পারিবারিক সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি কর্মে ব্যস্ততা। ব্যবসা সম্প্রসারণে অতিরিক্ত অর্থ বিনিয়োগের পরিকল্পনা। ... বিশদ
এলিনার কথায় আসা যাক। চলতি বছর মে মাসে দশমের ছাত্রী এলিনা দত্ত ভট্টাচার্য মায়ের সঙ্গে বিধাননগর এলাকার একটি সুইমিং পুলে সাঁতার অনুশীলন করছিল। সঙ্গে ছিল তার মা। এলিনা অনেক ছোট থেকেই সাঁতার শিখত। কিন্তু সেদিন সুইমিং পুলে অনুশীলনের সময় অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তাকে। তড়িঘড়ি একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে এলিনাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। জানা যায় সাডেন কার্ডিয়াক ডেথ (এসসিডি) হয় এলিনার।
সাঁতার কাটতে নেমে পরপর এই অল্পবয়সীদের এভাবে চলে যাওয়া নিয়ে স্বাভাবিক কারণেই প্রচণ্ড উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। সাঁতারু মানেই সে ভীষণ ফিট, তার ওপর অল্প বয়স। তাহলে কেন এভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল এলিনা, সমীররা?
এক্কেহেত্রে একেবারে হলফ করে বলে দেওয়া, ঠিক এই কারণেই মৃত্যু হয়েছে, তা একেবারেই সম্ভব নয়। বিভিন্ন জনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। যে কোনও খেলাধুলোর ক্ষেত্রেই আমরা এইধরণের দুঃখজনক ঘটনার সাক্ষী কিন্তু থাকছি। কারণ না বলা গেলেও কিছু সম্ভাবনার কথা বলা যেতে পারে।
প্রথমত, অল্প বয়স, খেলোয়াড় মানেই কোনও রোগ তাকে ছুঁতে পারবে না, এটা ভাবা আমাদের বন্ধ করতে হবে।
অনেকেরই ছোট বয়সেই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা হয়। থাকে হৃদযন্ত্রেরও নানা সমস্যা। আসলে স্বাস্থ্যকর, সতেজ খাবারের বদলে অল্পবয়সীরা মজছে ফাস্টফুড, সফটড্রিঙ্কসে। অধিকাংশই গভীর রাতের আগে ঘুমোয় না। এসবের ফল শরীরের ওপর অল্পবয়সে পড়তে বাধ্য।
দ্বিতীয়ত, আমাদের দেশে খেলাধুলোর আগে নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষাকে একেবারেই গুরুত্ব দেওয়া হয় না। অন্য যে কোনও খেলার মতো একজন সাঁতারুরও নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা দরকার, তার বয়স যাই হোক না কেন। তাতে ওই সাঁতারুর শরীরে কোনও রোগ বাসা বেঁধেছে কি না, তা আমরা বুঝতে পারব। কমবে দুর্ঘটনার শঙ্কা।
একজন সাঁতারুরও যথাযথ বিশ্রাম দরকার। এক্ষেত্রে অভিভাবকদেরও সতর্ক থাকতে হবে। সন্তানকে যদি সুইমিং শিখতে পাঠান, তাহলে সে কখন ঘুমোচ্ছে, কী খাচ্ছে, সেটার ওপর নজর রাখতেই হবে।
অন্যদিকে, সুইমিং পুলগুলিতেই দক্ষ প্রশিক্ষক পর্যাপ্ত সংখ্যায় থাকা দরকার। সেই সঙ্গে দরকার, বিপদের মুহূর্তে কী করা উচিত, সে সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকা। কেউ হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে গেলে আমরা চারদিক থেকে ঘিরে ধরে মুখেচোখে জল দিই, বাতাস করি। অথচ এই পরিস্থিতিতে সিপিআর (কার্ডিওপাল্মোনারি রিসারিটেশন) কীভাবে করতে হয়, তা আমরা জানি না। সুইমিং পুলের প্রশিক্ষক তো বটেই, যারা সাঁতার শিখছে তাদের সবার এটা শিখে রাখা দরকার। সেই সঙ্গে অসুস্থ ব্যক্তির পা কিছুটা তুলে ধরে, তাঁকে খানিকটা পাশ করে শুইয়ে দিয়েও আমরা কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই নিশ্চিত মৃত্যু রুখে দিতে পারি। এগুলো সকলের জানা দরকার। সুইমিং পুলগুলিতে এই নিয়ে বিশেষ ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা উচিত।