গম চাষে এবার বিমা হয়নি। চাষিরা ক্ষতিপূরণ পাবেন না। ওই এলাকারই আর এক চাষি সিরাজুল শেখ বলেন, অনেকেই ধারদেনা করে চাষ করেছেন। এখন তাঁরা কী করবেন সেটাই ভেবে পাচ্ছেন না। আমার প্রায় দেড় বিঘা জমিতে আলু চাষ রয়েছে। প্রায় দ্বিগুণ দাম দিয়ে বীজ কিনতে হয়েছিল। এখনও গাছের তেমন ক্ষতি হয়নি। কিন্তু আর কয়েকদিন এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে ধসা রোগের আক্রমণ দেখা দেবে। এমনিতেই এবছর চাষিরা সব্জির দাম পাচ্ছে না। ফুলকপি, বাঁধাকপি, মটরশুঁটি সহ সমস্ত সব্জি কার্যত জলের দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তারপর গম এবং আলু চাষও ক্ষতিগ্রস্ত হলে চাষিদের আর্থিক অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে পড়বে।
প্রসঙ্গত, তিন বছর আগে হোয়াইট ব্লাস্ট হাওয়ায় জেলা কৃষিদপ্তর দু’বছর চাষিদের গম চাষ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। গতবছর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠেছে। সেবছর অল্প পরিমাণ জমিতে চাষ হয়েছিল। এবার কয়েক হাজার চাষি লাভের আশায় গম চাষ করেছেন। তবে এবছরও গম চাষের জন্য কৃষিদপ্তর চাষিদের উৎসাহিত করেনি। আধিকারিকদের দাবি, ভাইরাসের আক্রমণের পর বেশ কয়েক বছর তার প্রভাব থেকে যায়। সেই কারণেই উৎসাহিত করা হয়নি। কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জানুয়ারি মাসে সাধারণত এভাবে শীত উধাও হয় না। তবে আশা করা যায় কয়েকদিনের মধ্যে আবার জাঁকিয়ে শীত পড়বে। সেটা হলে তেমন ক্ষতি হবে না। কিন্তু এরকম গরম ভাব থাকলে রবি মরশুমের সমস্ত ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। হরিহরপাড়ার কৃষি আধিকারিক মৌমিতা মজুমদার বলেন, এরকম গরম থাকলে গম গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হবে। আলুর ধসা রোগ ধরবে। 

13th     January,   2021
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ