সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
সর্বশিক্ষা মিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমান ও পশ্চিম বর্ধমান জেলায় সর্বশিক্ষা মিশনের ৫৯টি সার্কেল রয়েছে। এর মধ্যে পূর্ব বর্ধমান জেলায় রয়েছে ৪৪টি সার্কেল এবং ১৫টি সার্কেল রয়েছে পশ্চিম বর্ধমান জেলায়। ২০১৮-এর জেলাস্তরের ‘নির্মল বিদ্যালয়’ পুরস্কার দেওয়ার জন্য প্রতি সার্কেল থেকে দু’টি হাইস্কুল এবং দু’টি প্রাইমারি স্কুলের নাম চাওয়া হয়েছিল। জেলা থেকে প্রতি সার্কেলের একটি হাইস্কুল এবং একটি প্রাইমারি স্কুলকে পুরস্কার দেওয়ার জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে। শুধুমাত্র কালনা পূর্ব সার্কেলে কেলবমাত্র একটি প্রাইমারি স্কুল রয়েছে। ওই সার্কেলে কোনও হাইস্কুল পুরস্কার পাচ্ছে না।
সর্বশিক্ষা মিশন ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্মল বিদ্যালয় পুরস্কার পাওয়ার জন্য অনেক বিষয় রয়েছে। যেমন, শিশু অধিকার সম্পর্কে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের অবগত করা। স্কুল ক্যাম্পাস পরিস্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখা, ক্লাসরুম পরিচ্ছন্ন রাখা, টয়লেট পরিচ্ছন্ন রাখা, রান্নাঘর পরিচ্ছন্ন রাখা, স্কুল ক্যাম্পাসের ৫০ মিটার পর্যন্ত পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। স্কুল ক্যাম্পাসে আবর্জনা জড়ো না করা, স্কুলে পৃথক ডিসপোজাল ইউনিট রাখা, সলিড ওয়েস্ট আলাদা করার কাজে ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণ করানো, রি-সাইকেলিং এর ব্যবস্থা করা, ৮০ জন ছাত্রীপিছু একটি টয়লেট এবং ৮০ জন ছাত্রপিছু একটি করে টয়লেট থাকতে হবে। স্কুলের ক্যাম্পাসে পরিস্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা থাকতে হবে। গত ১২ মাসের জল পরীক্ষার রিপোর্টও থাকতে হবে। পানীয় জলের জায়গায় যেন কোনওমতেই না জল জমে। সু-স্বাস্থ্যের জন্য স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের ভালো করে হ্যান্ড ওয়াশের ব্যবস্থা করা। তার জন্য বেসিন ও সাবান থাকতে হবে। ছোটদের হাত ধোওয়ার সাবানও রাখতে হবে। এটা নজরদারিও চালাতে হবে। এছাড়া, জল ধরো জল ভরো, ছাত্রীদের কতজনের বাড়িতে শৌচালয় রয়েছে, বাড়ির স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতন করা, বৃক্ষরোপণ, মিড ডে মিল মেনুর উপযোগী সব্জি বাগান, মক ড্রিল, স্কুলে জরুরী নম্বর লিখে রাখা প্রভৃতি একগুচ্ছ বিষয় দেখা হয়। মোট ১০০ নম্বরে উপরেই পুরস্কার চূড়ান্ত হয়।
স্কুলের হাতে নির্মল বিদ্যালয় পুরস্কার তুলে দেওয়ার জন্য বর্ধমান শহরের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে সর্বশিক্ষা মিশনের তরফে বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ওই অনুষ্ঠান থেকে পুরস্কার গ্রহণ করার জন্য ওই ১১৭টি হাইস্কুল ও প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং স্কুলের সমস্ত সহকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে স্কুলের ‘চাইল্ড ক্যাবিনেটে’র পাঁচজন মন্ত্রীকেও উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। ওই অনুষ্ঠানে পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক, জেলা পরিষদের সভাধিপতি, অতিরিক্ত জেলাশাসক (শিক্ষা), সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক সহ অনেকেই উপস্থিত থাকবেন। এক আধিকারিক বলেন, আগে জেলাস্তরের নির্মল বিদ্যালয় পুরস্কারে পুরস্কার মূল্য, শংসাপত্র এবং মেমেন্টো দেওয়া হত। এবার চারাগাছকে যুক্ত করা হয়েছে। যেহেতু নির্মল বিদ্যালয়ের পুরস্কার তাই প্রতিটি স্কুলকে একটি করে নতুন চারাগাছও দেওয়া হবে।
সর্বশিক্ষা মিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছুদিন আগেই পূর্ব বর্ধমান ও পশ্চিম বর্ধমান এই দুই জেলায় নির্মল বিদ্যালয় সপ্তাহ পালন করা হয়েছিল। হাইস্কুল ও প্রাইমারি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে বসে আঁকো প্রতিযোগিতাও হয়েছিল। সেখানে আটটি দল জেলায় উঠেছে। প্রতিটি দলে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানাধিকারী রয়েছে। অর্থাৎ ২৪ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। নির্মল বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠান থেকে ওই ২৪ জনকেও পুরস্কৃত করা হবে। আটজন প্রথম স্থানাধিকারীদের তিন হাজার, আটজন দ্বিতীয় স্থানাধিকারীদের দু’ হাজার এবং আটজন তৃতীয় স্থানাধিকারীকে এক হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক মৌলী সান্যাল বলেন, সংস্কৃতি লোকমঞ্চ থেকেই দুই জেলার ১১৭টি স্কুলকে জেলাস্তরের নির্মল বিদ্যালয় পুরস্কার দেওয়া হবে।