মানসিক অস্থিরতা দেখা দেবে। বন্ধু-বান্ধবদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা দরকার। কর্মে একাধিক শুভ যোগাযোগ আসবে। ... বিশদ
সেই জন্যই ত তোকে নাম করতে বল্ছি। মধুর হতেও মধুর কেন বললাম—বুঝেছিস্ ত? আবার শোন্, এ নাম মঙ্গলের মঙ্গল। মঙ্গলজনক কার্য্য—যজ্ঞ, দান, তপস্যা, ব্রত হোম ইত্যাদি। এই সমস্ত কার্য্যের দ্বারা জীব স্বর্গলোক পর্য্যন্ত যেতে পারে। তারপর “ক্ষীণে পুণ্যে মর্ত্ত্যলোকং বিশন্তি”—পুণ্যক্ষয়ে মর্ত্ত্যলোকে এসে কর্ম্মানুযায়ী গতি লাভ করে; অবিরত যাতায়াত করতে থাকে। কিন্তু এই নাম করলে জীব মোক্ষলাভ সমর্থ হয়, তাকে আর নানারূপে নানা যন্ত্রণা ভোগ করতে হয় না।
কলের্দোষনিধে রাজন্নস্তি হ্যেকো মহান্ গুণঃ।
কীর্ত্তনাদেব কৃষ্ণস্য মুক্তবন্ধঃ পরং ব্রজেৎ।।
দোষের আকর এই কলিযুগের একটি মহান্ গুণ যে নাম কীর্ত্তনের দ্বারা জীব বন্ধনশূন্য হয়ে পরমধাম প্রাপ্ত হয়। তাই তোকে বললাম—নাম মঙ্গলের মঙ্গল। এই নাম সমস্ত বেদলতার ভূত, ভবিষ্যৎ, বর্ত্তমান ত্রিকালস্থায়ী, নিত্য চৈতন্যময় ফল। এ নাম জড়, এ নামের স্বরূপই চৈতন্য। তুই জড় দেহটার সঙ্গ করে জড় হয়ে গেছিস, এইবার এই চৈতন্যময় নামের সঙ্গ সদা সর্ব্বদা করে এই ভূতের বোঝার কথা ভুলে গিয়ে তুইও চৈতন্যময় হ, তোর স্বরূপ তুই লাভ কর্। আমার কথায় যদি তোর নামেতে শ্রদ্ধার উদয় না হয়ে থাকে তাহলেও তুই হেলা করেও নাম কর্, আমি তোকে উদ্ধার করব। তুই কি শুনিস্ নাই?
সাঙ্কেত্যং পরিহাস্যং বা স্তোভং হেলনমেব বা
বৈকুণ্ঠনামগ্রহণমশেষাঘহরং বিদুঃ।
সঙ্কেত, স্তোভ, পরিহাস অথবা হেলা করেও আমার নাম করতে অশেষ পাপ নষ্ট হয়, তবে তুই কেন নীরব থাকবি? কেন নাম করবি না? এ নামে বালক, বৃদ্ধ, যুবক, ভাদাভেদ নাই। নরনারী মাত্রেই এ নামের অধিকারী। এ নাম পাপী, পুণ্যবান্ রোগী, শোকী, তাপী, সকলকেই ভীম ভব-পারাবার হতে উদ্ধার করে। নাম কর্—নাম কর্।
আবার নাম করব না।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।
ওরে! তুই নাম কর্! নাম যে করে আমি তার প্রতি বড়ই সন্তুষ্ট হই। এ কলিযুগে নামই তপস্যা।
‘শ্রী ওঙ্কারনাথ-রচনাবলী’ (৩য় খণ্ড) থেকে