সপরিবারে অদূরবর্তী স্থানে ভ্রমণে আনন্দলাভ। কাজকর্মে কমবেশি ভালো। সাহিত্যচর্চায় আনন্দ। ... বিশদ
১৯৯২ সালে সুইডেনে আয়োজিত ইউরোর থিম সং ছিল, ‘স্মল ইজ বিউটিফুল’। তাই টুর্নামেন্টের পরিসর ছোট ছিল। ১৫টি ম্যাচে শেষ করতে হবে বলে টুর্নামেন্টে মোট আটটি দল অংশগ্রহণ করে। আয়োজক সুইডেনের পাশাপাশি ফ্রান্স, স্কটল্যান্ড, সিআইএস, যুগোস্লাভিয়া, জার্মানি, হল্যান্ড ও ইংল্যান্ড। বাছাই পর্বে যুগোস্লাভিয়ার পরেই শেষ করেছিল ডেনমার্ক। তাই যুদ্ধের কারণে ইভিকা ওসিমের দলকে বেলগ্রেডে ফেরানো হলে মেগা আসরের ছাড়পত্র পায় ড্যানিশরা। টুর্নামেন্টে শুরু হয় ১১ জুন। আর স্কিমিচেলরা সুইডেনে পৌঁছন ৩০ মে। হঠাত্ করে ইউরো খেলতে আসা ডেনমার্ককে কেউ ধর্তব্যের মধ্যেই রাখছিল না। কারণ, গ্রুপ-‘এ’তে ডেনমার্কের সঙ্গী অন্যতম ফেভারিট ফ্রান্স, ইংল্যান্ড ও আয়োজক সুইডেন। প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র করে ড্যানিশ-ব্রিগেড। কিন্তু পরের ম্যাচে সুইডেনের কাছে ০-১ ব্যবধানে হেরে রীতিমতো বিদায়ঘণ্টা বেজে যায় ডেনমার্কের। শেষ ম্যাচে তারা যে ফ্রান্সকে হারাবে, স্বপ্নেও কেউ তা ভাবেনি। কিন্তু ফরাসি ব্রিগেডকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে অঘটন ঘটায় রিচার্ড মোলার নিয়লসেনের দল। এরপর সেমি-ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ রুড গুলিট, ফন বাস্তেনদের পরাক্রমী হল্যান্ড। ইউরো জয়ের অন্যতম দাবিদারও ছিল তারা। কিন্তু, ডেনমার্কের যে হারানোর কিছুই ছিল না। ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই লারসেনের গোলে লিড নেয় আন্ডারডগ ড্যানিশরা। অবশ্য তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ২৩ মিনিটে বার্গক্যাম্প সমতায় ফেরান ডাচদের। এরপর ৩৩ মিনিটের লারসেনের দ্বিতীয় গোল। ৮৬ মিনিট পর্যন্ত ২-১ লিড ধরে রেখেছিল ডেনমার্ক। কিন্তু হল্যান্ডের রুড গুলিটের লক্ষ্যভেদে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়। এই পর্বেও ফল নির্ধারণ হয়নি। অগত্যা টাই-ব্রেকার। সেখানে বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে ফন বাস্তেনের শট দুরন্ত সেভে ডেনমার্ককে ফাইনালে পৌঁছে দেন স্কিমিচেল। ফুটবল বিশ্বকে চমকে আন্ডারডগ নিয়লসেন-ব্রিগেডের রূপকথা লিখতে বাকি আর একটি ম্যাচ। কিন্তু, আন্দ্রেস ব্রেহমের জার্মানিও সেবার তুখোড় ফর্মে। দুই জার্মানি একত্র হওয়ার পর প্রথম কোনও মেগা আসরের ফাইনাল জিততে বদ্ধপরিকর তারা। শেষ পর্যন্ত ছলে-বলে-কৌশলে বাজিমাত করেছিল আন্ডারডগ-ডেনমার্কই। ১৮ মিনিটে জেনসেনের গোলের পর ৭৮ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ভিলফোর্ট। আর ম্যাচের বাকি সময় শুধুই ব্যাক পাসে সময় নষ্ট করে ড্যানিশরা। জার্মানি প্রেস করলে ডেনমার্কের ডিফেন্ডাররা বল ফেরত পাঠাচ্ছিলেন গোলকিপারকে। আর স্কিমিচেল তা হাতে তুলে নিয়ে সময় নষ্ট করে যাচ্ছিলেন। রেফারি এসে কিছু বললে, আবার তিনি ডিফেন্ডারকে বল বাড়ান আর ডিফেন্ডার তাঁকে ফেরত দেন। রেফারির শেষ বাঁশি পর্যন্ত এভাবেই চলতে থাকে। তাই ইউরো চ্যাম্পিয়ন হলেও ব্যাক পাস নিয়মের অপব্যবহারের জন্য এখনও সমালোচনার মুখে পড়তে হয়ে পিটার স্কিমিচেলদের। এই ম্যাচের পরই ব্যাক পাস নিয়মের পরিবর্তন হয়। এখন আর সতীর্থের বাড়ানো বল হাতে ধরতে পারেন না গোলকিপাররা। তাই ম্যানুয়েল ন্যুয়ের, থিবাউট কুর্তোয়া, এডারসনরাও এখন ড্রিবল করেন। এই নিয়ম পরিবর্তনের পর ফুটবল আরও নান্দনিক হয়েছে।