উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ যোগ। ব্যবসায় যুক্ত হলে ... বিশদ
তুমি আপনার অঙ্গে সেবকভাব ধরিয়া (সেবকরূপে) অন্য সবাইকে মদ্রূপ কল্পনা করিয়া তাহাদের সেবা কর; ইহাতে ভূতদ্বেষ দূর হইবে, এবং সর্ব্বত্র (সর্ব্বভূতে) একমাত্র আমাকেই নমস্কার করিবে,—এইভাবে আমার মধ্যে আত্যন্তিক (পূর্ণভাবে) আশ্রয় প্রাপ্ত হইবে; তখন এই ভরা জগতের মধ্যে তৃতীয়ত্বের কোনও ব্যাপার (আভাস) না থাকায় তুমি ও আমি একান্তে মিলিব (‘একান্ত হইয়া থাকিব’); তখন, যে অবস্থাই হউক না কেন, আমি তোমাতে, ও তুমি আমাতে, পরস্পর ঐক্য উপভোগ করিব—এইভাবে আমাদের সুখ বাড়িবে; আর, সেই অবস্থায় তৃতীয়ত্বের (জগদাভাসের) বাধা দূর হইলে, তুমি মদ্রূপ হইয়া অন্তে আমাকেই প্রাপ্ত হইবে; জলের নাশ হইলে (জল শুকাইলে) জলের মধ্যের প্রতিবিম্ব বিম্বে মিলাইবে, ইহাতে প্রতিবন্ধক কি আছে? বায়ু আকাশে মিশিবে, তরঙ্গ সাগরে মিলাইবে,—ইহাতে কে বাঁধা দিতে পারে?
দেহধর্ম্মের জন্যই তোমাকে ও আমাকে স্বতন্ত্র দেখায়, দেহের ‘বিরাম’ (নাশ) হইলে, তুমি মদ্রূপ হইয়া যাইবে; আমি যাহা বলিতেছি, তাহাতে কোনও সন্দেহ করিও না—ইহাতে যদি অন্যথা কর, তবে তোমার শপথ! পরন্তু, তোমাকে তোমারি শপথ দিলে আত্মস্বরূপকেই স্পর্শ করিবে,—প্রীতির ধরণই এই যে লজ্জা ভুলাইয়া দেয় (লজ্জার কথা স্মরণ করিতে দেয় না); নতুবা, যিনি প্রপঞ্চকে আচ্ছাদন করিয়া আছেন, যাঁহার সত্তায় এই বিশ্বাভাস সত্য মনে হয়, যাঁহার আজ্ঞার ‘নটনৃত্য’ (প্রতাপ) কালকে জয় করে; যিনি পিতার ন্যায় জগতের হিতাকাঙ্ক্ষী—সেই যে সত্যসঙ্কল্প ভগবান ‘আমি’—আমাকে শপথের আক্ষেপের (ঝঞ্চাটের) মধ্যে কেন যাইতে হইবে?
গিরীশচন্দ্র সেন অনুদিত ‘জ্ঞানেশ্বরী’ থেকে