আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সমাগমে আনন্দ বৃদ্ধি। চারুকলা শিল্পে উপার্জনের শুভ সূচনা। উচ্চশিক্ষায় সুযোগ। কর্মক্ষেত্রে অযথা হয়রানি। ... বিশদ
মানুষের দ্বারা বিজেপিকে প্রত্যাখ্যানের এই ঐতিহ্যে বিরাম নেই আপাতত। বিধানসভার ভোটে দক্ষিণের দুই রাজ্য কেরল ও তামিলনাড়ুতে মোদি বাহিনী কোনও ছাপই ফেলতে পারেনি। দক্ষিণেরই আর এক রাজ্য তেলেঙ্গানার পুরভোটেও ব্যর্থ হয়েছে বিজেপি। একটাই সান্ত্বনা হায়দরাবাদ পুর কর্পোরেশনের ভোটে ইতিবাচক ফল করেছে তারা। কিন্তু ওই পর্যন্তই। তেলেঙ্গানার বাকি পুরসভা এবং কর্পোরেশনগুলির নির্বাচনে মোদি-শাহের নেতৃত্ব ডাহা ফেল। সব পুরসভার দখল নিয়েছে তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি। বিজেপি সেকেন্ডও নয়, বেশিরভাগ জায়গায় পুওর থার্ড! আরও দুঃসংবাদ বয়ে এনেছে উত্তরপ্রদেশ। এটা যেমন তেমন কোনও রাজ্য নয়। যোগীরাজ্য। গেরুয়া শিবির যেটাকে একেবারে ‘রামরাজ্য’ বলে ভক্তি শ্রদ্ধা করে। স্বয়ং নরেন্দ্র মোদি যে-রাজ্য থেকে লোকসভার সদস্য। এটাই ভারতের বৃহত্তম প্রদেশ। গোবলয়ের কেন্দ্র। ভারতের রাজনীতিতে এই রাজ্যই সবসময় নির্দেশ করে এসেছে দিল্লির গদি কার দখলে যাচ্ছে। সেই উত্তরপ্রদেশের পঞ্চায়েত ভোটেও বিজেপির লেজেগোবরে অবস্থা হয়েছে। সদ্য-সমাপ্ত এই ভোটের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থাজ্ঞাপন করেছে বেশিরভাগ জেলা। বিশেষ করে জেলা পরিষদগুলিতে। আসন সংখ্যার নিরিখে যোগীর নেতৃত্ব পরাস্ত হয়েছে অখিলেশ যাদবের কাছে। শুধু সমাজবাদী পার্টি নয়, অন্য কয়েকটি বিরোধী দলও জোর টক্কর দিয়েছে। বিজেপিকে হটিয়ে অনেকগুলি জেলা পরিষদের দখল নিতে চলেছে বিরোধীরা। জেলা পরিষদে এককভাবে বিজেপির প্রায় সমান-সমান আসন পাচ্ছে সমাজবাদী পার্টি। আর বিরোধী দলগুলির আসনের সম্মিলিত শক্তির বিচারে বিজেপি অনেকটাই পিছনে পড়ে গিয়েছে। বিজেপির কাছে সবচেয়ে উদ্বেগের হল—মথুরা, অযোধ্যা এবং নরেন্দ্র মোদির বারাণসীতে দলের ফল রীতিমতো শোচনীয়। এই তিন জেলায় গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে জেলা পরিষদ—বিজেপির তুলনায় অনেক বেশি সংখ্যক আসন পেয়েছে বিরোধীরা। দুঃসংবাদ দিয়েছে রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলও। হয় সমাজবাদী পার্টি, না-হয় অজিত সিংয়ের রাষ্ট্রীয় লোকদল অনেক বেশি এগিয়ে গিয়েছে। বিজেপির বুকে কৃষক আন্দোলনের সরাসরি ধাক্কাটা এখানে স্পষ্ট হচ্ছে। একাধিক জেলায় পুরনো ফর্মে ফিরছে মায়াবতীর ম্যাজিক।
বছর ঘুরলেই বিধানসভার ভোট। তার আগেই যোগীরাজ্যের গ্রামাঞ্চলে হিন্দুত্বের নিশান শুয়ে পড়তে মরিয়া। যেখানে হিন্দুত্বকেই উন্নয়ন এবং সুষ্ঠু আইনশৃঙ্খলার সমার্থক করে তোলা হয়েছে, সেখানে এই ঘটনার একটাই ব্যাখ্যা উঠে আসে—মোদি-যোগীদের রাজনীতির পুঁজি খোদ উত্তরপ্রদেশেই চৌপাট হতে চলছে। মোদি-শাহ-নাড্ডাদের বাংলায় সবক শিখিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই পাঠ বিনাপ্রশ্নে গ্রহণ করছে দেশের অন্য অনেক রাজ্যও একে একে।