সংবাদদাতা: চাষিরা জুঁই ফুলের চাষ করে লাভের মুখ দেখতে পারেন। বাজারে এই ফুলের দারুণ চাহিদা রয়েছে। দামও ভালো পাওয়া যায়। জুঁই ফুল চাষ করার উপযুক্ত সময় বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষের দিকে। ভালো জাতগুলি হল সিঙ্গল জুঁই ও ডবল জুঁই। বিঘায় ২৩০০ কাটিং বা কলম লাগে। কাটিং লাগাতে হবে ৩০ ইঞ্চি দূরে। বিঘা প্রতি প্রাথমিক সার হিসেবে ২-৩ টন জৈবসার প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া ৩৩ কেজি, সুপার ফসফেট ১২৫ কেজি ও মিউরিয়েট অফ পটাশ ৪২ কেজি প্রয়োগ করা উচিত। দু’মাস পর চাপান সার হিসেবে প্রয়োগ করতে হবে ৩৩ কেজি ইউরিয়া। জমি সবসময় আগাছামুক্ত রাখতে হবে। সেচ দিতে হবে জমির টানের উপর নির্ভর করে। জমিতে যেন বেশি জল দাঁড়িয়ে না থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। অর্থাৎ জলনিকাশি ব্যবস্থা যুক্ত জমিতে জুঁই ফুলের চাষ করতে হবে। রোগপোকার আক্রমণ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে হবে। জুঁই ফুলে মাজরা পোকা, পাতামোড়া পোকা, পাতা ধসা, পাতায় বাদামি দাগ, ব্যাকটেরিয়া জনিত কাণ্ড পচা রোগ সহ নানা রোগ দেখা দিতে পারে। মাজরা পোকা চারা গাছের মাঝের পাতার গোড়া কেটে দেয়। ফলে গাছ আর বাড়তে পারে না। গাছের ফুল খেয়ে ফেলে পোকা। ফলে ফলন কমে। মাজরা পোকার আক্রমণ রোধ করার জন্য প্রতি লিটার জলে ২ মিলি এন্ডোসালফাল বা ১ মিলি ট্রায়াজোফস জলে গুলে স্প্রে করতে হবে। পাতামোড়া পোকার আক্রমণে গাছের পাতা মুড়ে যায়। ল্যাদাপোকা পাতার সবুজ অংশ খেয়ে ফেলে। ফলে পাতা ফ্যাকাসে হয়ে যায়।
প্রতি লিটার জলে ৩ মিলি ফিপ্রোনিল বা ০.৭৫ গ্রাম অ্যাসিফেট গুলে স্প্রে করতে হবে। পাতা ধসা রোগে গাছের পাতায় লম্বাটে বা ডিম্বাকার ফ্যাকাসে বড় দাগ দেখা দেয়। পাতা শেষ পর্যন্ত শুকিয়ে যায়। প্রতি লিটার জলে আড়াই গ্রাম জিনেট বা দেড় মিলি হেক্সাকোনাজল গুলে স্প্রে করতে হবে। পাতায় বাদামি দাগ রোগ গাছের পাতা ও কাণ্ডের গায়ে দেখা যায়। প্রতি লিটার জলে আড়াই গ্রাম ম্যানকোজেব বা আড়াই গ্রাম মেটালক্সিল ম্যানকোজেব গুলে স্প্রে করতে হবে। শুয়োপোকা সহ অন্যান্য পোকা গাছের ডগার নরম অংশ থেকে রস শুষে খায়। গাছ নিস্তেজ হয়ে পড়ে। প্রতিরোধে ডাইমিথোয়েট ৫ লিটার জলে ১ মিলি জলে গুলে স্প্রে করতে হবে বলে জানিয়েছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।