সম্পত্তিজনিত মামলা-মোকদ্দমায় সাফল্য প্রাপ্তি। কর্মে দায়িত্ব বৃদ্ধিতে মানসিক চাপবৃদ্ধি। খেলাধূলায় সাফল্যের স্বীকৃতি। শত্রুর মোকাবিলায় সতর্কতার ... বিশদ
সিফাকাস
সিফাকাস অনেকটা শিয়ালের মতো মুখ বিশিষ্ট একটা নিশাচর প্রাণী। এরা ছোট শাখা প্রশাখা আছে এমন লম্বা ও খাড়া গাছে থাকতে ভালোবাসে। প্রায় দশ মিটার দূরত্বে থাকা যেকোনও গাছে এরা অবলীলায় লাফিয়ে যেতে পারে। এদের হাতের থেকে পা অনেক বেশি লম্বা। এই লম্বা পা’কে ব্যবহার করে সিফাকাস সহজেই অনেকদূর পর্যন্ত লাফ দিতে পারে। এদের পা তাদের একটি গাছ থেকে অন্য গাছে লাফাতে ও ওঠানামা করতে সাহায্য করে। এখানেই শেষ নয়, ভালো ব্যালে নৃত্যশিল্পীর মতো ঊরু ও হাঁটুকে যেমন খুশি ঘুরিয়ে সুন্দরভাবে নাচতেও পারে।
শোভেল স্নুটেড লিজার্ড
নাম্বিবিয়ার জ্বলন্ত মরুভূমির তাপমাত্রা যখন প্রায় ৫০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড হয়ে যায়, তখন শোভেল স্নুটেড লিজার্ড (বিশেষ প্রজাতির একটি টিকটিকি) তাদের পা’কে বাঁচাতে বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করে। গরমে যাতে পায়ে না ছ্যাঁকা লাগে তাই প্রতিটি সেকেন্ডে তাদের পায়ের অবস্থান পরিবর্তন হয়। যখন একটি পা খুব গরম হয়ে যাচ্ছে, তখন সে আরেকটি পা’কে কিছুটা ওপরে তুলে রেখে তাপের ভারসাম্য রক্ষা করে। কারণ, মরুভূমি পৃষ্ঠের তাপমাত্রা খুব বেশি হলেও উপরিভাগে বায়ুর তাপমাত্রা থাকে কমবেশি ১০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। তাই ওই সময় শোভেল স্নুটেড লিজার্ড গরম হয়ে যাওয়া পা’কে কিছুটা ওপরে তুলে রেখে ঠান্ডা করে নেয়। প্রতিটি সেকেন্ডে সেকেন্ডে শোভেল স্নুটেড লিজার্ডের পায়ের এই পরিবর্তনের ঝলক দেখে মনে হবে ওরা যেন ট্যাপ ডান্স করছে!
কোলুগো
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রেন ফরেস্টে কোলুগো নামে একটি ছোট্ট স্তন্যপায়ী প্রাণী দেখা যায়। এই রেন ফরেস্টে গাছগুলির গড় উচ্চতা প্রায় চল্লিশ মিটার। এখানে কোলুগো খাবারের সন্ধানে একটি বিশেষ উপায় অবলম্বন করে। এদের শরীরে ছাউনির মতো একটি বিশেষ অংশ আছে, যাকে ইচ্ছে মতো বাড়িয়ে বা কমিয়ে নেওয়া যায়। যেহেতু এরা পেশাদার পর্বতারোহী নয়, তাই উঁচু গাছগুলিতে উঠতে এদের খুব কষ্ট করতে হয়। তাই এরা নিজের ত্বককে অনেকটা প্যারাস্যুটের মতো ব্যবহার করে একশো মিটার পর্যন্ত এগিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এই পুরো পদ্ধতি দেখে মনে হয় তারা যেন এক ধরনের নৃত্য করে চলেছে।
জিরাফ
জিরাফকে ভালোবাসে না এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া কঠিন। পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর দেখতে একটি প্রাণী হল জিরাফ। এরা আমাদের হাত থেকে গাছপাতা নিয়ে খেয়ে নেয়। জিরাফ যেখানে থাকে সেখানে তার প্রভু কে হবে তারাই ঠিক করে নেয়। এরা তাদের ঘাড় একে অপরের দিকে হেলিয়ে দেয়। নিজেদের মধ্যে এই খেলা প্রায় এক ঘণ্টা বা তারও বেশি সময় ধরে চলতে থাকে। খেলাটি দেখলে মনে হবে তারা যেন একটি সুন্দর নৃত্য পরিবেশন করছে।
শ্রু
শ্রু (বিশেষ প্রজাতির এক ছুঁচো) ছোটখাট গাঢ় ধূসর রঙের কুচকুচে দেখতে চোখযুক্ত লোমশ এক প্রকার প্রাণী বিশেষ। এরা বেঁচে থাকার জন্য প্রতি ঘণ্টায় ঘণ্টায় পোকামাকড় শিকার করে। শ্রু জন্মগতভাবেই বোকা এবং অন্ধ। এরা জন্মের তিনদিন পর থেকেই হাঁটতে শুরু করে দেয়। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত না এদের সব ইন্দ্রিয়গুলি সক্ষম হয়, ততক্ষণ এরা মায়েদের সঙ্গেই থাকে। ঘরের বাইরে বেরয় মানবশিশুর মতো। ছোট্ট ছুঁচো তাদের ছুচালো অগ্রভাগযুক্ত ধারালো দাঁত ব্যবহার করে শিকার ধরার জন্য এদের পরিবারগত আচরণ দেখে মনে হয় যেন মঞ্চে কেউ নৃত্য পরিবেশন করছে। এইসব প্রাণীদের জীবনধারণের পদ্ধতি দেখলে বোঝা যায় পৃথিবীতে প্রাণীদের যেন এক নিজেদের সহজাত ত্রুটিহীন ছন্দ সর্বদা চলমান।