শরীর ভালো যাবে না। সাংসারিক কলহ বৃদ্ধি। প্রেমে সফলতা। শত্রুর সঙ্গে সন্তোষজনক সমঝোতা। সন্তানের সাফল্যে ... বিশদ
হেলথ ওয়ার্কার, ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার এবং ১৮ ঊর্ধ্ব সমস্ত নাগরিককে টিকা দেওয়া হবে বলে ভারত ঘোষণা করেছে। তাদের মোট সংখ্যা কত? ১০১ কোটি ৭০ লক্ষ। তাঁদের প্রত্যেকের দু’টো ডোজ প্রাপ্য। টিকাকরণ সম্পূর্ণ করতে হলে দরকার ২০৩ কোটি ৪০ লক্ষ ডোজ। ১৬ জানুয়ারি, ২০২১ তারিখে ভারতে টিকাকরণ শুরু হয়েছে। ৩১ মে পর্যন্ত ১৩৬ দিনে সব মিলিয়ে ২১ কোটি ৬০ লক্ষ ৪৬ হাজার ৬৩৮টা ডোজ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ দু’টো ডোজের হিসেবে এখনও ১১ কোটি নাগরিকেরও টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়নি। শুধু একটা ডোজ পেয়েছেন ১৭ কোটি ১২ লক্ষ ১৬৬ জন। দু’টো ডোজের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়েছে ৪ কোটি ৪৮ লক্ষ ৪৬ হাজার ৪৭২ জনের। অর্থাৎ জনসংখ্যার ১২ শতাংশের একটা ডোজ এবং মাত্র ৩ শতাংশের দু’টো ডোজ কমপ্লিট হয়েছে। আর যদি শুধু ডোজের প্রসঙ্গে আসা যায়, তবে পরিষ্কার যে ১ জুন, ২০২১ তারিখে ১৮১ কোটিরও বেশি ডোজ টিকাকরণ বাকি রয়েছে! সোমবার সরকার সুপ্রিম কোর্টে দাবি করেছে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সমস্ত পূর্ণবয়স্ক নাগরিকের টিকাকরণ তারা সম্পূর্ণ করবে। সরকারের দাবি ঠিক হলে ওইদিন হাতে থাকে আর সাকুল্যে ২১৪ দিন। টিকাকরণ নাকি তার ভিতরেই সম্পূর্ণ হবে। অর্থাৎ দৈনিক ৭০-৮০ লক্ষ ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া গেলেই সরকার কথা রাখতে পারবে।
এই প্রসঙ্গে দেশ অবশ্যই জানতে চাইবে সরকারের এ-যাবৎকালের পারফর্ম্যান্সটা কী? টিকাকরণে ভারতের জন্য সেরা দিন গিয়েছে ৫ এপ্রিল, ২০২১। ওই একদিনে ৪৩ লক্ষাধিক ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল। প্রত্যাশা ছিল, ওই ফলকটাকে পিছনে রেখেই ভারত এই ব্যাপারে আরও দ্রুত এগবে। পরিতাপের বিষয়, এগনো দূরে থাক মোদির প্রশাসনের সৌজন্যে ওই উচ্চতাটাও ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। সংখ্যার ওঠানামা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তাই বলে ক্রমেই নীচে নেমে যেতে হবে! এখনও তো টিকাকরণের ছবিটা যথেষ্ট হতাশাজনক। স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্র জানাচ্ছে, ৩১ মে সারা দেশে ২৭ লক্ষ ৮০ হাজার ৫৮ ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ ছবিটা লক্ষ্যমাত্রা এবং ৫ এপ্রিলের মাইল ফলকের পাশে বড়ই ম্লান। তাই শীর্ষ আদালতের মতো জায়গায় কেন্দ্রের সর্বশেষ দাবির পর আম জনতারই লজ্জা লাগছে—সরকার সামান্য পাটিগণিতেও এত কাঁচা! না কি আদালতকে ছেলে ভোলানো ছড়া শেখাতে চাইছে তারা? টিকাকরণ নিয়ে মোদি সরকারের দিশাহীনতা, নীতিহীনতা দেশকে যুগপৎ বিপন্ন করছে এবং লজ্জায় ফেলে দিচ্ছে বিশ্বদরবারে। বিস্মিত শীর্ষ আদালত যথার্থই প্রশ্ন রেখেছে সরকার বাহাদুরের সামনে, ‘এই আপনাদের ভ্যাকসিন নীতি!’ আদালত এদিন সময়োচিত মন্তব্যও করেছে, ‘নিদ্রা ছেড়ে উঠুন। দেখুন দেশে কী হচ্ছে!’