বোকারো ও হাজারিবাগ (ঝাড়খণ্ড), ৯ ডিসেম্বর (পিটিআই): তৃতীয় দফা ভোটের আগে ঝাড়খণ্ডে জমে উঠেছে প্রচার। সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পাশাপাশি কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীও সভা করেন। এদিন প্রচারে এসে কংগ্রেস ও তার জোট সঙ্গীদের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন মোদি। বোকারো কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী বি নারায়ণের সমর্থনে একটি নির্বাচনী সভায় তিনি বলেন, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট ক্ষমতায় এলে রাজ্যকে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দেবে। অন্ধকারে ডুবে যাবে গোটা রাজ্য। কংগ্রেস-জেএমএম-আরজেডি জোট সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করে মোদি বলেন, রাজ্যবাসীকে একমাত্র বিজেপিই স্থায়ী সরকার দিতে পারে। রাজ্যে বিজেপি সরকার আসার পর দুর্নীতির মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে। মোদির অভিযোগ, বাড়ি নির্মাণ, রেশন কার্ড, গ্যাস সংযোগ ও পেনশনের মতো সরকারের বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্প পাইয়ে দেওয়ার নামে মিডলম্যান হয়ে কাজ করত কংগ্রেস ও আরজেডি। কিন্তু ২০১৪ সালে রঘুবর দাস মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর পরিস্থিতি পাল্টেছে। ভেঙে ফেলা হয়েছে দুর্নীতির নেটওয়ার্ক। ২০০৬ থেকে ২০০৮ সালের মধুকোড়া সরকারকে কংগ্রেস ও আরজেডি সমর্থন করেছিল। কিন্তু পরে দেখা গেল কয়লা কেলেঙ্কারিতে দোষী সাব্যস্ত হয়ে মধু কোড়াকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে অর্থ তছরুপের মামলা দায়ের করেছে ইডি। আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন মামলাতেও মধু কোড়ার বিরুদ্ধে মামলা করেছে রাজ্যের দুর্নীতি দমন শাখা। মোদির কথায়, রাজ্যবাসীকে শুধু স্থায়ী সরকার নয়, মানুষের চাহিদা ও দাবি পূরণ একমাত্র বিজেপি সরকারই করতে পারবে। পাশাপাশি কর্ণাটকে উপনির্বাচনে বিজেপির জয় নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন মোদি। তিনি বলেন, কর্ণাটকে কংগ্রেস মানুষের রায় ‘চুরি’ করে পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিল। কিন্তু উপনির্বাচনে তারা শিক্ষা পেয়ে গিয়েছে। উপনির্বাচনের রায় থেকে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে যে, মানুষ কংগ্রেসের উপর আস্থা রাখতে পারেনি।
এদিকে প্রচারে এসে বিজেপিকে একহাত নিলেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী। পাশাপাশি দিলেন একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতিও। এদিন হাজারিবাগ জেলার বড়কাগাঁওয়ে এক নির্বাচনী সভায় কংগ্রেস সাংসদ অভিযোগ করেন, রাজ্যের মানুষের জমি জোর কেড়ে নিচ্ছে বিজেপি। কংগ্রেস-জেএমএম-আরজেডি জোট ক্ষমতায় এলে এই অবস্থার পরিবর্তন হবে। ঝাড়খণ্ডবাসীর জল, জঙ্গল ও জমির অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হবে। পাশাপাশি কৃষকদের ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ মকুব করে দেওয়া হবে। যাঁদের জমি জোর করে কেড়ে নেওয়া হয়েছে তাঁদের জমি ফিরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিপূরণও দেওয়া হবে। তাঁর আরও প্রতিশ্রুতি, রাজ্যের চাষিদের থেকে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য আড়াই হাজার টাকা দরে ধান কেনা হবে। রাহুল বলেন, ‘ছত্তিশগড় সরকার ইতিমধ্যে কৃষকদের থেকে ওই মূল্যে ধান কেনার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে। এবারের নির্বাচনে জোট সরকার ক্ষমতায় এলে ঝাড়খণ্ডের কৃষকরাও একই সুবিধা পাবেন।’