মানসিক অস্থিরতা দেখা দেবে। বন্ধু-বান্ধবদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা দরকার। কর্মে একাধিক শুভ যোগাযোগ আসবে। ... বিশদ
উইঘুর প্রদেশেই জন্ম মিহিরগুল তুরসুনের। প্রাথমিক পড়াশোনা শেষ করে মিশরের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি পড়তে যান তিনি। সেখানেই প্রেম, বিয়ে। তিনটি সন্তানের জন্মও। ২০১৫ সালে নিজের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চীনে ফেরেন। সঙ্গে ছিল সন্তানরা। এরপরই বদলে যায় তাঁর জীবন। বাচ্চাদের থেকে আলাদা করে তাঁকে বন্দিশিবিরে নিয়ে যায় চীন সরকার। বিভিন্ন দফায় তিন বার তাঁকে আটক করা হয়। চালানো হয় নারকীয় অত্যাচার। মাকে না পেয়ে অযত্নে মারা যায় তাঁর ছোট সন্তান। বাকি দুই সন্তানও এখনও দুরারোগ্য অসুখের শিকার। ওয়াশিংটনে চীনের উইঘুর প্রদেশের মুসলিমদের উপর চীন সরকারের এই বর্বরতার কাহিনী শোনাতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন মিহিরগুল তুরসুন।
আমেরিকার ন্যাশনাল প্রেস ক্লাবে বসে ভয়ঙ্কর দিনগুলির কথা শুনিয়েছিলেন মিহিরগুল। বন্দিদশায় তাঁকে বিভিন্ন অজানা ওযুধ খেতে বাধ্য করা হতো। এই ওষুধ খেয়ে অনেক সময়ই জ্ঞান হারিয়ে ফেলতেন তিনি। যে কক্ষে তাঁকে রাখা হয়েছিল, সেখানে তিন মাসের মধ্যে ন’জন মহিলা মারা গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। সেখানে ক্যামেরার সামনে তাঁকে মলমূত্র ত্যাগ করতে হতো। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির স্তুতিতে গান করতে বাধ্য করা হতো যখন তখন। তাঁর কথায়, ‘একদিন আমাকে ন্যাড়া করে হেলমেটের মতো কিছু একটা পরিয়ে একটা চেয়ারে বসানো হয়। ইলেকট্রিক শক দেওয়ার সময় ভীষণ ভাবে কাঁপছিলাম আমি। যন্ত্রণা ছড়িয়ে পড়ছিল আমার শিরা আর ধমনীতে। তার পর আর কিছু মনে নেই। আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম। শুধু মনে আছে, আমি উইঘুর বলে ওরা আমাকে গালি দিচ্ছিল।’ গোটা চীন জুড়ে ‘এক শিক্ষা, এক সংস্কৃতি’ চালু করতে বেজিং সরকারের পরীক্ষা নিরীক্ষার শিকার উইঘুর মুসলিমরা, এমনটাই অভিযোগ। বাঁচতে অনেকেই পালাচ্ছেন এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকায়। চীন সরকারের সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের শিকার এই অঞ্চলের কাজাখ মুসলিমসহ আরও কিছু প্রাচীন জনজাতি। জানাচ্ছে মানবাধিকার সংগঠনগুলি।
‘কমিউনিস্ট’ চীনের নেতারা নিশ্চিত ভোলেননি মার্কসের সেই উক্তি। মার্কস ধর্মকে বলেছিলেন ‘নিপীড়িতের দীর্ঘশ্বাস—হৃদয়হীন বিশ্বের হৃদয়’। কিন্তু আধুনিক ‘সমাজতন্ত্রী’রা ধর্মপ্রশ্ন মোকাবিলায় খেই হারিয়ে ফেলেছেন। চীন তা পুনঃপ্রমাণ করছে। মিলছে ধর্মীয় স্বাধীনতার সঙ্কট নিয়ে ভয়ঙ্কর খবর। রাবিয়া কাদির ও উইঘুর সমাজ তার বড় দৃষ্টান্ত। ভারতের বামপন্থীরা কি খোঁজ রাখেন, চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে কী চলছে? এবছরের গোড়াতেই চীন জানিয়ে ছিল, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে তারা ‘ইসলামের চীনাকরণ’ (চিনিসাইজ অব ইসলাম) সম্পন্ন করতে পারবে। কিন্তু এটা করতে গিয়ে মুসলিম-সংখ্যাধিক্য জিনজিয়াংয়ে মসজিদ থেকে রেস্টুরেন্ট—সর্বত্র নজরদারি বাড়িয়েছে। প্যালেস্তাইনের গাজা উপত্যকার পর পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহৎ উন্মুক্ত কারাগারে পরিণত হয়েছে জিনজিয়াং। পঁচিশ লক্ষের বেশি নিরীহ উইঘুর মুসলিমদের বন্দি করা হয়েছে কারাগারে। বেজিংয়ের ভাষায় সেগুলো কারাগার নয়, ‘প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’। উইঘুররা ‘পশ্চাৎপদ’, সেই কারণেই তারা ‘বিপজ্জনক’। এজন্য ‘প্রশিক্ষণ’ দিয়ে চীন তাদেরকে ‘উন্নত’ করছে মাত্র। ‘উন্নয়ন’-এর কাছে মাথা নোয়াতে শেখানোই এসব শিবিরের পাঠ্যসূচি। বিশেষ করে ‘কমিউনিস্ট পার্টি’র প্রতি ভালোবাসা শেখাতে। ভুয়ো অজুহাতে উইঘুর যুবকদের গ্রেপ্তার করে পুরে দেওয়া হচ্ছে বন্দিশিবিরে। পাশাপাশি বাছাই করা হচ্ছে উইঘুর শিল্পী, লেখক, অধ্যাপকদের। অদৃশ্য হয়ে গিয়েছেন শিক্ষাবিদ মহম্মদ সালিহ হাজিম, অর্থনীতিবিদ ইলহাম তোকতি, নৃতাত্ত্বিক রাহাইল দাউদ, পপশিল্পী আবদুর রহিম হায়াত, ফুটবল খেলোয়াড় এরফান হিজিমদের মতো অনেকেই। লক্ষ্য একটাই, উইঘুরদের মুসলিম জাতিসত্তাকে ভুলিয়ে দিতে হবে। বদলাতে হবে সংস্কৃতি আর ধর্মবিশ্বাস।
মনোবিজ্ঞানী শোশানা জুবোফের ‘দ্য এজ অব সার্ভিল্যান্স ক্যাপিটালিজম’ চলতি বছর প্রকাশিত সেরা বইগুলির একটি তো বটেই। পুঁজিতান্ত্রিক সঞ্চয়নের ‘নজরদারির নবযাত্রা’কে খুঁজে পাবেন এই বইয়ে। ‘নজরদারির নবযাত্রা’-র অর্থ কী? যেমন ধরুন—ফেসবুক, ট্যুইটার, গুগল, উইচ্যাটের ব্যবহার কারীরা আদতে মোটেই এসব কোম্পানির ক্রেতা-ভোক্তা নেই। কাঁচামাল মাত্র। এসব ব্যবহারকারী তাঁদের পছন্দ অপছন্দ, অভ্যাস ‘তথ্য’ জুগিয়ে যাচ্ছেন অন্যকে। ফেসবুক, ট্যুইটার, গুগল, উইচ্যাটের কাছে ব্যবহারকারীদের সব তথ্যই ‘ডেটা’ মাত্র। সরাসরি বা গোপনে যা চলে যাচ্ছে শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রের হাতে। কর্পোরেটদের হাতেও। কাজে লাগছে সেসব কখনও ব্যবসায়ের প্রসারে। কখনও নজরদারির প্রয়োজনে। এভাবে নাগরিকরা অজান্তেই বেদখল হয়ে যাচ্ছে। সার্ভিল্যান্স ক্যাপিটালিজমের শক্তির জায়গা এটাই।
পুঁজিতন্ত্রের আগের অধ্যায়ে দখল-বেদখল হতো প্রাকৃতিক সম্পদ। আজকের অর্থনীতি আগ্রহী ‘মানবপ্রকৃতি’ নিয়ে। খোদ মানুষকে নিয়েই। এতদিন পুঁজি ও তার পেশিশক্তি দখল করত বিভিন্ন অঞ্চলকে। এখন উপনিবেশ হচ্ছে মানবশরীর ও মনের। সার্ভিল্যান্স ক্যাপিটালিজমে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদের পাশাপাশি খুন হচ্ছে বিশেষভাবে মানুষের সার্বভৌমত্ব। এর বড় নজির অবশ্যই চীন। বিশেষ করে চীনের জিনজিয়াং। এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ভূ-রাজনীতিতে জিনজিয়াং-এর গুরুত্ব এবং চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্পের অর্থনৈতিক মহাযজ্ঞকে নির্বিঘ্নে চালানোর বিষয়টিও। ধর্মীয় ও জাতিগত পরিচয়ের জন্য নির্যাতন চালানো মুখ্য কারণ নয়—এটা একটা উপলক্ষ মাত্র। উইঘুররা সার্ভিল্যান্স ক্যাপিটালিজমের বড় এক নিরীক্ষার শিকার। তবে উইঘুরদের নিয়ে চীনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা, নিপীড়ন এক ভবিষ্যত বিশ্বেরও ইঙ্গিত দিচ্ছে। যেখানে ৯৯ শতাংশ নাগরিকের নিয়তি উইঘুরদের মতোই হবে। যেখানে ‘৯৯ শতাংশ’ হবেন একইসঙ্গে কাঁচামাল, ভোক্তা ও ভিলেন।
চীনের প্রশাসন চাইছে, উইঘুরদের পুরো জীবনাচারকে ‘চৈনিক হেজিমনিতে রূপান্তর’ এবং কমিউনিস্ট ভাবাদর্শে গড়ে তুলতে। যাকে তারা নাম দিয়েছে বৃত্তিমূলক কারিগরি প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা। ফাঁস হওয়া একটি গোপন নথি থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালে জিনজিয়াং কমিউনিস্ট পার্টির ডেপুটি সেক্রেটারি ঝু হাইলুন নয় পৃষ্ঠার একটি নির্দেশপত্র বন্দিশালাগুলোতে পাঠান। যেখানে বলা হয়েছে, কাউকে পালানোর সুযোগ দেওয়া যাবে না। কেউ আচরণবিধি অমান্য করলে তাকে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। তাকে অনুতপ্ত হতে বাধ্য করতে হবে। উইঘুরদের নিজস্ব ভাষার বদলে ম্যান্ডারিন ভাষা শিক্ষা এবং এই সংস্কৃতি শিক্ষা ও চর্চায় বেশি জোর দাও। মানসিকভাবে ও মতাদর্শগত দিক থেকে পুরোপুরি বদলাতে তাদের অনুপ্রাণিত কর। গোটা তল্লাটে ভিডিও নজরদারি চালাও। এখানেই শেষ নয়! প্রযুক্তির উদ্ভাবনে চীন এখন অদম্য এক ড্রাগন। জিনজিয়াংয়ের রাজধানী উরুমকিতে গেলেও তা টের পাওয়া যায়। উইঘুরদের সবার হাতে স্মার্টফোন। বুকে পরিচয়পত্র। শখ কিংবা প্রয়োজনে নয়, এসব ব্যবহারে তারা বাধ্য। স্মার্টফোনে রাখতে হচ্ছে সরকার নির্ধারিত বিশেষ ‘অ্যাপ’ও, যা তাকে সর্বক্ষণ নজরদারিতে রাখছে। ফোন বন্ধ মানেই সন্দেহের তালিকায় পড়ে যাওয়া। জিনজিয়াংয়ে মসজিদ, রেস্তরাঁ, বাস টার্মিনাল—সর্বত্র মুখাবয়ব শনাক্ত করার চেকপোস্ট আছে। মুখের ছবি আর পরিচয়পত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্ক্যান হচ্ছে। কাউকে সন্দেহ হওয়া মাত্র পুলিসকে সতর্ক করবে প্রযুক্তি। পরের পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর। স্মার্টফোন পকেটে রেখে দেওয়াও অন্যায়। পুলিস চাওয়ামাত্র তা দেখাতে হয়। দরকার মনে করলে তারা সেটা তাৎক্ষণিক নেড়েচেড়ে দেখে। স্মার্টফোন আর বায়োমেট্রিক পরিচয়পত্র ছাড়াও চীন উইঘুরদের ডিএনএ, আঙুলের ছাপ নিচ্ছে। ভয়েস রেকর্ড করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রত্যেকের নড়াচড়ার ‘ম্যাপিং’ও চলছে। ২৫ লাখ উইঘুর ইতিমধ্যে নজরদারি প্রযুক্তির আওতায়। সর্বত্র তাদের ‘চেকপয়েন্ট’-এর ভিতর দিয়েই এদিক-সেদিক যেতে হয়। এই নজরদারি চালানোর অভিযোগে ইতিমধ্যে চীনের ২৮টি সংস্থার উপর কার্যত কালো তালিকাভুক্ত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। ওয়াশিংটনের অনুমোদন ছাড়া ওই সংস্থাগুলি আমেরিকার কাছ থেকে পণ্য, পরিষেবা বা প্রযুক্তি কিনতে পারবে না। কিন্তু তাতেও নিজেদের অবস্থান থেকে সরেনি বেজিং। আসলে লাখ লাখ উইঘুরের মানবিক সত্তা মুছে তাদের স্রেফ নজরদারির ‘ডেটা’য় পরিণত করার চেষ্টা, কার্যত এই জীবন্ত দুনিয়াটাকে মেশিনে পুরে জিডিপি বাড়ানোর সর্বনাশা আয়োজন মাত্র।
সম্প্রতি ফাঁস হয়ে গিয়েছে সরকারি নথি ‘চায়না কেবলস’। ৪০০ পৃষ্ঠার ওই নথি থেকে দিন কয়েক আগে জানা গিয়েছিল, চীনা প্রেসিডেন্ট জি জিনপিংয়ের নির্দেশেই জিনজিয়াং প্রদেশের প্রায় ১০ লক্ষ উইঘুর ও অন্য মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে আটক করে রাখা হয়েছে। ওয়াশিংটনের আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের একটি সংগঠন জানিয়েছে, কীভাবে একটি মোবাইলের একটি শেয়ারিং অ্যাপ দিয়ে ২০১৬ থেকে লাগাতার নজরদারি চালানো হচ্ছে উইঘুরদের উপর। ওই চীনা অ্যাপ ‘জ্যাপিয়া’ ব্যবহার করে শুধু ধর্মীয় বাণী ইত্যাদি শেয়ার করার জন্যও বহু উইঘুরকে আটক করা হয়েছে বলে দাবি সাংবাদিকদের। সংখ্যালঘু উইঘুরদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ বরাবরই উড়িয়ে দিয়েছে বেজিং। কিন্তু ফাঁস হয়ে যাওয়া নথি বলছে, চীনের উত্তর-পশ্চিমে উইঘুরদের স্বশাসিত জিনজিয়াং প্রদেশে জিনপিং তাঁর একাধিক সফরে এসে বলেছেন, ‘সন্ত্রাস, বিচ্ছিন্নতাবাদ এবং অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে এ বার সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে। কাউকে ছাড় নয়।’ এরজন্য হাতিয়ার ‘সার্ভিল্যান্স ক্যাপিটালিজম’!
বিশ্বে সার্ভিল্যান্স ক্যাপিটালিজমের বড় হাতিয়ার হল মুখচ্ছবি শনাক্ত করার প্রযুক্তি। বায়োমেট্রিক বিদ্যা দিয়ে মুখের মানচিত্র শনাক্ত করে এই প্রযুক্তি। বিমানবন্দর থেকে শপিং সেন্টার, সর্বত্র এটা বসানো হচ্ছে। ২০১৭-এর হিসাবে, আড়াই কোটি ভিডিও সার্ভিল্যান্স ক্যামেরা বসে আছে দুনিয়াব্যাপী। এর অন্তত ২০ ভাগ রাষ্ট্রীয় নেটওয়ার্কভুক্ত। শুধু চীনই এই রকম চার কোটি ক্যামেরা বসানোর তোড়জোর শুরু করেছে। চীনের শেনজেনে এখনই প্রতি হাজার মানুষের বিপরীতে ১৫৯টি ক্যামেরা বসে আছে। সাংহাইয়ে হাজারে ১১৩। গোটা দুনিয়ার অজান্তেই মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার চিরতরে মৃত্যু ঘটতে চলেছে। অনেকেই বলছেন, এসব আয়োজন বিশ্বকে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার বধ্যভূমি বানানোর তারিকা ছাড়া কিছু নয়। ইতিমধ্যে কর্তৃত্ববাদী শাসকরা প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে পেটোয়া বাহিনী ব্যবহার করতে ফেসিয়াল টেকনোলজির বড় ক্রেতা হয়ে উঠছে। এফবিআইয়ের হাতে নানা উপায়ে ৪১ কোটি মানুষের মুখাবয়বের ‘ডেটা’ চলে গিয়েছে বলে আমেরিকায় একাধিক খবর বেরিয়েছে। এ রকম ‘ডেটা’ আস্তে আস্তে বিশ্বের সব গোয়েন্দা সংস্থা থেকে জঙ্গি সংগঠন, সবার কাছেই চলে যাবে কোটি কোটি মানুষের অজান্তে। ভয়টা সেখানেই।
কর্পোরেটরাও এই প্রযুক্তির প্রধান এক ভোক্তা। একজন প্রতিবাদী শ্রমিককে বরখাস্ত করার পাশাপাশি তাঁর মুখের মানচিত্র যদি সব মালিকের কাছে নিমেষে পৌঁছে দেওয়া হয়, তাহলে তিনি হয়তো আর কোনও দিনই কোথাও কাজ পাবেন না। সম্প্রতি হংকংয়ে বিক্ষোভকারীদের মুখোশ পরতে যে নিষেধ করা হচ্ছে, তা-ও মুখাবয়ব শনাক্তকারী প্রযুক্তি ব্যবহার করে চীনের নজরদারির জন্যই। আসলে, সার্ভিল্যান্স যুগের প্রধান সংস্কৃতিই হল, ‘সব মেনে নাও’। আর এই সার্ভিল্যান্স যুগের প্রথম পরীক্ষাগার উইঘুর সমাজ।