কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। সরকারি ক্ষেত্রে কর্মলাভের সম্ভাবনা। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় মানসিক অস্থিরতা থাকবে। ... বিশদ
কীভাবে গ্রেপ্তার হল সিলভিউ? এটিএম জালিয়াতির এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই লালবাজারের গোয়েন্দারা একাধিক টিমে ভাগ হয়ে দিল্লি রওনা হন। দিল্লিতে যে সব এটিএম থেকে টাকা তোলা হয়েছে, তার আশপাশে নজরদারি চালাচ্ছিলেন তাঁরা। ৩ ডিসেম্বরের পর থেকে হঠাৎই টাকা তোলা বন্ধ হয়ে যায়। এদিন ভোর ৫টা নাগাদ, দিল্লির সফদরজং এলাকায় হঠাৎ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার এটিএমে ঢোকে সিলভিউ। তখন এটিএমের বাইরে লালবাজারের গোয়েন্দাদের একটি দল। কেউ তার উপর নজরদারি চালাচ্ছেন, তা বুঝেই এটিএম থেকে বেরিয়ে সিলভিউ দৌড়ে পালাতে যায়।
পিছনে দৌড়তে শুরু করেন গোয়েন্দারাও। এরপর সিলিভিউ সটান একটি অটোতে চেপে বসে। গোয়েন্দাদের দলটিও অন্য একটি অটো নিয়ে তাড়া করে। সিলভিউয়ের অটো প্রায় পাঁচ কিমি যাওয়ার পর দিল্লির গ্রেটার কৈলাসের এক লেনে ঢুকে উধাও হয়ে যায়। ‘শিকার’ এত কাছে থাকা সত্ত্বেও হাত ফসকে যাওয়ায় কার্যত মুষড়ে পড়েন গোয়েন্দারা। এরপর তাঁরা ওই এলাকার প্রতিটি ফ্ল্যাটের দরজায় ‘নক’ করতে শুরু করেন। এভাবেই ফ্ল্যাট ধরে ধরে চলে তল্লাশি। বিকেল ৩টে নাগাদ, ই-২৪৭ নম্বর ফ্ল্যাট থেকে পাওয়া যায় সিলভিউকে।
ধৃতকে আজ মঙ্গলবার কলকাতায় আনার কথা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, বছর আটাশের সিলিভিউ পেশায় রোমানিয়ার একটি বিমান সংস্থার ক্রু মেম্বার। এই গ্যাং টুরিস্ট ভিসা নিয়ে এদেশে এসেছে। তারা দিল্লির গ্রেটার কৈলাস এলাকার ওই ফ্ল্যাটেই উঠেছে। ওই ফ্ল্যাট থেকে স্কিমিং মেশিন, ম্যাগনেটিক চিপ, ব্যাটারি, পিনহোল ক্যামেরা, ইত্যাদি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ধৃত সিলভিউ বিলাসবহুল জীবনযাপন করত। তার ফ্ল্যাট থেকে ২৪টি বিভিন্ন রঙের টুপি, একাধিক চশমার সেট, মাস্ক, অত্যাধুনিক আইফোন, ল্যাপটপ মিলেছে। গোয়েন্দাদের অনুমান, এটিএম থেকে টাকা তোলার সময় এই চশমার সেট, টুপি ও মাস্ক ব্যবহার করা হতো।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, চলতি বছরের ২০ মার্চ, ১৯ জুলাই এবং ১৪ অক্টোবর অর্থাৎ তিনবার রোমানিয়ানদের এই গ্যাং দিল্লিতে আসে। প্রতিবারই তারা মাসখানেক এদেশে কাটিয়ে ফিরে যায় নিজের দেশে। এভাবে গত তিন-চার মাসে ২৫০ জন রোমানিয়ান বিভিন্ন সময়ে দিল্লিতে এসেছে। এই ২৫০ জনের মধ্যে থেকে জালিয়াতি কাণ্ডে অভিযুক্তদের খুঁজে বের করতে হয়েছে গোয়েন্দাদের। তাই এই গ্যাংকে গ্রেপ্তার করতে কিছুটা হলেও সময় লেগেছে লালবাজারের। তবে কলকাতা পুলিসের গোয়েন্দাদের এই দক্ষতায় খুশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তবে শুধু কলকাতা নয়। দিল্লিতেও ৩ থেকে ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে ২০০ গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফাঁকা করে দিয়েছে এই রোমানিয়ান গ্যাং। ৩০ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর কলকাতার মোট ৭০ জনের অ্যাকাউন্ট থেকে মোট ১৪ লক্ষ ৫ হাজার টাকা গায়েব হয়েছে।