বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
গত ৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়েছে এবারের বাণিজ্য সম্মেলন। বিনিয়োগ প্রস্তাবের অঙ্ক পৌঁছেছে ২ লক্ষ ৮৪ হাজার ২৮৮ কোটি টাকায়। অন্যান্য বছর জানুয়ারি মাসকেই রাজ্য সরকার বাণিজ্য সম্মেলনের জন্য বেছে নিলেও, এবার তার আয়োজন ছিল ফেব্রুয়ারিতে। কিন্তু আগামী বছর শিল্পসভার আয়োজন কবে হবে, এবছর তা ঘোষণা করা হয়নি। অন্যান্য বছর সম্মেলনের শেষ দিনেই পরের বাণিজ্য সম্মেলনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এবার তা তিনি তা না করায় জল্পনা শুরু হয়েছিল তখনই। প্রতিবার মুখ্যমন্ত্রীর তরফে আগামী সম্মেলনের দিন ঘোষণার পর তা বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের নিজস্ব ওয়েবসাইটে ঘোষণা করা হয়। সেই মতো রেজিস্ট্রেশনের দরজাও খুলে দেওয়া হয় অনলাইনে। কিন্তু এবার নির্ঘণ্ট ঘোষণা না করেই রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পাওয়ার ক্ষেত্রে সেই রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি চালু ছিল এত দিন। বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরই তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট রাজ্যের শো-কেস উৎসব, যার মাধ্যমে নিজেদের ইন্ডাস্ট্রি-ব্র্যান্ডিং করে সরকার। এখন কম-বেশি প্রায় সব রাজ্যই এইভাবে নিজেদের শিল্প সম্ভাবনাকে সামনে আনতে চাইছে। কিন্তু প্রতি বছর সম্মেলন করার তাগিদ নেই প্রায় কারও। এমনকী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন নরেন্দ্র মোদি যে ‘ভাইব্রান্ট গুজরাত’-এর আয়োজন করে সবার নজর কেড়েছিলেন, সেই শিল্প সম্মেলনও প্রতি বছর হয় না। এক বছর অন্তর তার অয়োজন করে পশ্চিমের রাজ্যটি। লগ্নি বাস্তবায়িত করার জন্যই ওই সময়টুকু দেওয়া হয়, বলছে শিল্পমহল। বুধবার বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সেই প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি দাবি করেন, বিগত বছরগুলিতে শিল্প সম্মেলন থেকে ১৩ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে। কিন্তু প্রতি বছর যে প্রস্তাব আসে, তা বাস্তবায়নের জন্য এক বছর সময় যথেষ্ট নয়। তাই বাণিজ্য সম্মেলন হবে দু’বছর অন্তর। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর এই সাফাইকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, বছর বছর ঘটা করে সম্মেলন করে কোনও শিল্পই আনতে পারেনি রাজ্য সরকার। তাই সেই রাস্তা থেকে পিছু হটছে তারা।
যদিও সম্মেলন এবং বিনিয়োগকে সবসময় একই আসনে বসাতে নারাজ শিল্পমহলের একাংশ। তাদের বক্তব্য, কতট বিনিয়োগ বাস্তবায়িত হল, সেটি যেমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তেমনই রাজ্য সরকার নিজেদের তরফে কী কী পরিকাঠামো গড়ল বা কোন কোন বিষয়ে প্রশাসনিক উদ্যোগ নিল, সেটাও কম গুরুত্বের নয়। জমি, বিদ্যুৎ, জল, শ্রমিক যেমন শিল্পের জন্য অপরিহার্য, তেমনই সরকারি আন্তরিকতাও জরুরি। যেখানে রাজ্য সরকার নিরন্তরভাবে শিল্পের গা থেকে প্রশাসনিক জটিলতার ফাঁস আলগা করার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে, শিল্পপতিদের কাছে সেই বার্তাটুকু নিয়ম করে পৌঁছে দেওয়াটাও জরুরি।