বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
অমৃতকথা
 

কার্য

বহু বিঘ্ন অতিক্রম করিয়া, বহু সমস্যা সম্মুখে রাখিয়া কর্মক্ষেত্রে নিবেদিতার প্রথম পদক্ষেপ। ১৮৯৮ খৃষ্টাব্দের ১৩ই নভেম্বর নিবেদিতা প্রথম বাগবাজার পল্লীতে ১৬ নং বোসপাড়া লেনে তাঁহার বিদ্যালয়ে শিক্ষাকার্যের সূচনা করিলেন। বিদ্যালয়ের জন্য অর্থসংগ্রহ, ছাত্রীসংগ্রহ, বিদ্যালয় পরিচালনা প্রভৃতি প্রতিটি কার্য নিবেদিতা একাকী সম্পন্ন করিতেন। সেই অনগ্রসর যুগে, কঠোর সামাজিক বিধি নিষেধের বেড়াজালে উপযুক্ত প্রতিটি কার্যই বিশেষ করিয়া একজন বিদেশিনীর নিকট কী পরিমাণ দুঃসাধ্য ছিল—তাহা আজিকার এই দ্রুত অগ্রসরমান বৈজ্ঞানিক উন্নতির যুগে আমাদের নিকট অচিন্তনীয়। প্রায় আট মাস বিদ্যালয় চলিবার পর তিনি তাহা কিছু দিনের জন্য বন্ধ করিয়া দিলেন। (ভবিষ্যতে কর্মক্ষেত্রের প্রসার সম্ভব চিন্তা করিয়া) নিবেদিতা অর্থ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ১৮৯৯ খৃষ্টাব্দের জুন মাসে স্বামীজীর সহিত পাশ্চাত্যে গমন করিলেন। ১৯০২ খৃষ্টাব্দে তিনি পুনরায় ভারতে আগমন করিলেন। এই বৎসরই সরস্বতী পূজানুষ্ঠানের মাধ্যমে নূতন উদ্যমে পুনরায় বিদ্যালয়ের কার্য আরম্ভ করিলেন।  ইতিপূর্বেই স্বামী বিবেকানন্দর মহৎ আদর্শে অনুপ্রাণিতা অপর এক পাশ্চাত্য মহিলা ক্রিস্টীন গ্রীনস্টাইডেল এদেশে পৌঁছিয়াছিলেন। এইবার তিনি নিবেদিতার কার্যে সহযোগিনী হইলেন। ক্রিস্টীনের চারিত্রিক গুণাবলী স্বামীজীকে মুগ্ধ করিয়াছিল। আদর্শের প্রতি ক্রিস্টীনের অবিচল নিষ্ঠা দর্শনে স্বামীজীর প্রত্যয় প্রকাশলাভ করিয়াছে ক্রিস্টীনের প্রতি স্বামীজীর আশীর্বাণীতে—‘‘আমি জানি যে তুমি মহৎ, এবং তোমার মহত্ত্বে আমার সর্বদা আস্থা আছে। আর সকল বিষয়ে ভাবনা হইলেও তোমার সম্পর্কে আমার অনুমাত্র দুশ্চিন্তা নাই। ...কোনো বাধা বিঘ্ন মুহূর্তের জন্যও তোমাকে অবসন্ন করিতে পারিবে না।  প্রকৃতপক্ষে ক্রিস্টীন শৈশবকাল হইতেই অনুভব করিতেন—কোনো মহৎ কার্যে আত্মদান করিবার প্রতীক্ষায়ই তিনি রহিয়াছেন। গতানুগতিক জীবনের প্রতি বিন্দুমাত্র আকর্ষণ তাঁহার ছিল না। তাই স্বামীজীর উদাত্ত আহ্বানে তাঁহার বহু প্রতীক্ষিত চিত্ত সামান্যতম দ্বিধা দ্বারাও ছায়াচ্ছন্ন হয় নাই। সত্যপথের সন্ধানলাভে তাঁহার উন্মুখ চিত্ত বিবেকানন্দের অদ্ভুত আধ্যাত্মিক শক্তির স্পর্শে নবচেতনায় উদ্বুদ্ধ হইয়া উঠিল। ভারতবর্ষের নারীজাতির কার্যে আত্মোৎসর্গ তাঁহার জীবনের প্রধান ব্রত হইল। ভারতবর্ষে আসিয়া ক্রিস্টীন তাঁহার ভবিষ্যৎ কর্মপদ্ধতি সম্বন্ধে অবহিত হইয়াছিলেন স্বয়ং স্বামীজীর নিকট শিক্ষালাভ করিয়া। এদেশের নারীজাতির প্রকৃত অবস্থার সহিত পরিচিত হওয়ার তাঁহার যথেষ্ট প্রয়োজন ছিল। আত্মাভিমানের লেশমাত্রও চিত্তকে ক্ষুণ্ণ করিবে না; পূর্ণ শ্রদ্ধার সহিত এ দেশের অধিবাসীকে নিজ দেশবাসীরূপে গ্রহণ করিয়া তাহাদের কল্যাণকার্যে অগ্রসর হইতে হইবে—পাশ্চাত্য শিষ্যগণের প্রতি স্বামীজীর এইরূপ দৃঢ় নির্দেশ ছিল। 
সার্ধশতবর্ষে ভগিনী ক্রিস্টীন প্রসঙ্গ থেকে

10th     January,   2023
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ