কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। সরকারি ক্ষেত্রে কর্মলাভের সম্ভাবনা। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় মানসিক অস্থিরতা থাকবে। ... বিশদ
একথা যদি আমরা ক্ষণেকের তরেও ভুলি যে শত সহস্র বার ধ্যান-জপের উৎসাহ দিয়াছেন ‘সঙ্ঘগীতাতে’, ‘প্রণবানন্দ লীলা-প্রসঙ্গে’, ‘প্রণবানন্দ-স্মৃতি-কথায়’, তবে নিঃসন্দেহে অপঘাতীর অপকীর্ত্তি লাভ করিব। ধ্যান-জপের সামর্থ্য ও আগ্রহ নাই, সে কথা আলাদা। কিন্তু, ধ্যান-জপ না করার অজুহাতটা তাঁহার স্কন্ধে চাপাইয়া দিয়া নিজেদের অনন্ত নরকের পথ যেন আমরা পরিষ্কার না করি। সে যাক্, ধ্যান-জপের আধা-ইচ্ছা ও অসমর্থতা ব্যক্তিগত ভাবে আমাকে বড় ব্যথিত করিয়া তোলে। জীবনসন্ধ্যায় এ বিষয় আর কিছুই করা যাইবে না। যুবক সাধক, সময় থাকিতে সতর্ক হও!
গয়ার পাণ্ডাদের সহিত সঙ্ঘর্ষ
আশ্রমের কাজ—ষ্টেশনে ও বিষ্ণুপাদ মন্দিরে ডিউটি দেওয়া, এবং যথা প্রয়োজনে যাত্রীর সাথে পাণ্ডার বাড়ীতে যাওয়া এবং চাঁদা আদায় করাও পাক করা।আশ্রমে আছে স্বা..., ক্ষিতীশ, ধীরেন্দ্র, সুবোধ, অনন্ত, দৈব, তারিণী প্রভৃতি কর্মীরা এবং জগদ্ধন্ধু পরামাণিক (নিহত সরোজিনীর দেবর)। চাঁদা আদায় ছাড়া অন্য সব কাজগুলি সকলেই ভাগাভাগী করিয়া করে। সব চাইতে বিপজ্জনক কাজ ছিল, ‘ছিল’ বলি কেন, এখনও আছে, ষ্টেশনে যাওয়া। কারণ, বিরোধী দলের মুখোমুখী হইয়া ওখানে ডিউটি দিতে হয়। এক দিনকার কথা বলি। লম্বা বড় ব্যাজ পরিয়া বিকাল ২টার সময় নিয়মিত ডিউটি দিতে আসিয়াছি। কোন একটি যাত্রী আশ্রমে আসিবে বলিয়া পত্র দেয়। ষ্টেশন বিল্ডিং এর সামনে বড় খোলা জায়গাটায় দাঁড়াইয়া কখন গাড়ী আসিবে, কখন যাত্রী আসিবে—এই অপেক্ষায় আছি। এই খোলা জায়গাটাতেই সকলে জটলা করিয়া দাঁড়াইয়া থাকে—মাল বহিবার কুলিরা, পাণ্ডার লোকেরা, গাড়ীর গাড়োয়ানরা, আশ্রমের কর্মীরা। সে দিন ছিলাম আমি একা। আমাকে নূতন, অল্পবয়স্ক ও একা দেখিয়াই বোধ হয় ওদের গলা সুর্সুর্ করিতে লাগিল। পেছন হইতে অশ্রাব্য কুশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ দিতেছে। মরা মানুষেরও রক্ত গরম হয়। উপায় নাই। কিন্তু, উহারা অসম্ভব হইয়া উঠিল যখন নির্দিষ্ট যাত্রীটি পৌঁছিল। কোন প্রকারে যাত্রীসহ আশ্রমে পৌঁছিলাম। সে যাহাই হোক্, উহাদের ভীতিপ্রদর্শনে মনে কোন ভয়ের সঞ্চার হইল না কিন্তু। আজ না হয় আমাদের অত দালান-কোঠা, প্রভাব-প্রতিপত্তি, লোকজন, টাকা-পয়সা। তখন ত ১০ টাকা ভাড়ার ছোট একটি বাড়ী। বিদেশে বিঘাটে নূতন আশ্রম। তথাপি নির্ভীক চিত্তে সেবকরা দিন রাত্রের যে কোন সময়ে ষ্টেশনে ডিউটি দিতে আসে—তখনকার দিনের অন্ধকারের রাস্তা দিয়া, দুর্দ্ধর্ষলোকেদের থাকিবার বাসাগুলির পাশ দিয়া—রাত্রি ৩টায় বোম্বে মেলের সময়েও। ভয়-ভীতির নাম নাই।