মানসিক অস্থিরতা দেখা দেবে। বন্ধু-বান্ধবদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা দরকার। কর্মে একাধিক শুভ যোগাযোগ আসবে। ... বিশদ
ঘটনাচক্রে এদিনই বাবাসাহেব আম্বেদকরের মৃত্যুদিন। তাই সংহতি দিবসে ভারতের সংবিধান প্রণেতাকে স্মরণ করেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সমালোচনায় সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী। সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারায় ধর্মের নামে বৈষম্য করা যাবে না, তা স্পষ্ট করে দেওয়া আছে। তার জের টেনে মমতা বলেন, ক্যাব আইন করে ধর্মের নামে নাগরিকত্ব চালুর চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা পুরোপুরি সংবিধান বিরোধী। এই আইন ভারতের সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণাকেই নস্যাৎ করবে, দাবি তৃণমূল নেত্রীর। তিনি বলেন, আগে ওরা ক্যাব পাশ করিয়ে তার ভিত্তিতে এনআরসি করতে চাইবে। জেনে রাখুন বাংলায় কোনও মতেই এনআরসি করতে দেওয়া হবে না।
ক্যাব যে সংসদে সংখ্যাধিক্যের জোরে পাশ করিয়ে নেবে বিজেপি, তা নিশ্চিত। রাজ্যসভায় যেটুকু অনিশ্চয়তা ছিল, তা একাধিক বিরোধী দলের কারণে পাশ করানোর পথ মসৃণ হতে পারে। তেমনই আশঙ্কা রয়েছে মমতার। তিনি বলেন, এখন যাঁরা এর বিরোধিতা করবেন না, তাঁদের পরে পস্তাতে হবে। অর্থাৎ ক্যাবকে ঘিরে দেশের বিজেপি বিরোধী ঐক্যের মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তিনি বলেন, ক্যাব হল মাথা, আর এনআরসি হল ধড়। তাই ক্যাবের বিরুদ্ধে এককাট্টা হওয়া জরুরি। তৃণমূলের পাশাপাশি যেসব শক্তি ক্যাবের বিরুদ্ধে থাকবে, তাদের পাশে দাঁড়াবেন তিনি। তাঁর মতে, দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে। দেশ দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে। এই দুরবস্থা থেকে মানুষের নজর ঘোরাতে চাইছে কেন্দ্রের শাসকদল। শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে এনআরসি আর ক্যাবকে কাজে লাগানো হচ্ছে। বাইরে থেকে আসার নাম করে ওরা যাঁদের বাদ দিতে চাইছে, তাতে সবার আগে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীকেই বাদ দেওয়া উচিত। প্রস্তাবিত বিলে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যকে বাদ রাখা হয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, ক্যাব যদি ভালো হয়, তাহলে উত্তর-পূর্ব ভারতকে তার আওতা থেকে বাইরে রাখা হচ্ছে কেন? কেন্দ্রের যুক্তি, উপজাতি অধ্যুষিত রাজ্য, তাই ক্যাব লাগু হবে না। মমতার পাল্টা, বাংলাতেও তফসিলি উপজাতির বাস রয়েছে, তাহলে এখানে কেন তা কার্যকর করা হবে? আসলে ধর্মের নামে মানুষকে বিভক্ত করাই ক্যাবের উদ্দেশ্য। দেশের ধর্মনিরপেক্ষতাকেই ধ্বংস করতে চায় বর্তমান কেন্দ্রের সরকার। মানুষের স্বাধীনতা হরণের শামিল এই আইনের বিরুদ্ধে সবাইকে নিয়ে লড়াইয়ে নামতে চান মমতা। তিনি বলেন, আমরা স্বাধীনতা আন্দোলন দেখিনি। এবার ক্যাবের বিরুদ্ধে লড়াইকে তিনি দ্বিতীয় স্বাধীনতা আন্দোলন বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর ডাকে সাড়া দিতে সবাই প্রস্তুত কি না, সভায় হাজির থাকা জনতার কাছ থেকে নিজেই সম্মতি আদায় করে নিলেন মমতা। তিনি বলেন, সব ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এক হতে হবে। শপথ নিতে হবে, কোনও মতেই আর দেশকে ভাগ হতে দেব না। এই নিয়ে বুথে বুথে গিয়ে অবিলম্বে প্রচারে নামতে হবে। কোনও মতেই হিন্দু-মুসলমান ভাগাভাগি করতে দেব না। এই কথা শহরে-গ্রামে, হাটে-বাজারে প্রচার করতে তৃণমূল কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন মমতা।