নিজস্ব প্রতিনিধি: সিমেন্টের খালি বস্তায় মাটি ও জৈবসার ভরে তাতে আদা চাষ করা যেতে পারে। ওই বস্তাগুলি বাড়ির উঠোনের এককোণে গাছের নীচে রেখে দেওয়া যেতে পারে। এভাবে চাষ করলে প্রতিটি বস্তা থেকে গড়ে ২ কেজি আদা পাওয়া সম্ভব। যাঁরা জমিতে আদা চাষ করবেন, তাঁরা হলুদ কিংবা বেশি দিনের সব্জির সঙ্গে মিশ্র ফসল হিসেবে এটি একই জমিতে চাষ করতে পারেন। আবার নারকেল, সুপারি, পেঁপে, কুল, কাজু বাগানে সাথী ফসল হিসেবে আদা চাষ করা যেতে পারে। আদা অঙ্কুরোদগমের জন্য বেশি তাপমাত্রা ও হাল্কা বৃষ্টি প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. দীপক ঘোষ। তিনি জানিয়েছেন, বর্ষায় আদা গাছের বৃদ্ধি ভালো হয়। পরের দিকে শুকনো ও কম তাপমাত্রা আদা চাষের জন্য ভালো। আদা জল জমা সহ্য করতে পারে না। হাল্কা বেলে-দোঁয়াশ ও লালমাটিতে আদার বৃদ্ধি ভালো হয়। এ রাজ্যে পশ্চিমাঞ্চলে আদা চাষের দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে। খরিফ মরশুমে চাষ করতে হবে। আবার জমিতে যেন পর্যাপ্ত পরিমাণে জৈব পদার্থ থাকে। অল্প ছায়াযুক্ত জমিতে আদা ভালো হয়। জমিতে বেড বানিয়ে আদা চাষ করতে হবে। বীজ হিসেবে কন্দ বোনার আগে ম্যানকোজেব মিশ্রণে আধঘণ্টা ডুবিয়ে রেখে তার পর ছায়ায় শুকিয়ে নিতে হবে। কন্দ পচা রোগ ঠেকাতে বীজ শোধন জরুরি। ট্রাইকোডার্মা ভিরিডি দিয়েও কন্দ শোধন করা যায়। সেচের সুবিধা থাকলে মার্চ-এপ্রিলে আদা বোনা যেতে পারে। আদা বসানোর পর হাল্কা সেচ দিতে হবে। এর পর জমি খড় দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। আঁশ কম, এমন জাতের আদা লাগাতে হবে। আদা চাষে পটাশ সার বেশি লাগে। জমিতে গোবরসার ও পাতাপচা সার বেশি করে দিতে পারলে ভালো। হেক্টরে ১৫ টন জৈবসার দেওয়া দরকার। এনপিকে সার দিতে হবে ২০০: ৬০: ১৫০ কেজি।
প্রাক মৌসুমি বৃষ্টিপাতের সুযোগ নিয়ে মে-জুন মাসেও আদা লাগানো যায়। আদার জমিতে নিমখোল প্রয়োগ করে রোগপোকা ঠেকানো সম্ভব। দানা জাতীয় কীটনাশক মাটিতে মিশিয়ে দিলে কাণ্ডছিদ্রকারী পোকার দাপট কমে। মশলা হিসেবে ব্যবহারের জন্য ৬ মাসেই আদা তোলা যাবে। বীজ হিসেবে পেতে হলে ৯ মাসে আদা তুলতে হবে। হেক্টরে ২৫ টন ফলন পাওয়া যায়।