কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। সরকারি ক্ষেত্রে কর্মলাভের সম্ভাবনা। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় মানসিক অস্থিরতা থাকবে। ... বিশদ
তবু, মানুষের চেতনা কই! সাধারণ মানুষের কথা কী বলব, যেদিন ২০০৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে কিয়োটো প্রটোকল পুরোপুরি আইনে বলবৎ হওয়ার কথা ছিল, সেদিন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ বলেছিলেন, আমি কিয়োটো প্রটোকল মানি না। আর এখন আমেরিকার আরেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্যারিস চুক্তি থেকে আমেরিকার নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। উভয় প্রেসিডেন্টের যুক্তি হল—মানুষের তৈরি পরিস্থিতির কারণে আবহাওয়ার পরিবর্তন হতে পারে, তাঁরা তা বিশ্বাস করেন না।কয়েক বছর ধরেই ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রবল তাপপ্রবাহ দেখা গিয়েছে। শতাব্দীর যাবতীয় রেকর্ডকে ছাপিয়ে গিয়েছে সেই তাপপ্রবাহ। এর পিছনে সরাসরি জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন গবেষকেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, জলবায়ুগত বিপর্যয়ে যে-ভাবে প্রাণহানি ও সম্পত্তির ক্ষতি হচ্ছে, তা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও চিন্তার কারণ। পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানবসভ্যতার জন্য অপেক্ষা করছে মহাপ্রলয়ের মতো বিপর্যয়। রাষ্ট্রসঙ্ঘ নিয়োজিত ‘ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’ (আইপিসিসি)-এর বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশ্ব উষ্ণায়ন ছিল শুধুই বিপদের আগাম পূর্বাভাস। এবার সরাসরি তার ফল ভুগতে শুরু করেছে মানবগ্রহ। শিল্প বিপ্লবের (১৭৫০-১৮৫০) পর থেকে এই প্রথম পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়েছে ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। হ্রাসের পরিবর্তে বেড়েই চলেছে গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমণ। তার জেরে অ্যান্টার্কটিকা আর গ্রিনল্যান্ডে বরফ গলার হার আরও বাড়ছে। আরও উষ্ণ হচ্ছে পৃথিবী। অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিলে ২০৩০-এর মধ্যে এই তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। এই কারণেই ভয়ঙ্কর এবং অভূতপূর্ব উদ্বেগের কথা উল্লেখ করেছেন বিজ্ঞানীরা। পৃথিবীর তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি বেড়ে গেলে কী কী হতে পারে, তার ইঙ্গিত দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। অ্যান্টার্কটিকা ও গ্রিনল্যান্ডে আরও দ্রুত গলবে বরফ। দক্ষিণ গোলার্ধে উষ্ণতা বাড়লে তার প্রভাব পড়বে গোটা বিশ্বেই। পাহাড়প্রমাণ হিমশৈল তথা বরফের চাঁই গলে সমুদ্রের জলে মিশবে। আয়তন বাড়বে জলভাগের। ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাবে বাস্তুতন্ত্র। নিউ ইয়র্ক, লন্ডন, মুম্বই জলে তলিয়ে যাবে।
অথচ, কে না জানে, কার্বন ডাই অক্সাইড তৈরি করছে শিল্পোন্নত দেশগুলোই। কয়লা, ডিজেল, গ্যাস অর্থাৎ জীবাশ্ম জ্বালানি যত ব্যবহার করা হচ্ছে, ততই মিথেন তৈরির পরিমাণ বাড়ছে। সুতরাং কার্বন-ডাই-অক্সাইড প্রতিরোধের জন্য এবং আবহাওয়ার বিপর্যয় ঠেকাতে গরিব দেশগুলোকে সাহায্য করার জন্য একটা তহবিল তৈরির কথা হয়েছিল। এই ফান্ডে অনুদান হিসেবে ধনীদেশগুলোর টাকা দেওয়ার কথা ছিল। অনুদান যে দিচ্ছে না তা নয়, কিন্তু পরিমাণ সামান্যই। তাহলে পৃথিবীকে রক্ষা করবে কারা? পৃথিবীটাই না-বাঁচলে, ঘটা করে রাষ্ট্রসঙ্ঘের জলবায়ু সম্মেলন করে লাভ কী? নানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গোটা দুনিয়া তাকিয়ে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদের দিকে। হয়তো ২-১৩ ডিসেম্বর ধরিত্রী বাঁচানোর শেষ সুযোগ পাবেন বিশ্বনেতারা!