সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
এবিষয়ে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিস আধিকারিক বলেন, অষ্টমঙ্গলার সময়েই নববধূকে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। সেই আক্রোশ খুনের প্রধান কারণ বলে আমরা জানতে পেরেছি। ব্যক্তিগত শত্রুতারও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। মালদহ থানার আইসি শান্তিনাথ পাঁজা বলেন, মৃতের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছি। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।
ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূল কংগ্রেসের বশিষ্ঠ ত্রিবেদী বলেন, যে কোনও মৃত্যুই দুঃখের। তবে ওই ব্যক্তিকে নিয়ে এলাকাবাসীরা অতিষ্ঠ ছিলেন। এই খুনের ঘটনায় তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। পুলিসকে সব রকম সহযোগিতা করেছি।
সোমবার সন্ধ্যায় পুরাতন মালদহের শহরের শর্বরী এলাকায় নিজের বাড়িতেই খুন হন ৫৫ বছর বয়সী ভূপাল প্রামাণিক। পেশায় তিনি কারিগরী শিল্পী ছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কারিগরী শিক্ষার আড়ালে তিনি এলাকার এক যুবতীর সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। ‘মাস্টার ট্রেইনার’ হওয়ার সুবাদে ওই ব্যক্তি যুবতীর পরিবারের খুব কাছের সদস্য হয়ে ওঠেন। ছয় মাস আগে ইংলিশবাজার শহরেরই বাসিন্দা এক যুবকের সঙ্গে বছর বাইশের ওই যুবতীর বিয়ে দিয়ে দেয় তাঁর পরিবার। বিয়ের পরদিন ভূপালবাবু কন্যাযাত্রী হিসেবে ওই নববধূর শ্বশুরবাড়িতে যান। সেখান থেকে ভুল বুঝিয়ে নববধূকে নিয়ে পালিয়ে যান তিনি। কয়েক মাস ওই মহিলার সঙ্গে কাটিয়ে ভূপালবাবু তাঁকে একটি রেল স্টেশনে ছেড়ে পালিয়ে যান। পরে ওই বাড়ি ফিরে এলে তাঁকেও ঘরছাড়া হতে হয়। এনিয়ে মালদহ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলে পুলিস ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে জেল হেফাজতে পাঠায়। তিনদিন আগে ওই ব্যক্তি জেল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়িতে আসেন। ওই যুবতীর বাড়ি থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে ভূপালবাবুর বাড়ি। রাগ সামলাতে না পেরেই ওই মহিলার পরিবারের লোকেরা হামলা চালান। মার খেয়ে ঘটনাস্থলেই ভূপালবাবু মারা যান ।
প্রতিবেশীরা পাড়ার মধ্যে এধরণের ঘটনা মেনে নিতে পারেননি। ফলে ওই মহিলার পরিজন সহ দুষ্কৃতীরা সোমবার অনায়াসে তাঁর স্ত্রীকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে ঘরের ভিতরে ঢুকে ওই প্রৌঢ়কে খুন করে পালিয়ে যায়। প্রতিবেশীরা ভূপালবাবুর স্ত্রীর আর্তনাদ শুনেও এগিয়ে আসেননি। চোখের সামনে স্বামীকে খুন হতে দেখে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন ভূপালবাবুর স্ত্রী। সেই রাতেই তিনি মালদহ থানায় ওই মহিলার মা-বাবা সহ তাঁর নিকট আত্মীয় এবং অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকে এলাকা থমথমে রয়েছে। গ্রেপ্তারি এড়াতে বাকি অভিযুক্তরা ফেরার। পুলিস তাঁদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে। এলাকায় সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করে পুলিস পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে।
এলাকাবাসীরা বলেন, ভূপালবাবুর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কারণে এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ ছিল। তা আরও বাড়ে ওই নববধূকে তাঁর শ্বশুরবাড়ি থেকে ভাগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর। ভূপালবাবুর পরিবার গত ছয় মাস ধরে একপ্রকার একঘরে হয়ে পড়েছিল। এ বিষয়ে মৃতের স্ত্রী বলেন, জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর ভেবেছিলাম আর কোনও গণ্ডগোল হবে না। তবে এভাবে তাঁকে চোখের সামনে খুন হতে হবে ভাবিনি। ওই মেয়েটির পরিবার মেয়ের সম্মানহানির জন্য টাকা চেয়ে চাপ দিচ্ছিল। সে বিষয়টিও পুলিসকে জানিয়েছি।