শরীর ভালো যাবে না। সাংসারিক কলহ বৃদ্ধি। প্রেমে সফলতা। শত্রুর সঙ্গে সন্তোষজনক সমঝোতা। সন্তানের সাফল্যে ... বিশদ
দেশের রাজনীতিকদের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই যে সবচেয়ে বুদ্ধিমতী, তার সাক্ষ্য তিনি বার বার রেখেছেন। তাঁর চোখকান বরাবর খোলা। তিনি দেখে শেখেন। তাঁর জন্য কয়েকটা উল্লেখযোগ্য শিক্ষা হল: রাজনীতির মূলে হল মানুষ, তাই মানুষের সঙ্গে অন্যায় করতে নেই। উপরে ওঠার পর সিঁড়িকে ভুলে যেতে নেই। কথা দিতে হয় রাখার জন্যে। আমরা দেখেছি, সিপিএমের ক্ষমতার উৎস ছিল মানুষ। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল কৃষক শ্রেণির। কিন্তু সিপিএম সরকার যত পুরনো হয়েছে তারা তত ক্ষমতার দালাল হয়ে পড়েছিল। দূরে সরিয়ে দিয়েছিল মানুষকে। শেষদিকে তারা চরমভাবে কৃষক-বিরোধী শক্তিতে রূপান্তরিত হয়েছিল। অন্যদিকে, বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদির প্রতি মানুষের দ্রুত মোহভঙ্গের কারণ কথার খেলাপে তাঁর রেকর্ড সৃষ্টি।
২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের ইস্তাহারে তৃণমূল কংগ্রেস দু’টো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল: ‘দুয়ারে রেশন’ এবং ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্পের আর্থিক সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধি। তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের দু’সপ্তাহের মধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চালু করে দিয়েছেন ‘দুয়ারে রেশন’-এর পাইলট প্রজেক্ট। এটাকে বাংলার সর্বত্র দ্রুত সম্প্রসারণ করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। দেশবাসী ইতিমধ্যেই দেখেছে, ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্পের ঘোর বিরোধী হল মোদি সরকার। তারা আইনি ফ্যাকড়া তুলে দিল্লির কেজরিওয়াল সরকারের ‘দুয়ারে রেশন’ দেওয়ার উদ্যোগ বানচাল করে দিয়েছে। কিন্তু মমতার সরকার প্রকল্পটা রপায়ণ করছে রাজ্যের কোষাগারের জোরে। তাই মোদিবাবুরা বাংলাতেও বিরোধিতা করে এখনও সুবিধে করতে পারেনি। মোদি সরকার বুঝিয়ে দিয়েছে, তাদের কাছে মানুষের খিদের চেয়ে নিষ্প্রাণ আইন এবং রাষ্ট্রীয় কাঠিন্য অধিক মূল্য বহন করে। যাই হোক, মমতার সরকার এবার তার দ্বিতীয় নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্পের আর্থিক সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধির জন্যও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করল। এবার থেকে এক একরের বেশি জমির মালিকরা রাজ্য সরকারের কাছ থেকে বছরে ১০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা পাবেন। অঙ্কটা এতদিন ৬ হাজার ছিল। তারও আগে ছিল ৫ হাজার। অন্যদিকে, এক একরের কম জমির মালিককে সরকার এই অনুদান দেবে ৪ হাজার টাকা করে। এতদিন এটা দেওয়া হতো ৩ হাজার টাকা হারে। তার আগে ছিল ২ হাজার টাকা। যখন মোদি সরকার ‘অন্নদাতাদের’ পথে বসানোর জন্য একাধিক আইন হাতে নিয়ে লাগাতার শক্তিপ্রদর্শন করে চলেছে, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মানবিক মুখের তুলনা তিনিই স্বয়ং। মোদিবাবুরা ভালো কিছু শেখার বান্দা নন। কিন্তু সমস্ত রাজ্য সরকারের কাছে অবশ্যই অনুকরণীয় এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকছে এই কৃষক দরদি ব্যবস্থা।