উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে বাধার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে হবে। উচ্চতর বিদ্যার ক্ষেত্রে শুভ ফল পাবে। কর্মপ্রার্থীদের ... বিশদ
সাধারণ সকাম কর্মের কথা বলিবার প্রয়োজন নাই। তাহার মূলে ত মলিন বাসনা নিহিত থাকেই। ঐহিক বা পারত্রিক ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে অনুষ্ঠিত অতিবড় পুণ্যকর্মও সকাম শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। মলিন বাসনার স্পর্শ হইতে তাহাও মুক্ত নহে। গুরুর উপর নির্ভর করিয়া নির্বিচারে তাঁহার আজ্ঞা পালন করা— ইহাও সকাম কর্ম। তবে এই ক্ষেত্রে কামনা বা বাসনা বিশুদ্ধ। গুরুর ইচ্ছা পূর্ণ করিবার জন্য যে আন্তরিক বাসনা তাহা বাসনা হইলেও মন্দ নহে। সুধীগণ তাহাকে শ্রেষ্ঠ স্থান দিয়াছেন। এক হিসাবে এই জাতীয় কর্মকে নিষ্কামও বলা চলে। কেহ কেহ তাহা বলিয়াও থাকেন। বৈষ্ণবাচার্যগণ যেমন বলিয়া থাকেন যে ভগবৎ স্বরূপে প্রাকৃত বা হেয় গুণ নাই, তাই তাঁহাকে শ্রুতি নির্গুণ বলিয়া বর্ণনা করেন। কিন্তু তাঁহাতে যে মোটেই কোন গুণ নাই, তাঁহাদের মতে নির্গুণ শব্দের ইহা তাৎপর্য নহে। অপ্রাকৃত অনন্ত কল্যাণগুণ নিত্যই তাঁহাতে আছে, ইহা অস্বীকার করা যায় না। কিন্তু তাহা সত্ত্বেও তাঁহাকে যে নির্গুণ বলিয়া বর্ণনা করা হয় তাহার উদ্দেশ্য এই যে তিনি যাবতীয় হেয় গুণ হইতে নির্মুক্ত। তদ্রূপ চিত্তে ক্ষুদ্র কামনা বা হেয় বাসনা না থাকিলে এক হিসাবে উহাকে নিষ্কাম বলা চলে। কিন্তু সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে উহাকে নিষ্কাম বলা সঙ্গত হয় না। কেহ কেহ মনে করেন, আত্মদর্শন না হইলে নিষ্কাম কর্ম হয় না— এই মত সত্য নহে। মা একথার যথার্থ্য স্বীকার করেন না। কারণ আত্মদর্শন হইলে কর্ম থাকে না। দ্বন্দ্ব ভিন্ন কর্ম হয় না—আত্মদর্শন হইলে দ্বন্দ্বাতীত পদে স্থিতি হয়। তখন আত্মা হইতে ভিন্ন কিছুই দৃষ্ট হয় না, সবই তখন আত্মরূপে প্রতিভাত হয়। তখন দ্বন্দ্বও নাই, কর্মও নাই।