আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সমাগমে আনন্দ বৃদ্ধি। চারুকলা শিল্পে উপার্জনের শুভ সূচনা। উচ্চশিক্ষায় সুযোগ। কর্মক্ষেত্রে অযথা হয়রানি। ... বিশদ
অথচ এইসব ভোটে মুফতে বাজিমাত করার ফন্দি এঁটেছিলেন কেন্দ্রীয় শাসকরা। তাঁদের বিশেষ টার্গেট ছিল বাংলা। তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উৎখাত করার পণ করেছিলেন। নেতৃত্ব দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং। তাঁর সঙ্গে সমানে সংগত করে গিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। মানুষের রায় পক্ষে আনার জন্য তাঁরা ছল বল কৌশলের সবই অবলম্বন করেছিলেন। তাতে যদিও কোনও লাভ তাঁদের হয়নি। সেটা অবশ্য মোদি এবং তাঁর পার্ষদদের ভাবনার বিষয়। দেশবাসীর কিছু যায় আসে না। কিন্তু দেশবাসীর বিপদ বেড়েছে অন্য কারণে। এসব করতে গিয়ে মোদি সরকার বেমালুম ভুলে গিয়েছিল রাজধর্ম, যেটা তার এক ও একমাত্র কর্তব্যকর্ম হওয়ার কথা। একবছরের অধিক সময় পেয়েও দেশের জনস্বাস্থ্য পরিকাঠামো আন্তর্জাতিক মানের করে তোলা হয়নি। কোভিড মহামারী জয়ের জন্য ১৪০ কোটি মানুষের দেশ মোদির নেতৃত্বে যে ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে, তাকে কোনওভাবেই যুদ্ধকালীন তৎপরতা বলা যাবে না। দেশজুড়ে সংক্রমণ বৃদ্ধির তির বেগ, বেড ও একাধিক জীবনদায়ী ওষুধের তীব্র আকাল, অক্সিজেনের ভয়াবহ সঙ্কট আর ভ্যাকসিনের হাহাকার—সরকারের নজিরবিহীন ব্যর্থতারই যোগফল। পরিতাপের সঙ্গে এও লক্ষ করা যাচ্ছে—মাস্ক, স্যানিটাইজারের মতো সামান্য অথচ জরুরি কিছু সামগ্রীও হঠাৎ অমিল হয়ে উঠেছে। একইসঙ্গে বাজার ছেয়ে গিয়েছে নকল স্যানিটাইজারে। অক্সিজেন এবং প্রাণদায়ী কিছু ওষুধের কালোবাজারিও চিকিৎসার সঙ্কটকে বহুগুণ করে তুলেছে।
মানুষের মৃত্যুমিছিল আর অগণিত অসহায় পরিবারের কান্না ভীষণ ভারী করে তুলেছে ভারতের বাতাস। অবিবেচক রাষ্ট্রের সামনে সময়োচিত প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত—এটা কি ‘ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি’ নয়? মোদি সরকারকে আদালতের ভর্ৎসনা অবশ্য এই প্রথম নয়। সম্প্রতি অনেকগুলি হাইকোর্ট, এমনকী সুপ্রিম কোর্টও তিরস্কার করেছে। মানুষকে বাঁচাবার ক্ষেত্রে কেন এই ব্যর্থতা, কেন নজিরবিহীন অবহেলা গাফিলতি? জবাব চেয়েছে আদালতগুলি। ন্যায়্যালয়গুলি দ্রুত পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়ে চলেছে মোদির প্রশাসনকে। কিন্তু উল্লেখযোগ্য উন্নতি কিছু নজরে পড়েনি দেশবাসীর। তাই নিয়মরক্ষার ওই প্রশ্নচিহ্নটি আর রাখতে চায় না মানুষ। তারা মনে করে, এই অপদার্থ সরকার দেশটাকে সত্যিই এক ন্যাশনাল ইমার্জেন্সির ভিতরে ঠেলে দিয়েছে। দয়া করুন, নরেন্দ্র মোদি। হয় কাজ করুন, না-হয় পথ ছাড়ুন। দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে নিন এখনই। সম্মান বজায় রেখে সরে যাওয়ার সময় এখনও আছে।