বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
অমৃতকথা
 

সাধনোপদেশ

প্রজাপতি হইতে আরম্ভ করিয়া আজ পর্য্যন্ত কোন ঋষিই প্রকৃত অধিকার ভিন্ন কোন শিষ্যকে সাধনোপদেশ দিয়াছেন বলিয়া শোনা যায় না। কারণ অনধিকারীকে কোন সফল বিদ্যা দান করিলে জীবের ও জগতের তাহার ফলে কল্যাণ হইতে অকল্যাণই বেশী হয়। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় রসায়নশাস্ত্র একটি সফল বিদ্যা। এই বিদ্যায় বিশেষ পারদর্শিতা লাভ করিতে পারিলে সেই পারদর্শী ব্যক্তি জগতের অশেষ কল্যাণ সাধন করিতে পারে এবং স্বয়ং উত্তরোত্তর ঐ বিদ্যায় অধিকতর পারদর্শিতা লাভ করিতে পারে। কোন খল চতুর লোক এই বিদ্যায় পারদর্শিতা লাভ করিলে সে এই রসায়ন বিদ্যার সাহায্যে নানারূপ ভেজাল ও ঔষধ পথ্য এবং নিত্য ব্যবহার্য বহু জিনিষ প্রস্তুত করিয়া নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য অগণিত নরনারীর স্বাস্থ্য ও আয়ু হানির কারণ হয়। আর যে সকল ব্যক্তি প্রয়োগ বিধিতে কুশলতা অর্জ্জন না করিয়া রসায়ন শাস্ত্রের মূল নীতি ও মূলসূত্র জানেন তাহাদের নিকট রসায়ন বিদ্যা নিস্ফল শাস্ত্রে পরিণত হয়। সাধন কৌশল ও সাধন সূত্র সম্বন্ধেও এই কথা বলা চলে। দুরাত্মা প্রয়োগ কুশলীদের হাতে এই সকল অমোঘ বীর্য্য সাধন কৌশল জন কল্যাণের হানি করে এবং ঐ সকল সাধক দিগকে নিরয়গামী করে। প্রয়োগ বিজ্ঞান অনভিজ্ঞ মূর্খ সাধকদের নিকট এই সকল অমোঘ বিদ্যা অফলা বিদ্যারূপে পরিণত হইয়াছে।
শিষ্য—বর্ত্তমানে এই মন্ত্র কৌশল শিক্ষাদানের ব্যবস্থা কিরূপে আছে জানিতে ইচ্ছা হয়।
গুরু—ইহা ঠিক ঠিক ভাবে বর্ণনা করা কঠিন। কারণ এই মহামন্ত্র কৌশল সাধনা পৃথিবীতে বরাবরই ছিল। উনবিংশ শতাব্দির শেষ দশক হইতেই ঋষিদের ইচ্ছায় এই সাধনার ধারা অধিকারী বুঝিয়া জনসাধারণের মধ্যে বিস্তার করার ব্যবস্থা ঋষিগণ করিয়াছেন বলিয়া শুনিয়াছি। শক্তিমান গুরুগণ প্রথমে গুরুবীজ ভিন্ন অন্য পাঁচটি কর্ম কৌশল বা মন্ত্র কৌশল উপযুক্ত অধিকারিদের প্রদান করিতেন। তাঁহারা ব্যক্তিগত ভাবে প্রত্যেক শিষ্যকে এই পাঁচটি মন্ত্র কৌশলের মাধ্যমে সাধনের প্রতিটি স্তরের বৈশিষ্ট্য উপলব্ধি করাইতেন এবং যখন দেখিতেন এই সকল সাধকদের মধ্যে কেহ কেহ কাম, ক্রোধ, লোভ এই তিনটি দোষকে স্তিমিত করিয়াছে এবং দম, দান ও দয়াগুণে সবিশেষ অলঙ্কৃত হইয়াছেন তাহাদিগকেই তখন তাঁহারা গুরুবীজ কৌশল শিক্ষা দিতেন।
শিষ্য—অমূর্ত্ত তূরীয় পরমাত্মার সত্য ব্রহ্মরূপে আবির্ভাব, তাহার বহু হইবার ইচ্ছা এবং সুখ দুঃখ মোহাত্মক এই বিশ্ব সৃষ্টির কি প্রয়োজন ছিল তাহাই আমরা বুঝিয়া উঠিতে পারি না।
গুরু—পরবর্ত্তী ব্রাহ্মণে শ্রুতি মন্ত্রেই তোমার এই প্রশ্নের উত্তর আছে। ঐ ব্রাহ্মণ ব্যাখ্যা কালেই আমরা ইহা নিয়া আলোচনা করিব।
শিষ্য—আপনি বলিয়াছিলেন পরমাত্মার বহু হইবার ইচ্ছা কেন হইল এই পঞ্চম ব্রাহ্মণ আলোচনা কালে বর্ণনা করিবেন। 
গুরু—পরমাত্মার বহু হইবার ইচ্ছা কেন হইল এবং প্রথম কখন হইয়াছিল এই প্রশ্নের উত্তর আমি তোমাদিগকে পূর্ব্বেই দিয়াছি। “একমেবাদ্বিতীয়ম্‌” পরমাত্মা যদি কখন ও সত্য সত্যই বহু হইবার ইচ্ছা করিয়া থাকেন তখন তো দ্বিতীয় কোন সাক্ষী ছিল না। পরমাত্মতত্ত্বে প্রতিষ্ঠ হইলে দ্বৈতভাবে এই প্রশ্ন থাকে না। এই সৃষ্টির যে আদি আছে তাহার প্রমাণও করা যায় না। ইচ্ছাময় পরমাত্মা অনাদি অনন্ত। তাঁহার ইচ্ছাও অনাদি অনন্ত।

সুধীররঞ্জন সেনগুপ্তের ‘ঔপনিষদিক সাধন রহস্য’ থেকে

13th     January,   2023
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ