বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
অমৃতকথা
 

সমুদ্র

হে প্রশংসা যোগ্য প্রিয়তম! ভক্তজন তোমার স্তুতি করে কিন্তু তাদেরও তোমার শেষ এর একটুও জ্ঞান প্রাপ্ত হয়নি। যেমন আর ছোট নালা সমুদ্রে গিয়ে পড়ে কিন্তু তারা জানতে পারে না যে সমুদ্র মত বিশাল আর গভীর। হে প্রভূ! সমুদ্রের মত শাহেনশা আর সুলতান যাদের কাছে পর্বতপ্রমান মাল ধন থাকে তারাও সেই পিপীলিকার সমকক্ষ হতে পারে না যার মন থেকে আপনি বিস্মৃত হন, অর্থাৎ তা সমকক্ষ ধনী হতে পারে না শাহেনশও নয়, সুলতানও নয়।
প্রভূর গুণের অন্ত নেই। ‘তার’ গুণের কীর্তনীয়াদেরও নেই। ‘তার’ কাজেরও অন্ত নেই। ‘সে’ যা দেখে তার অন্ত নেই, ‘সে’ যা শোনে তার অন্ত নেই। ‘তার’ মনের কি মন্তব্য তারও অন্ত জানা যায় না। ‘তার’ রচিত সৃষ্টির আকারে অন্ত জানা যায় না আর ‘তার’ আর পারেবও কোন অন্ত জানা যায় না। ‘তার’ অন্ত জানবার জন্যে না জানে কতই অনুসন্ধানী বিলাপ করতে থাকে, তবুও ‘তার’ অন্ত পাওয়া যায় না। সে অন্ত তো কেউই জানে না। ‘তার’ বিশয়ে যতই বলা হতে থাকে ‘সে’ ততই বেড়ে যেতে থাকে। ‘সে’ বড়ই মহান আর ‘তার’ স্থান বড়ই উচুঁ এবং ‘তার’ বিষয়ে যতই বলা হতে থাকে ‘সে’ ততই বেড়ে যেতে থাকে। ‘সে’ বড়ই মহান আর ‘তার’ স্থান বড়ি উচুঁ এবং ‘তার’ চেয়েও উচুঁ ‘তার’ নাম। কেউ যদি ততটাই মহান এবং উচুঁ হয়- তাহলে ‘সেই’ উচুঁ পরাত্মাকে জানতে পারে। গুরু নানক বলছেন যে যার ওপর কৃপানিধি ভগবানের কৃপা-দৃষ্টি পড়ে তাকেই ‘সে’ নাম রূপী দান দেয়।
ভগবানের মহান দয়ালুতা (উদারতা) কে লেখা যায় না। ‘সেই’ দাতা এতই মহান যে তার বদলে কিছু পাবার জন্য ‘তার’ তিলমাত্র লালসা নেই। কত না বড় বড় অগনিত যোদ্ধা ‘তাকে’ চাইতে থাকে আর কতই না অন্য চাওয়ার লোক আছে যাদের কথা ভাবো যায় না। কত না বিকারী পুরুষ বিষয় বিকারে ই ক্রুদ্ধ হয়ে ‘তার’ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে আবার কতই না এমন লোক আছে যার ‘তার’ থেকে নিয়ে নিয়েও তা অস্বীকার করে। কতই না মুর্খ আছে যারা কেবল খেতেই থাকে অর্থাৎ চাওয়া এবং খাওয়ার উর্দ্ধে উঠতেই পারে না। কতই না এমন আছে যাদের ওপর সর্বদা দুঃখ আর ক্ষুধার মার পড়তেই থাকে, কিন্তু হে দাতা! এই দু;খ আর ক্ষুধা আপনারই দান কথা ভক্তরা স্বীকার করেন। হে প্রভূ! মায়া বন্ধন থেকে আর যোনি থেকে মুক্তি তোমার আজ্ঞাতেই হয়। অন্য কেউ এ সম্বন্ধে কিছুই বলতে পারে না। কোন মুর্খ যদি ‘তার’ খাওয়া পরার ওপর কোন অপশব্দ প্রয়োগ করে তাহলে সেই জানে তারই মুখে ব্যক্তিই একথাবলে। গুরু নানক বলেন-প্রভূ যার ওপরেই তাঁর স্তুতি এবং প্রশংসার অপার বখশীস প্রদান করেন সে বাদশহেরও বাদশাহ হয়ে যায়।
অমূল্য প্রভূর গুণ আর অমূল্য সেই গুণের ব্যবসা। অমূল্য সেই গুণের ব্যাপারীরা আর অমূল্য সেই গুণের ভাণ্ডার। অমূল্য তাঁরা যাঁরা ‘তার’ গুণ গাণে লীন হয়ে যান। অমূল্য ‘সেই’ধর্মবিধাতার বিধান আর অমূল্য ‘তার’ দরবার অমূল্য ‘তার’ ন্যায়ের ভুলাদণ্ড আর অমূল্য সেই বাটখারা যা দিয়ে ‘তার’ গুণ ওজন করা হয়। অমূল্য ‘তার’ বখশীস আর অমূল্য ‘তার’ চিহ্ন। অমূল্য ‘তার’ দয়া আর অমূল্য ‘তার’ আদেশ। হে অমূল্য গুণনিঠি প্রভূ! তুমি অমূল্য মধ্যে অমূল্য। তোমার মূল্য বলা যায় না। তোমার মূল্য বিষয়ে বলে বলে ভক্তজন শেষে ধ্যান নিমগ্ন হয়ে পড়েন। বেদ ও পূরাণের পাঠ দ্বারা কতলোকেই তোমার গুণ গায়। বিদ্বান লোক শাস্ত্র পাঠ করে তোমার সম্বন্ধে ব্যাখ্যা করে।
আদি শ্রী গুরু গ্রন্থ সাহেব’ থেকে

21st     November,   2022
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ