মুম্বই, ১০ জানুয়ারি: অ্যাডিলেড টেস্টে ঋষভ পন্থ উইকেটের পিছনে নিয়েছেন ১১টি ক্যাচ। সিডনি টেস্টে ব্যাট হাতে ঝলসে উঠে তিনি ১৫৯ রানের একটি দুরন্ত ইনিংস খেলেছেন। অস্ট্রেলিয়ার মাঠে দেশের প্রথম উইকেটরক্ষক হিসাবে সেঞ্চুরি করেছেন ঋষভ। ২১ ধাপ উঠে তিনি আইসিসি টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে ১৭ নম্বরে উঠে এসেছেন। উল্লেখ্য, ধোনির সেরা র‌্যাঙ্কিং ছিল ১৯। ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন হার্টথ্রব হয়ে উঠেছেন ঋষভ পন্থ। বুধবার রাতে সিসিআই’তে এক অনুষ্ঠানে দেশের প্রাক্তন তারকা উইকেটকিপার ফারুখ ইঞ্জিনিয়ার বলেছেন,‘টেকনিকের ব্যাপারে ঋষভ পন্থের অনেক খামতি আছে। ওকে দেখে আমার প্রথম জীবনের কথা মনে পড়ছে। ওর মনোভাব অনেকটাই মহেন্দ্র সিং ধোনির মতো। তবে টেকনিকের খামতিগুলি খুব দ্রুত ওকে মেরামত করে নিতে হবে। আমি ওকে সমালোচনার তীরে বিদ্ধ করতে চাই না। ওর সঙ্গে আমার পরিচয় নেই। মুখোমুখি দেখা হলে দোষত্রুটিগুলি বলতে পারতাম।’
অস্ট্রেলিয়ায় দারুণ খেলায় বিশ্বকাপে নির্বাচকরা কি ঋষভ পন্থকে নেবেন? ধোনিকে কি বাদ দেওয়া উচিত? এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘এটা নির্বাচকদের ব্যাপার। তবে বর্তমানের তিনজন জাতীয় নির্বাচক তো দেশের হয়ে তেমন খেলেননি। নির্বাচকমণ্ডলী অবিলম্বে পাঁচ জনের হওয়া উচিত।’
ঋষভ পন্থের টেকনিকের খামতি কোথায়? ফারুখ বলেন, ‘ওর পায়ের নড়াচড়া মোটেই ভালো নয়। প্রচণ্ড জড়তা আছে। এই ব্যাপারে নজর দেওয়া উচিত। নিচু কিংবা গড়ানো বল কিপ করার ব্যাপারেও খুব সাবলীল নয়। স্পিনারদের বিরুদ্ধে কিপ করার সময়ে বড় দ্রুত উঠে যায়। একজন ভালো উইকেটরক্ষকের আসল ব্যাপার হল পায়ের মুভমেন্ট। পেসারদের বিরুদ্ধে কিপ করার সময়ে সব বলে ড্রাইভ দিতে নেই। পন্থ যেটা প্রায়ই করে। তবে অল্পবয়সী ছেলে। নিজের দুর্বলতা ঠিক করে নিতে পারলে অনেকদিনই খেলবে। প্রথম টেস্টে তুল্যমূল্য লড়াইয়ের সময়ে ওর ইস্পাত কঠিন মনোভাব দেখে ভালো লেগেছে। আশা করি, ও কিপিংয়ে উন্নতি করবে। তবে মনে রাখতে হবে উইকেট কিপিং অনেকটাই স্বভাবজাত ব্যাপার। সেই ভাবে শেখানো যায় না। ধোনির কিপিং যে দারুণ ছিল তা নয়। ইংল্যান্ডে আমি ইএসপিএনের হয়ে ধারাভাষ্য দিচ্ছিলাম। শচীন একদিন ওকে আমার কাছে নিয়ে আসে। তখন সোজা আসা বলও প্রায় ফেলে দিত। পেসার বলে ক্যাচও ফেলত। আমি ওকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, দ্রুত গতিতে বল এলে তুমি চোখ ফিরিয়ে নাও। অনেকটা অনুমান ক্ষমতার জোরে বল তালুবন্দি করার চেষ্টা কর। ধোনি স্বীকার করেছিল সেই দুর্বলতা। এরপর একাগ্রতার সঙ্গে সেই ত্রুটি কাটিয়ে ওঠে। তাই তো কেরিয়ার শুরুর প্রায় দেড় দশক পরেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছে।’ এখন বিশ্বের সব দল ব্যাটসম্যান-কিপার খেলানোর দিকে ঝুঁকছে। কেউ স্পেশালিস্ট কিপারের দিকে নজর দিচ্ছে না। তাই টেকনিকের খামতি না শোধরালেও ঋষভ পন্থ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে থেকে যাবে।’
সম্প্রতি হরভজন সিং নিজের কলমে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের সমালোচনা করেছেন। অশ্বিন চোট নিয়ে খেলতে গিয়েছিলেন বলেই অভিযোগ। দুটি বিদেশ সফরে এই ঘটনা ঘটল। ভাজ্জি তাই নিজের কলমে লেখেন, ‘কুলদীপ যাদবের প্রতি অবিচার করা হয়েছে। ও চতুর্থ টেস্টে সুযোগ পেয়েছে। অনেক আগেই ওর অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট টিমে জায়গা পাওয়া উচিত ছিল। আমার মতে তিন ধরনের ফরম্যাটেই ভারতের একনম্বর স্পিনার রবীন্দ্র জাদেজা ও দু’নম্বরে কুলদীপ যাদবকে খেলানো উচিত।’
এই ব্যাপারে ফারুখ বলেছেন, ‘ভাজ্জি এই সব না লিখলেই পারত। জাতীয় দলে অশ্বিনের উত্থানেই ছিটকে যায় ভাজ্জি। সেই রা঩গেই এখন অশ্বিনের সমালোচনা করছে।’