খরচের চাপ এত বেশি থাকবে সে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। কর্মক্ষেত্রে নানান সমস্যা দেখা ... বিশদ
কৃশানু দে’র স্ত্রী পনি বলছিলেন, ‘পরলোকে প্রদীপদা নিশ্চয়ই খুঁজে নেবেন তাঁর আদরের রন্টুকে। আড্ডা হবে অনেকক্ষণ। আর সেখানে ও অভিমানের কথা বলবেই বলবে। ১৯৮৫ সালে লিগে মহমেডান স্পোর্টিংয়ের ওকে প্রথম একাদশে রাখেননি প্রদীপদা। অভিমানে জ্বরের অজুহাতে ট্যাবলেট খেয়েছিল রন্টু। যাতে পরে কোচ ওকে না নামাতে পারেন। কিন্তু তা হয়নি। ও নেমেই ইস্ট বেঙ্গলকে জিতিয়েছিল।’
ঠিক কী ঘটেছিল সেদিন? কৃশানুর হরিহর আত্মা বিকাশ পাঁজি বলছিলেন, ‘কৃশানু সেবার ইস্ট বেঙ্গলে প্রথম এসেছে। লিগের ম্যাচে মুখোমুখি মহমেডান স্পোর্টিং ও ইস্ট বেঙ্গল। কোচ পিকে ব্যানার্জি প্রথম দলে রাখেননি রন্টুকে। প্রথম একাদশ দেখে কেঁদে ফেলে ও। যাই হোক, ম্যাচ শুরু হয়। চিমা ওকেরির গোলে লিড নেয় মহমেডান। বিরতির বেশ কিছুক্ষণ পরে কৃশানুকে নামান প্রদীপদা। রন্টু নেমেই পাসের আগুন ছড়াতে শুরু করে। ওর সেন্টার থেকে আমার লক্ষ্যভেদ ইস্ট বেঙ্গলকে সমতায় ফেরায়। দ্বিতীয় গোলের নেপথ্যেও আমার প্রিয় বন্ধুর অবদান ছিল। রন্টুর শট বিপক্ষ গোলরক্ষক অতনু ভট্টাচার্যের হাত ফসকে বেরিয়ে এলে তা গোলে ঠেলে দেয় দেবাশিস রায়। মাত্র ১৭ মিনিট খেলে দলকে জয়ের পথ দেখিয়ে গটগট করে মাঠ থেকে বেরিয়ে যায় রন্টু। কোচ পিকে ব্যানার্জি বোধহয় সেরা পারফরম্যান্স বের করে নেওয়ার জন্যই রন্টুকে প্রথম একাদশে রাখেননি। আসলে রন্টুর সফট ফুটবল প্রদীপদা প্রথম দিকে পছন্দ করতেন না। তাই বেশি পরিশ্রম করতে বলতেন। আর রন্টু বারবার বলতে, আমি ইঞ্জিনিয়ার, বাকিরা লেবার। পরে অবশ্য ও অনেক পরিশ্রম করত। সেদিন বন্ধুর মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ক্ষোভ প্রদীপদা বুঝতে পেরেছিলেন। তাই এই ব্যাপারে পরে আর ওকে কিছু বলেননি। কৃশানুরও কোনও অভিযোগ ছিল না। ছিল একরাশ অভিমান। যা প্রদীপদার কাছে ও কোনওদিন প্রকাশ করেনি।’
পিকের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ কৃশানু দে’র স্ত্রী পনি বলছিলেন, ‘লিগের ওই স্মরণীয় ম্যাচে ইস্ট বেঙ্গলকে জেতানোর পর রন্টুর একটা কথা এখনও কানে বাজে। বলেছিল, দলকে জেতানোর পর সমর্থকরা আমাকে বলে কিনা, আপনি আমাদের শরীরের উপর দিয়ে হেঁটে বাইরে যান।’