অমৃতকথা

ভিক্ষুসংঘ ও ভিক্ষুণী সংঘ

ভিক্ষু বা সন্ন্যাসীদের জন্য বুদ্ধদেব গৃহস্থের পঞ্চশীল ব্যতিরিক্ত আরও কয়েকটি নিয়ম নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন। ভিক্ষুরা সাধারণতঃ গার্হস্থ্য পরিবেশের বাইরে সংঘ বা মঠে বাস করতেন। ভিক্ষুণীদের জন্যও পৃথক সংঘ ছিল। ভিক্ষুণী সংঘেরও অনেক কঠোর নিয়ম-শৃঙ্খলা ছিল। প্রাতিমোক্ষ নামক গ্রন্থে বৌদ্ধসংঘের নিয়মাবলী লিপিবদ্ধ আছে। এই নিয়মভঙ্গকারীকে সংঘের অপরাপর ভিক্ষুর নিকট অপরাধ স্বীকার এবং শাস্তি গ্রহণ করতে হত। সাধারণ অপরাধের জন্য অনুশোচনা এবং সংঘের নিকট ক্ষমা প্রার্থনাই যথেষ্ট ছিল। কিন্তু গুরুতর অপরাধ অথবা সংঘভেদের অপরাধের জন্য অপরাধীকে সংঘ থেকে বহিষ্কার করা হত। বৌদ্ধসংঘ পরিচালনায় গণতান্ত্রিক পদ্ধতি অবলম্বন করা হত। অধিকাংশ ভিক্ষুর ভোটে সংঘের নির্বাচন এবং শাসন ব্যবস্থা পরিচালিত হত। 
বৌদ্ধমতে সাধকের স্তর ভেদ
অষ্টাঙ্গিক মার্গের সাধন এবং শীলব্রতের অনুষ্ঠান করলে ক্রমশঃ সাধকের চিত্ত থেকে মালিন্য দূর হয়। শুদ্ধচিত্ত সাধক নির্বাণলাভের অধিকারী হন। বৌদ্ধ সাধনার ক্রম অগ্রগতির চারটি স্তর আছে— ১। স্রোতাপন্ন, ২। সকৃদাগামি, ৩। অনাগামি ও ৪। অর্হৎ। যখন সংসারের অনিত্যতা ও দুঃখ অনুভব করে সাধক ধর্মপথে নির্বাণলাভের জন্য উদ্‌যোগী হন, তখনই তিনি ধর্মের স্রোতে ‘আপন্ন’ বা পতিত হন। এখান থেকে সাধকের ঊর্ধ্বপথে নির্বাণলাভের পথে যাত্রা শুরু। স্রোতাপন্ন হয়ে সাধক যদি নির্বাণলাভের পূর্বেই দেহত্যাগ করেন তাহলে তাঁকে দুঃখ নিরোধের জন্য ‘সকৃত’(আর একবার) জন্মগ্রহণ করতে হয়। অনাগামি স্তরে সাধকের সব বাসনা কামনা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে যায়। অনাগামি নির্বাণ লাভ করেন এবং তাঁকে আর সংসারের আগমন(জন্মগ্রহণ) করতে হয় না। অর্হৎ অবস্থায় সাধকের চিত্ত বিমুক্তি ও প্রজ্ঞার আনন্দ লাভ হয়। তাঁর কোন তৃষ্ণা থাকে না। তিনি সংসারে বাস করলেও সংসারের কোন বন্ধনে লিপ্ত হন না। অর্হত্ব অবস্থাই নির্বাণের ফলশ্রুতি। বৌদ্ধ সাধকের সাধনার চরম অবস্থা হল অর্হত্ব লাভ। এই অর্হৎগণই হলেন ‘তথাগত’। ‘তথা’= নির্বাণ বা মুক্তির অবস্থা সেখানে ‘গত’= উপনীত। গৌতম বুদ্ধও ছিলেন ‘তথাগত’। 
বৌদ্ধধর্মে নানা শাখার উৎপত্তি— হীনযান ও মহাযান
বুদ্ধের দেহত্যাগের পর থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত বুদ্ধের মূল বাণী ও উপদেশকে ভিত্তি করে নানা দার্শনিক মতবাদ ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উৎপত্তি হয়েছে। বুদ্ধের দেহত্যাগের কয়েক শতাব্দীর মধ্যেই বৌদ্ধধর্ম ভারতের সর্বত্র এবং পৃথিবীর নানা দেশে—বিশেষতঃ বর্তমান এশিয়ার সর্বত্র বিস্তারলাভ করে। ভারতের বাইরে যে সকল দেশে বৌদ্ধধর্ম প্রবেশ করেছে সেই সকল দেশের সমসাময়িক দার্শনিক চিন্তা ও ধর্মীয় সাধন পদ্ধতির সঙ্গে বৌদ্ধধর্ম এক অভিনব রূপে মিশে গিয়ে নূতন আকার ধারণ করেছে। আবার ভারতেই বৌদ্ধসংঘের মধ্য থেকে নানা মতের সৃষ্টি হয়ে বৌদ্ধ ধর্ম নানা উপশাখায় বিভক্ত হয়েছে। চীন, তিব্বত, জাপান, মঙ্গোলিয়া, কোরিয়া প্রভৃতি দেশে বৌদ্ধধর্মের শতাধিক শাখা উপশাখা দৃষ্ট হয়। ভারতেই এককালে বৌদ্ধধর্মের আঠারটি শাখা উপশাখা দৃষ্ট হয়। বৌদ্ধধর্মের সকল শাখার উপাসকগণই বুদ্ধকে তাঁদের জীবনাদর্শরূপে এবং তাঁদের নিজ নিজ শাখার মত ও পথের প্রবক্তা রূপে দাবী করেন। বৌদ্ধধর্মের বহুশাখার অস্তিত্ব স্বীকার করেও ইহাকে প্রধানতঃ দুই শাখায় ভাগ করা হয়—হীনযান ও মহাযান। বুদ্ধের বাণী ও মূল উপদেশ পালিভাষায় তিনটি ‘পিটকে’ (গ্রন্থে) লিপিবদ্ধ আছে। তাই একে বলা হয় ত্রিপিটক। যথা সূত্রপিটক, বিনয়পিটক ও অভিধর্মপিটক। যে বৌদ্ধ সম্প্রদায় পালিভাষা-গ্রথিত এই তিন পিটকে উল্লেখিত উপদেশ, মত ও পথকে অবলম্বন করে ‘ধর্মসাধনা’ করেন তাঁদের বলা হয় হীনযান। বর্তমান সিংহল, ব্রহ্মদেশ ও থাইল্যাণ্ডে এই সম্প্রদায়ের বৌদ্ধ বেশী।
স্বামী লোকেশ্বরানন্দ সম্পাদিত ‘ভারত-সংস্কৃতির রূপরেখা’ থেকে
16Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পারিবারিক অশান্তির অবসানে গৃহ সুখ ও শান্তি বাড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মে উন্নতি। উপার্জন বৃদ্ধি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৬ টাকা৮৪.৩৫ টাকা
পাউন্ড১০৬.৪৬ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৯.৭৬ টাকা৯২.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা