সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
পুলিস জানিয়েছে, মৃতদের নাম রূপমালা বিশ্বাস(৩৪), অর্পণ বিশ্বাস(৪), আলপনা বিশ্বাস(৩৫)। রূপমালাদেবীর ছেলে অর্পণ। আলপনা তাঁদের আত্মীয়। বাংলাদেশ থেকে তিনি এসেছিলেন। রূপমালাদেবীর মেয়ে মাম্পি বিশ্বাসও ঘটনায় জখম হয়েছেন। ঘটনায় আরও কয়েকজন কমবেশি জখম হয়েছেন। তাঁরা শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ভূতপাড়া আদিবাসী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনেই ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রাতে পাড়ার একজনের বাড়ি থেকে মনসা পুজোর প্রসাদ খেয়ে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা। রাস্তার ধার দিয়ে তাঁরা যাচ্ছিলেন। আচমকা একটি চার চাকার গাড়ি এসে তাঁদের ধাক্কা মারে। রূপমালাদেবী ও অর্পণ ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন। সেখানেই তাঁদের মৃত্যু হয়। আলপনাদেবীকে প্রথমে শক্তিনগর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
দুর্ঘটনার পর গাড়িটি উল্টে যায়। গাড়িটি হাঁসখালির দিক থেকে কৃষ্ণনগরের দিকে আসছিল। কিন্তু ঘটনার পর গাড়িতে কাউকে পাওয়া যায়নি। কেউ জখম হয়েছিল কী না তা এখনও জানতে পারেনি পুলিস। পুলিস গাড়িটি আটক করেছে। তবে স্থানীয়দের দাবি, ওই গাড়ি এর আগে চিত্রশালী গ্রামেও কয়েকজনকে ধাক্কা মেরে এসেছে। সেখান থেকে পালাতে গিয়েই অত্যন্ত দ্রুতগতিতে গাড়িটি ছুটছিল। সে কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে। তাছাড়া, চালক মদ্যপ অবস্থায় ছিল। জেলা পুলিসের এক কর্তা বলেন, গাড়িটি আটক করা হয়েছে। গাড়ির মালিকের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। ঠিক কী হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এলাকাবাসীরা পথ অবরোধ করে। পরে তাঁদের দাবি মেনে, হাম্প তৈরির কাজ এদিনই শুরু হয়।
এলাকাবাসী অরবিন্দ বাগচি বলেন, গাড়িটা চিত্রশালীর কাছেও কাউকে ধাক্কা মেরেছে। এরপর এখান দিয়ে দ্রুতগতিতে গাড়িটা যাচ্ছিল। এখানে গাড়িটা আমাদের পাড়ার কয়েকজনকে ধাক্কা মারে। তিনজন মারা যায়। এতটাই জোরে ধাক্কা মেরেছিল যে প্রথমে ওদের আমরা খুঁজেই পাইনি। অনেকটাই দূরে জল কাদার মধ্যে ওরা পড়ে গিয়েছিল। আমরা রাস্তা অবরোধ করতে বাধ্য হয়েছি। রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিসের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। আর এক বাসিন্দা বিপুল মণ্ডল বলেন, গাড়িটা খুবই বেপরোয়াভাবে আসছিল। সেজন্য এই ঘটনা ঘটল। গাড়ির ভিতর থেকে মদও পাওয়া গিয়েছে। যাদের জন্য গ্রামের তিনটে মানুষের এমন মর্মান্তিক মৃত্যু হল তাদের কড়া শাস্তি চাই। এই ঘটনা আমরা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না।
মৃতা রূপমালার দাদা নীহার বিশ্বাস বলেন, কী আর বলব! বোন আর ভাগ্নেকে আমি হারিয়েছি। আরও একজন যে মারা গিয়েছে, সেও আমার আত্মীয়। গাড়িতে যারা ছিল, তারা মদ্যপ অবস্থায় ছিল। চালকও মদ্যপ অবস্থায় ছিল, সে কারণেই এই ঘটনা। ঘটনার পর রূপমালাদেবীর স্বামী অসিত বিশ্বাস কার্যত বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছেন। বিকালে গ্রামে মৃত দেহগুলি আসতেই গোটা গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে। খুদে অর্পণের খেলার সঙ্গীরা এদিন মাঠে বন্ধুকে এভাবে দেখবে ভাবতেই পারেনি। তাদের সামলাতে গিয়ে অভিভাবকদের বেশ বেগ পেতে হয়। এদিকে, হাঁসখালি থানার পুলিস জানিয়েছে, চিত্রশালীতে ওই গাড়িটা কাউকে জখম করেছিল বলে জানা নেই। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার পর গোটা জেলাজুড়েই যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণের দাবি উঠেছে।