মানসিক অস্থিরতা দেখা দেবে। বন্ধু-বান্ধবদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা দরকার। কর্মে একাধিক শুভ যোগাযোগ আসবে। ... বিশদ
আন্তরিক ঈশ্বরকে যে জানতে চাইবে তারই হবে। হবেই হবে। যে ব্যাকুল, ঈশ্বর বই আর কিছুই চায় না, তারই হবে।
কি জান, যতক্ষণ ভোগ-বাসনা থাকে ততক্ষণ ঈশ্বরকে জানতে বা দর্শন করতে প্রাণ ব্যাকুল হয় না। ছেলে খেলা নিয়ে ভুলে থাকে। সন্দেশ দিয়ে ভুলোও খানিক সন্দেশ খাবে। যখন খেলাও ভাল লাগে না, সন্দেশও ভাল লাগে না, তখন বলে, ‘মা যাব!’ আর সন্দেশ চায় না। যাকে চেনে না, কোনও কালে দেখে নাই, সে যদি বলে, আয় মার কাছে নিয়ে যাই—তারই সঙ্গে যাবে। যে কোলে করে নিয়ে যায় তারই সঙ্গে যাবে।
‘সংসারের ভোগ হয়ে গেলে ঈশ্বরের জন্য প্রাণ ব্যাকুল হয়। কি করে তাঁকে পাব, কেবল এই চিন্তা হয়। যে যা বলে তাই শুনে। তিনি তো ধর্ম-মা নন, তিনি আপনারই মা, ব্যাকুল হয়ে মার কাছে আবদার কর। তিনি অবশ্য দেখা দিবেন। তাঁর জন্য কাঁদতে পারলে দর্শন হয়—সমাধি হয়। কাঁদলে কুম্ভক আপনি হয়—তারপর সমাধি।
ব্যাকুলতা থাকলে সব হয়ে যায়। ব্যাকুল হৃদয়ে তাঁকে প্রার্থনা কর। আর কাঁদ। চিত্তশুদ্ধি হয়ে যাবে।
হাজার বছরের অন্ধকার ঘর যেমন একবার একটা দেশলাইয়ের কাঠি জ্বাললে তখনি আলো হয়, তেমনি জীবের জন্ম-জন্মান্তরের পাপও তাঁর একবার কৃপাদৃষ্টিতে দূর হয়।
মলয়ের হাওয়া লাগলে যে-সব গাছের সার আছে, সেই সব গাছ চন্দন হয়, কিন্তু অসার—যেমন বাঁশ কলা ইত্যাদি গাছ কিছু হয় না। ভগবৎ-কৃপা পেলে যাঁদের সার আছে তাঁরাই মুহূর্তের মধ্যে মহা সাধুভাবে পূর্ণ হন, কিন্তু বিষয়াসক্ত অসার মানুষের সহজে কিছু হয় না।
কিন্তু হাজার চেষ্টা কর, তাঁর কৃপা না হলে কিছু হয় না। তাঁর কৃপা না হলে তাঁর দর্শন হয় না। কৃপা কি সহজে হয়? অহঙ্কার একেবারে ত্যাগ করতে হবে। ‘আমি কর্তা’ এ বোধ থাকলে ঈশ্বরদর্শন হয় না। ভাঁড়ারে একজন আছে, তখন বাড়ির কর্তাকে যদি কেউ বলে, মহাশয়, আপনি এসে জিনিস বার করে দিন। তখন কর্তাটি বলে, ভাঁড়ারে একজন রয়েছে, আমি আর গিয়ে কি করব। যে নিজে কর্তা হয়ে বসেছে তার হৃদয়মধ্যে ঈশ্বর সহজে আসেন না।
কৃপা হলেই দর্শন হয়। তিনি জ্ঞানসূর্য। তাঁর একটি কিরণে এই জগতে জ্ঞানের আলো পড়েছে, তবেই আমরা পরস্পরকে জানতে পারছি, আর জগতে কত রকম বিদ্যা উপার্জন করছি। তাঁর আলো যদি একবার তিনি নিজে তাঁর মুখের উপর ধরেন, তাহলে দর্শনলাভ হয়। সার্জন সাহেব রাত্রে আঁধারে লণ্ঠন হাতে করে বেড়ায়; তার মুখ কেউ দেখতে পায় না। কিন্তু ওই আলোতে সে সকলের মুখ দেখতে পায়; আর সকলে পরস্পরের মুখ দেখতে পায়।