উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য। ব্যবসায় গোলযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যে অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
আত্মবিশ্বাসী মানুষ কখনও অন্য কারুর কাছে সাহায্য প্রত্যাশা করেন না, আত্মবিশ্বাসী মানুষই নিঃসঙ্গ অথবা অনাসক্ত ভাবে, প্রজ্ঞাভাবে প্রতিষ্ঠিত থেকে স্বচ্ছন্দ আনন্দে জীবন কাটিয়ে যেতে পারেন। ঈশ্বরের সঙ্গে তখন তাঁর যেন প্রতিদিনের দেখা শোনার এক নিবিড় সম্পর্ক এসে যায়।
এই অবস্থা এলে জীবনের শোক দুঃখ অথবা আনন্দ উচ্ছ্বাস সর্ব অবস্থাকেই মেনে নেবার মত ধৈর্য আসে। শ্রীমদ্ভগবদ গীতার ‘শীতোষ্ণ সুখ দুঃখেষু সমঃ সঙ্গ বিবর্জিতঃ’, এই অবস্থায় আত্মচৈতন্যে স্থিত হয়ে জীবন অতিবাহন করেন তাঁরা।
মাঠাক্রুণ বলতেন, যেমন ঝড়ে মেঘ উড়িয়ে নেয় তেমনই তাঁর নামে বিষয় মেঘ কেটে যায়। যা-ই করবে তাঁর নাম নিয়ে কর। কর্ম করতে করতে কর্মের বন্ধন কেটে যায়। সব কাজের মধ্যেই ইষ্টচিন্তা যদি প্রচ্ছন্নভাবে অন্তরে জাগরুক থাকে তাহ’লে অনিষ্ঠ আসবে কোথা দিয়ে? তাঁর শ্রীমুখের বাণী—এখানে যারা এসেছে, যারা তাঁর নাম নিয়ে আছে, তাদের মুক্তি হয়ে গেছে।
ব্রহ্মচর্য ব্রতধারী সন্তানদের প্রতি—ব্রহ্মচর্য-পথকে কঠিন মনে করে প্রায় কেউই সে পথ ধরতে চায় না। কিন্তু এ পথের আনন্দ একবার অন্তরে অনুভব করতে পারলে তখন জগতের মায়িক আনন্দ আলোনা লাগবে।
তবে কি জান? বাবারা? নিজের ওপর দৃঢ় বিশ্বাস না থাকলে পৃথিবীর সঙ্কীর্ণ গণ্ডী থেকে বার হতে পারবে না। এ পথ অনুসরণ করতে তেজীয়ান শ্রীগুরু চরণকে নিরন্তর ধেয়ানে রাখতে হবে। তাঁর বলীয়ান আদর্শকে নিজের শিরোভূষণ করতে হবে। আর মনকে করতে হবে সরল, পবিত্র। শরীরের স্নায়ুতন্ত্রীদের করতে হবে বজ্রসম বলিষ্ঠ। ন অয়ং বলহীলেন লভ্য।
বিশ্বাস-বিশ্বাস-বিশ্বাস। ঈশ্বরে বিশ্বাস, নিজের ওপর বিশ্বাস। বিশ্বাসই জীবনের বিষয় ঝড়কে উড়িয়ে তোমাকে তোমার নির্দ্দিষ্টস্থানে দাঁড় করাবে। অকপটতা এ পথের বড় হাতিয়ার। কাপুরুষতা সর্বতোভাবে বর্জ্জনীয়। মৃত্যুকেও যেন জয় করতে পার হাসিমুখে। নিজের গণ্ডী ছেড়ো না। আদর্শ ভুলোনা। ব্রতকে জলাঞ্জলি দিও না।
যে ব্রতকে জীবনের আদর্শ বলে একবার ধরেছ তাকে যেন ধরে থাকতে পার মৃত্যু পর্য্যন্ত। মৃত্যুর সময় শ্রীগুরু স্বয়ং এসে দাঁড়াবেন তাঁর বরাভয়কর হস্ত প্রসারণ করে। তাঁর শ্রীচরণে তখন পূর্ণাহুতি দান।
শ্রীগৌরাঙ্গদেব বলতেন, সন্ন্যাসী নারীর চিত্র পটটিও কখনও দেখবে না। সমগ্র বিশ্বের নারী তার মা। চরিত্রের কঠিনতাকে সহায় রেখে আধ্যাত্মিকতাকে অর্জন কর। হয়ে যাও, হয়ে যাও—সমুদ্রের জলের সঙ্গে নদীর জলের মত একাকার হয়ে মিশে যাও। সাধন-ভজন সম্বন্ধে উপদেশ—মনকে ভগবৎচরণে একান্ত শরণাগত করে তবে তাঁকে অন্তরে স্থাপন করতে হয়। তবে বহুরকম কামনা করেই মানুষ প্রথমে ঈশ্বরকে ধরে। প্রথম প্রথম জপ সকামই চলে। এই কামনাই জপের প্রভাবে একদিন এমন অবস্থায় আসে তখন আপনা থেকেই আর কোন কামনা আসে না। ঈশ্বরই একমাত্র কামনীয় মহাবস্তু হয়ে দাঁড়ান তখন। তবে সাধকের পক্ষে সে অবস্থা আসতে দীর্ঘ সময় নেয়। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে কৃপার ঝলক যেন দীর্ঘ পথকে কমিয়ে ছোট করে আনে। কৃপা কৃপা—সবই তাঁর কৃপা।