পারিবারিক সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি কর্মে ব্যস্ততা। ব্যবসা সম্প্রসারণে অতিরিক্ত অর্থ বিনিয়োগের পরিকল্পনা। ... বিশদ
ব্যান্ডেজের সঙ্গে আমাদের চেনাশোনা শৈশব থেকে। বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবলে পা ছোঁয়ানো হোক বা লাফিয়ে ক্যাচ ধরতে যাওয়া, পড়ে গিয়ে রক্ত বেরনো চেনা ছবি। আবার দু’হাত ছেড়ে সাইকেল চালাতে গিয়ে আছাড় খাওয়া বা দৌড়ঝাঁপ করতে গিয়ে বিপত্তি— ভরসার নাম, ব্যান্ডেজ। মূলত এর দু’টি কাজ। ক্ষতস্থান ঢেকে রাখা ও এতে থাকা অ্যান্টিসেপটিক উপাদানের সাহায্যে সংক্রমণ প্রতিরোধ। চিকিৎসাশাস্ত্রের ইতিহাসে একদম শুরুর দিকের উপাদান ব্যান্ডেজ। রক্ত দেখলে মানুষ ভীষণ ভয় পেতেন। রক্তপাত বন্ধ করতে সে সময় কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হতো ক্ষতস্থান। দেখা গেল, এতে রক্তপাত যেমন বন্ধ হচ্ছে, তেমনই ঘা শুকাচ্ছে দ্রুত হারে। কাপড় দিয়ে ক্ষতস্থান বেঁধে রাখার প্রক্রিয়ার সূচনালগ্ন এটিই। তবে এই প্রক্রিয়ার একটি সমস্যার দিকও ধরা পড়ল। ক্ষতস্থানে নোংরা কাপড় লাগানোর ফলে জীবানু সংক্রমণ বাড়ত। তৎকালীন চিকিৎসকরা বুঝলেন, ক্ষতস্থানে অপরিষ্কার কাপড়ের ব্যবহার ক্ষতিকারক। শুরু হল পরিষ্কার কাপড়ের ব্যবহার। চরক সংহিতা, সুশ্রুত সংহিতার মতো প্রাচীন বইতেও ক্ষতস্থান ঢাকতে কাপড়ের ব্যবহারের কথা রয়েছে। প্রাচীন ভারতে ক্ষতস্থান ঢাকার জন্য গাছের পাতাও ব্যবহৃত হতো। কাপড়ের মধ্যে ওষুধ লাগিয়ে তা ক্ষতস্থানে লাগানোর নজিরও রয়েছে। অনেক সময় আবার মধু লাগিয়ে তার উপর কাপড় পেঁচিয়ে দেওয়া হতো।
এ প্রসঙ্গে মিশরের কথা উল্লেখ করা প্রয়োজন। মিশরীয়রা মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে বিস্তর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতেন। তাঁরা বুঝেছিলেন, রক্ত শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এবং ক্রমাগত রক্তপাতের ফলে শরীরের ক্ষতি হয়। এর জন্য রক্তপাত বন্ধ করতে ও সংক্রমণ আটকাতে চিন্তাভাবনা শুরু করেন তাঁরা। মিশরীয়রা নাকি প্রথম ক্ষত নিরাময়ের জন্য মধুর ব্যবহার করেছিলেন। প্রাকৃতিকভাবে ব্যাকটেরিয়াকে মারার জন্য এর থেকে ভালো উপায় হতে পারে না বলে মনে করতেন মিশরীয়রা। এমনকী, ক্ষতস্থান ড্রেসিং করার প্রক্রিয়াও তাঁদেরই উদ্ভাবন বলে মনে করা হয়। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ব্যান্ডেজ বাজারে নিয়ে আসে গ্রীস। চিকিৎসা প্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে ব্যান্ডেজও বিবর্তিত হয়।
এবার আসি আর্লে ডিকসনের কথায়। ব্যান্ডেজের ইতিহাস বলতে গেলে, যাঁর কথা না বললেই নয়। তাঁর স্ত্রী জোসেফাইন ছিলেন দুর্ঘটনাপ্রবণ। রান্না করতে গিয়ে হাত কাটা, পুড়িয়ে ফেলা নিত্যদিনের সঙ্গী। ডিকসনের মাথায় সে সময় আসে একধরণের ব্যান্ডেজের কথা। ছোট আকার। তার পিছনে ওষুধ লাগিয়ে স্ত্রীকে দিলেন। দেখলেন কাজ দিচ্ছে। ব্যস, জন্ম হল যুগান্তকারী সেই সৃষ্টির। ফার্স্ট এড বক্সের অন্যতম প্রধান উপাদান— ব্যান্ড এড।