আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সমাগমে আনন্দ বৃদ্ধি। চারুকলা শিল্পে উপার্জনের শুভ সূচনা। উচ্চশিক্ষায় সুযোগ। কর্মক্ষেত্রে অযথা হয়রানি। ... বিশদ
গুয়াহাটির কটন কলেজে পড়াকালীন রিনিকি ভুঁইঞার সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল হিমন্তর। তখন হিমন্তের বয়স ২২ আর রিনিকি সপ্তদশী। প্রথম বাক্যালাপের পর হিমন্তের কাছে রিনিকি জানতে চেয়েছিলেন, তিনি ভবিষ্যতে কী হতে চান? যাঁকে ঘিরে ঘর বাঁধার কথা ভাবছেন, সেই মানুষটির স্বপ্ন, লক্ষ্য মাকে জানাতে চান রিনিকি। আর এই প্রশ্নের জবাবে হিমন্ত বলেছিলেন, ‘যাও মাকে গিয়ে বলো আমি অসমের মুখ্যমন্ত্রী হব।’ সোমবার উত্তর-পূর্বের প্রবেশদ্বার অসমের ১৫তম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন হিমন্ত। তারপরেই সংবাদমাধ্যমের কাছে তিন দশক আগে স্বামীর দেওয়া কথার স্মৃতিচারণ করেছেন হিমন্ত-পত্নী।
৩০ বছর আগে তরুণ হিমন্তের কথা শুনে প্রথমে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন রিনিকি। বিশ্বাস করতে পারেননি যাঁর সঙ্গে ঘর বাঁধতে চলেছেন, সেই ব্যক্তিটি কতটা দৃঢ়, জেদী। রিনিকির কথায়, ‘সেদিন কথাটা শুনে আমি স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু পরে বুঝেছিলাম, এই মানুষটির মধ্যে একটা সংকল্প রয়েছে। যে মানুষটিকে সে বিয়ে করেছে, সে রাজ্যের জন্য স্বপ্ন দেখে।’ এমনকী, যখন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব হিমন্তকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছে, সেদিন স্বামীর কথাও প্রথমে রিনিকির বিশ্বাস হয়নি। তিনি বলেছেন, ‘৯ মে উনি বাড়ি ফিরে বলেছিলেন, আমিই মুখ্যমন্ত্রী। তখন আমি ওঁর মুখের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করেছিলাম কে?’ ২২ বছর বয়সে তরুণ হিমন্ত যা বলেছিল, আজ তা বাস্তব।
রিনিকি আরও বলেছেন, ‘যখন আমি হিমন্তকে বিয়ে করেছিলাম, তখন তিনি শুধুই বিধায়ক ছিলেন। এরপর মন্ত্রী হলেন। আজ যখন তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে দেখছি, তখন আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না।’ গুয়াহাটির শঙ্করদেব কলাক্ষেত্রে হিমন্তের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তাঁদের ছেলে ও মেয়ে এবং হিমন্তের মা মৃণালিনী দেবী।
ছাত্রজীবনেই অল অসম স্টুডেন্টস ইউনিয়নের সক্রিয় নেতা ছিলেন হিমন্ত। সেখান থেকে ১৯৯৪ সালে তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেন। প্রথম থেকেই হিমন্ত ছিলেন খুব পরিশ্রমী। সেইসঙ্গে ছিল তাঁর একাগ্রতা। আর সেকারণেই অসমের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা হিতেশ্বর সাইকিয়া হিমন্তকে রাজ্যের ছাত্র ও যুবকল্যাণের উপদেষ্টা কমিটির সেক্রটারি নিযুক্ত করেন। তাঁর নেতৃত্বে ছাত্রজীবনে একটা বদল এসেছিল — বিশেষ করে ক্রীড়া, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে। ১৯৯৬ সালে জালুকবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়লেও দাপুটে নেতা ভৃগুকুমার ফুকানের কাছে ১৭ হাজার ১২৮ ভোটে হেরে যান। ২০০১ সালে সেই জালুকবাড়ি থেকেই হিমন্ত ভোটে লড়েন এবং জয়লাভ করেন। তারপর থেকে ক্রমশ জয়ের ব্যবধান বাড়িয়ে যাচ্ছেন রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। ২০০১ সালে যেখানে হিমন্তের জয়ের মার্জিন ছিল ১০০১৯, সেখানে ২০২১ সালে তা বেড়ে হয়েছে ১ লক্ষ ১ হাজার ৯১১ ভোট।