পরিবারের সদস্যদের পারস্পরিক মতান্তর, কলহে মনে হতাশা। কাজকর্ম ভালো হবে। আয় বাড়বে। ... বিশদ
একেবারে সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে জলপান নিশ্চিতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। একাধিক সুফলও আছে। কী কী উপকার? দেখা যাক—
• কোষ্ঠাকাঠিন্যে আরাম—অনেকেরই প্রবল কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকে। কিছুতেই পেট পরিষ্কার হয় না। সেক্ষেত্রে সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই ২ গ্লাস জল পান করা যেতে পারে। আসলে কনস্টিপেশনের একটা বড় কারণই হল জলপানের ঘাটতি। তাতে মলে জলের মাত্রা কমে যেতে পারে। সেখান থেকে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সকালে খালিপেটে জলপানের অভ্যেসে শরীরে জলের অভাব দূর হয়। মল নরম থাকে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও থাকে দূরে।
• বিপাকক্রিয়ায় লাভ—খাদ্য পরিপাকতন্ত্রে একাধিক এনজাইমের মূল উপাদানই হল জল। সেক্ষেত্রে জলপান দিয়ে দিন শুরু করলে এনজাইমগুলির উত্পাদনে ও ক্ষরণে সহায়তা মেলে।
• রেচনক্রিয়া ঠিক রাখে—সারাদিন শরীরের কোষের কার্যকলাপের ফলে বর্জ্য পদার্থ তৈরি হয়। এই বর্জ্য পদার্থগুলি ঘাম ও ইউরিনের মাধ্যমেও শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। পর্যাপ্ত মাত্রায় জলপানে এইভাবে রেচনক্রিয়া স্বাভাবিকভাবে হয়। ফলে স্বাস্থ্যের সার্বিক উন্নতি হয়। ত্বকের ঔজ্জ্বল্যও বাড়ে।
• অনেকের ক্ষেত্রে একটা বড় বিষয় হল, জলপানের অভ্যসে ক্ষুধা বাড়ায়।
• কিছু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে জলপান করলে মাইগ্রেনের সমস্যা কমতে পারে।
• সঠিকমাত্রায় জলপানে শরীরের মেটাবলিজম বা বিপাকক্রিয়া ঠিক থাকে। মেটাবলিজম স্বাভাবিক থাকলে খাদ্য হজমে সমস্যা হয় না।
• ওজন কমাতে পারে—কেউ কেউ ওজন কমানোর উদ্দেশ্যে ঈষদুষ্ণ জলে একটু মধু আর লেবুর রস দিয়ে পান করেন। তাতে কতটা বাড়তি লাভ হয় তা নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ রয়েছে। তবে কিছু কিছু সমীক্ষা বলছে, এই অভ্যেসে কারও করাও ওজন কমেছে বইকি।
• কিডনি স্টোনে উপকার—অনেকের কিডনিতে বারবার পাথর হয়। এমন রোগীকে সমস্যা প্রতিরোধে রোজ পর্যাপ্ত জলপান করতে বলা হয়।
এমনও হয় যে রোগীর কিডনিতে ছোটখাট পাথর রয়েছে। সেক্ষেত্রেও রোগীকে পর্যাপ্ত মাত্রায় জলপান করতে বলা হয় যাতে ইউরিনের সঙ্গে পাথর বেরিয়ে যায়। এছাড়া মূত্রথলিতেও পাথর থাকতে পারে। সেক্ষেত্রেও পর্যাপ্ত জলপানে রোগীর উপকারই হয়।
• ইউটিআই প্রতিরোধ—ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন বা ইউটিআই প্রতিরোধ করতে পারে পর্যাপ্ত জলপান।
• ঘোরাঘুরির কাজে লাভ—এই গ্রীষ্মকালে খরবেলায় কাজ করতে গিয়ে শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে প্রচুর জল ও খনিজ বেরিয়ে যায়। আবার যাঁরা প্রায় সারাদিন এসিতে থাকেন, তাঁদেরও ত্বক আর্দ্র হয়ে যায়। এমন দুই ধরনের ব্যক্তির ক্ষেত্রেই পর্যাপ্ত জলপান অত্যন্ত জরুরি। সেক্ষেত্রে সকালে খালি পেটে জলপান দিয়ে দিন শুরু করলে সারাদিনে শরীরে জলের ঘাটতির আশঙ্কা খানিকটা প্রতিরোধ করা যায়।
মাত্রাতিরিক্ত জলপানের বিপদ
• অনেকে আবার সকালে উঠেই ঢকঢক করে প্রায় ১ জগ জল পান করেন! নাহ্, এতটা বাড়াবাড়ির প্রয়োজন নেই। বেশি জলপানে শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা কমে যাওয়ার দরুন বিবিধ জটিলতা দেখা যেতে পারে। এমনকী রোগীকে হাসপাতালে ভর্তিও করতে হতে পারে।
• এছাড়া যাঁদের হার্টের সমস্যা আছে, হার্টের পাম্পিং ফাংশন ভালো নয়, সেখানে রোগীর জলপানের মাত্রা বেঁধে দেওয়া থাকে। সেক্ষেত্রে রোগী যদি সকালে উঠেই অনেকটা জলপান করে ফেলেন তাহলে সারাদিনে তাঁকে প্রায় জলপান ছাড়াই কাটাতে হবে। নির্ধারিত মাত্রার বাইরে জলপান করলে সেক্ষেত্রে পা ফুলবে, শ্বাসকষ্ট হবে।
শেষ কথা
কোনও আলাদা অসুখ না থাকলে সাধারণভাবে যে কেউ সকালে ঘুম থেকে উঠে দুই গ্লাস জল পান করুন। কোনও সমস্যা হবে না।