বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
অমৃতকথা
 

পবিত্র

যে যেখানেই থাকো, মনে প্রাণে পবিত্র হবার চেষ্টা করবে। মনে প্রাণে পবিত্র হতে পারলে গুরুর সান্নিধ্যেই থাকা হবে। ঠিকঠিক পবিত্র হয়ে তাঁর দিকে মনটা রাখতে পারাই সত্যিকার তাঁর কাছে থাকা। ভাল হওয়া মানে মনে প্রাণে সৎ হওয়া। নামের পেছনে একটি বস্তু আছে, একটি solid বস্তু বা substance আছে। স্থূল জগতে যেমন ইঁট কাঠ প্রভৃতি প্রত্যেক বস্তুর নাম এবং  solid অস্তিত্ব দুইই আছে, তেমনি আধ্যাত্মিক জগতেও নাম বললেই তার পেছনে যে নামী, তার অস্তিত্বটাও রয়েছে। আগে বস্তু তবে তো নাম। স্থূল জগতেই দেখ—ছেলে হল, তারপর তার একটা নাম দেওয়া হল। বস্তুটিকে হাতে পেয়ে নাম দিই। স্থূল জগতে বস্তুর সঙ্গে তার নামের ঘনিষ্ঠ যোগটা আগেই হয়ে যায় তাই বুঝতে কষ্ট হয় না। কিন্তু সূক্ষ্ম জগতে বস্তুটিকে দেখতে পাই না বলে অসুবিধা হয়। সূক্ষ্ম জগতে আগে নামকে ধরে এগিয়ে যেতে হয়। নামীর সত্তাটি প্রথমেই ধারণায় আসে না। কাজেই খুবই অসুবিধা হয়। কিন্তু বিশ্বাস আর চেষ্টাটি রেখে যেতে হবে। এক্ষেত্রে ভালবাসাটা খুবই কঠিন। গুরু ইষ্টনাম দিলেন। কিন্তু নামীকে হাতের কাছে তো পাচ্ছি না। কাজেই নামের মাধ্যমেই ভালবাসাটা আনতে হবে। নাম করছি পাখিপড়ার মত, তার কারণ, পেছনের বস্তুসত্তাটির ধারণা নেই। বিশ্বাসটি আনতে হবে সর্বপ্রথম এবং ধীরে ধীরে ভালবাসাটা বাড়াতে হবে নামীর প্রতি। —নাম করতে করতেই এটা হবে। তিনি ভক্তের, ভক্ত তাঁর। এ সম্পর্ক জগতের সব সম্পর্কের চেয়ে নিত্য এবং চিরন্তন। সংসারের মধ্যে তিনি ভক্তদের রেখে যেমন নানা অবস্থায় ফেলে পরীক্ষা করেন ভক্তির, তেমনি সংসারকে ধন্য করার সুযোগও দেন। তাই ভয় পাবার কিছু নেই, বিশেষ করে যারা ভগবানকে গুরু রূপে, জীবন্ত জাগ্রত রূপে পেয়েছে, তারা আরও বেশি ভাগ্যবান, তাদের রক্ষা তাঁকে করতেই হবে। আধ্যাত্মিক, আধিভৌতিক, আধিদৈবিক— সব বিপদ থেকে তিনি রক্ষা করবেন আমাদের। আমাদের কর্তব্য শুধু তাঁকে নিত্য দিনের স্মরণ-সাথী করে রাখা। আর চেষ্টা করা তাঁর আদেশগুলি পালন করে যাওয়ার। এ যুগ রামকৃষ্ণ-সত্যানন্দের যুগ। এযুগে তাঁর কৃপা সব যুগের চেয়ে বেশি। তিনি তো জানছেন এ যুগের মানুষ বড় অসহায়, তাই তাঁর কৃপার দরজা সর্বদা তাদের জন্য উন্মুক্ত। আমাদের প্রতিটি কথা তিনি কান পেতে শুনেছেন। আমাদের হাত ধরে আছেন।
মানুষকে যা দেবে তা হারিয়ে যেতে পারে কিন্তু ভগবানকে যা দেবে তা চিরন্তন হবে। ভগবানের দরবারে যে গান ভেট দেবে তা সার্থক হবে। সাধারণতঃ মনে হয়— এই ছোট্ট আশ্রমের চার দেওয়ালের ভেতর গান গেয়ে কি হবে! এখানে কেই বা গান শুনছে। বাইরে বড় বড় আসরে শত সহস্র শ্রোতাদের মাঝে গান পরিবেশন করলে তার একটা মানে আছে। কিন্তু এইখানে এই ঠাকুরের চরণে বসে যারা গান গেয়ে যায়, তারা তাঁর কৃপাতেই সব পেয়ে যায়। ডাক্তার তাকেই বলবো যে রোগীর কাছে দেবদূতের মত এসে দাঁড়াবে, যাকে দেখলেই রোগীর মনে হবে তার অর্ধেক রোগ ভাল হয়ে গেছে, তার কথায় থাকবে আশ্বাস, রোগীকে সে ভরসা দেবে, শান্তি দেবে। মরণ বাঁচান তো ঠাকুরের হাতে। ডাক্তারের কখনও উচিত নয় রোগীকে হতাশ করা বা তার প্রতি অবহেলার ভাব দেখানো। শুধু গুচ্ছের বড় বড় উপাধি হলেই যে ভাল ডাক্তার হবে তার কোনও মানে নেই। অভিজ্ঞতাটাই আসল। বড় বড় সব পাশ থাকলে আর ঝুড়ি ঝুড়ি উপাধি থাকলে তার ফী-টা হয়ে যায় দশগুণ। তখন সাধারণ মানুষ ক’জন তাদের নাগাল পাবে? বড় ডাক্তার মানে শুধু কতকগুলো ধনীলোকের ডাক্তার, তা তো নয়। সে যদি সাধারণ মানুষের সেবাতেই না লাগল তবে তার ডাক্তারি পাশ করাটাই বৃথা। ডাক্তারি পাশ ক’রে ডিগ্রী নেওয়ার সময় তাদের অনেকগুলি প্রতিজ্ঞা করতে হয়— বলতে হয়, আমি জনগণের সেবক, জন-কল্যাণটাই হবে আমাদের মূলমন্ত্র অথচ অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় বড় বড় উপাধি, ডবল FRCS. এসব হলেই তখন তাদের জনসেবার মন্ত্রটা ভুল হয়ে যায়।
শ্রীঅর্চনাপুরী মাতার ‘ছড়ানো মুক্তো’ থেকে 

10th     March,   2023
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ