কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। সরকারি ক্ষেত্রে কর্মলাভের সম্ভাবনা। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় মানসিক অস্থিরতা থাকবে। ... বিশদ
গঙ্গারামপুর শহরের চিত্তরঞ্জন মার্কেট, কালদিঘি কিষাণমাণ্ডিতে পেঁয়াজের আড়ত রয়েছে। সারাদিন বস্তা বস্তা পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রি করার পর আড়তদারদের কেউ কেউ রাতে দোকানেই ঘুমাচ্ছেন। কেউ আবার নিজে দোকানে রাতে থাকতে না পারলেও নিরাপত্তার জন্য পাহারাদার রেখেছেন। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় পেঁয়াজ চুরির ঘটনা এখনও সামনে আসেনি। তবে ভিন জেলা থেকে পেঁয়াজের গাড়ি এসে আড়তে নামার পর আর ভরসা রাখতে পারছেন না গঙ্গারামপুরের পেঁয়াজ ব্যাবসায়ীরা। বর্তমানে পেঁয়াজের যে হারে দাম চড়েছে, তাই তাঁরা বাধ্য হয়েই সোনার গয়না রক্ষা করার মতো পেঁয়াজ পাহারা দিচ্ছেন রাতে। জানালেন ব্যবসায়ীরা।
পুলিস প্রশাসনের তরফে গঙ্গারামপুর শহরের চৌপথীতে রাতে সিভিক ভলেন্টিয়ার ও পুলিসের টহলদারি থাকলেও ব্যবসায়ীরা নিজেরাই নিজেদের সামগ্রী পাহারায় উদ্যোগ নিয়েছেন। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজের দাম চড়েছে কেজি প্রতি ১২০-১৩০ টাকা। পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রায় ১০০ টাকা করে কেজি দরে। দক্ষিণবঙ্গে পেঁয়াজ চুরির ঘটনা ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে। তারপরেই এজেলার পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরাও নিজেদের পেঁয়াজের নিরাপত্তা বাড়িয়েছেন।
গঙ্গারামপুরের পাইকারি পেঁয়াজ ব্যাবসায়ী আনন্দ তামিল বলেন, দোকানে নিরাপত্তা রক্ষী রাখতে হয়েছে, এমনটা এই প্রথম। এবারে পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে গিয়েছে। আমার আড়তে অনেক টাকার পেঁয়াজ রাখতে হয়। রাতে নাসিক ও বিহার থেকে পেঁয়াজের গাড়ি আসে। সেই মাল আড়তে রাখার পর স্বাভাবিকভাবেই দুশ্চিন্তা দেখা দেয়। তাই দোকানে এখন পাহারাদার রেখেছি। মাঝে মাঝে নিজে এসেও রাতে থাকছি। একবস্তা পেঁয়াজের পাইকারি দাম পাঁচহাজার টাকা। প্রতিদিন গঙ্গারামপুর, বুনিয়াদপুর শহর ও গ্রামগঞ্জের সব্জি বিক্রেতারা পেঁয়াজ কিনতে আসেন আড়তে। জেলার বাজারের চাহিদার কথা মাথায় রেখে পেঁয়াজ বিপুল পরিমাণে মজুদ রাখতে হয়। অনেক টাকার পেঁয়াজ দোকানে থাকায় বাড়তি নিরাপত্তা দিতে হচ্ছে।
গঙ্গারামপুরের পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী বৈদ্যনাথ পাল বলেন, আমাদের গঙ্গারামপুর চিত্তরঞ্জন মার্কেটে পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী রয়েছেন প্রায় ১৫ জন। আমাদের মধ্যে অনেকেই এখন দোকানে থাকছেন রাতে। পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে অনেকে আলাদা করে নিরাপত্তারক্ষী রেখেছেন। আমার ছোট আড়ত। রাতে দোকানের পেঁয়াজ পাহারা দেওয়ার জন্য আমরা কয়েকজন আড়তদার একসঙ্গে মিলে নিরাপত্তারক্ষী বহাল করেছি। পেঁয়াজের দাম অত্যাধিক বেড়ে যাওয়ার কারণে বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। এর আগে কখনও এরকম ব্যবস্থা নিতে হয়নি। বর্তমানে আমরা পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করছি ১০০ টাকা কেজি দরে। খুচরো বিক্রেতারা তাঁদের লাভ ধরে রেখে বিক্রি করছেন ১২০ টাকা কেজি করে।
গঙ্গারামপুর শহরের বাসিন্দা মৌসুমী মহন্ত বলেন, পেঁয়াজের দাম যে হারে বেড়ে চলেছে, তাতে আমরা খুব সমস্যায় পড়েছি। বাঙালিদের বেশিরভাগ রান্নায় তো পেঁয়াজ লাগেই। তাই বাধ্য হয়ে চড়া দাম দিয়েও পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে। পেঁয়াজ কম খাওয়ার চেষ্টা করলেও লাভ হচ্ছে না। যেভাবে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে তাতে এবারে মনে হয় পেঁয়াজ ছাড়াই সব তরকারি খেতে হবে। সরকারিভাবে শহরের বাজারে পেঁয়াজের দামের উপর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। বিভিন্ন দোকানে দামের তারতম্য রয়েছে। কোথাও ১১৫ টাকা, কোথাও ১২০ টাকা আবার কোথাও ১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ।