বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
অমৃতকথা
 

দুঃখ

মানুষ দুঃখী জীব। অশেষ দুঃখে জীবন ভরা তার। এমন মানুষটি জগতে নাই যে কখনও করে নাই কোন দুঃখ ভোগ। দুঃখ-কাতর জীব নিরন্তরই করে সুখাভিলাষ। “সুখং যে ভূয়াদ্‌ দুঃখং মে মা ভূৎ”—উপনিষদের এই মন্ত্রই হইল জপমালা, বিশ্বের সকল মানুষের।
সুখ চায় মানুষ, দুঃখী বলিয়াই ত। সুখ যে মানুষ একেবারেই পায় না তাহা নহে। মাঝে মাঝে পায় ক্ষণিক সুখ। সাময়িক সুখ টেঁকে না। সেই নশ্বর সুখে হয় না কাহারও পরিতৃপ্তি। মানুষ খোঁজে অন্তরে অন্তরে সেই সুখ—যে সুখ নিরবচ্ছিন্ন, শাশ্বত, অনাবিল। যে সুখ দুঃখ-সংস্পর্শবর্জিত, নিত্যনিরতিশয়, আত্যন্তিক। সেই সুখেরই নামান্তর ব্রহ্মানন্দ। জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতসারে মানুষ যাহা কামনা করে তাহা ব্রহ্মবস্তুই। নিত্যকাল প্রতিক্ষণে শ্রীভগবান্‌কেই খুঁজিয়া বেড়ায় প্রতিটি জীব।
মানুষ অনুসন্ধান করে তাঁহাকে, কিন্তু জানে না পথের সন্ধান। শাস্ত্রসমূহ জীবকে নির্দ্দেশ দেন সেই পথেরই স্পষ্টভাবে। শাস্ত্রকারগণ বলেন—নিত্যসুখকর আনন্দঘন বস্তু শ্রীভগবাম্‌কে অনুসন্ধান কর এই পথ ধরিয়া। তাঁহাকে ভজনা কর, ধ্যান কর এই উপায় অবলম্বনে। চিরশান্তি পাইবে তাঁহাকে পাইলেই। শ্রীভগবান্‌কে ভজন করিবার উপদেশ ও উপাসনা করিবার পথনির্দ্দেশ আছে সকল শাস্ত্র ভরিয়া। শাস্ত্রবিধিমত ভগবদুপাসনা করিয়া শাশ্বত শান্তির অধিকারী হন ভাগ্যবান্‌ জীব য়াঁহারা যাহারা ভাগ্যহত তাহারা ভজন-সাধন করিতে পারে না কেবল দুঃখের পাথারে ভাসে তাহারা। এইরূপ জীবের সংখ্যা সর্ব্বাধিক এই কলিযুগে। তাই শ্রীমদ্ভাগবত শাস্ত্র জগতে প্রকটিত হইয়াছেন কলিযুগ আগমনের সঙ্গে সঙ্গেই শ্রীমদ্ভাগবত শাস্ত্র এক অভিনব বার্ত্তা বহন করিয়া আনিয়াছেন কলিহত জীবনিবহের দুয়ারে। সকল শাস্ত্র, জীবকে বলিয়াছেন ভগবান্‌কে ভজিতে। ভাগবতশাস্ত্র কেবল তাহাই করেন নাই। তাঁহার সন্দেশ অঘোষিত-পূর্ব্ব।
শ্রীভাগবত বলিয়াছেন,—“হে জীব, তোমাম ত সামর্থ্য নাই ভজিবার, যোগ্যতা নাই ডাকিবার। গ্রহণ কর তুমি আমার কথা। থাক তুমি শুধু কান পাতিয়া নীরবে, তুমি আর তাঁহাকে কী ডাকিবে, শোন তিনিই তোমায় ডাকিতেছেন। তোমার আর তাঁহার জন্য কতটুকু আর্ত্তি! তোমা অপেক্ষা কোটি গুণ অধিক আর্ত্তি লইয়া তিনি তোমায় আহ্বান করিতেছেন।” ভাগবতের দেবতা মুরলীধারী নিরন্তর মুরলী করে ধরিয়া সবাইকে তাঁহার নিকটে ডাকিতেছেন “সর্ব্বভূত-মনোহরং” নিনাদ ছড়াইয়া দিয়া। তুমি পার না তাঁহাকে ডাকিতে, তাই ডাকিতেছেন তিনিই তোমাকে। মানুষ ভগবানের কাছে যাইতে পারে না, তাই ভগবান্‌ নামিয়া আসিয়াছেন মানুষের কাছে। ডাকিতে জানে না অজ্ঞ জীব, তাই ডাকিতেছেন বাঁশরিয়া মোহনবাঁশরীতে। ইহাই বিশ্বের বাজারে ভাগবত শাস্ত্রের অভিনব অবদান। এই নূতন ঘোষণাই শ্রেষ্ঠত্বের পরিচায়ক জগতের দরবারে শ্রীমদ্ভাগবতীয় শাস্ত্রগ্রন্থের। ভাগবত আত্ম-পরিচয়ে বলিয়াছেন—“নিগমকল্পতরোর্গলিতং ফলম্‌” আমি ভাগবত, আমি বেদকল্পবৃক্ষের বিগলিত ফল। গলিয়া পড়িয়াছি কৃপায়। নামিয়া আসিয়াছেন আমার দেবতা অসীম করুণায় গোলোকধাম হইতে গোকুল-ভূমিতে কালিন্দীর পুলিনাঙ্গনে।
ডঃ মহানামব্রত ব্রহ্মচারীর ‘উদ্ধব-সন্দেশ’ থেকে

11th     September,   2023
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ