নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: অনলাইন পেমেন্টের পাশাপাশি পুরসভার পার্কিং লটে ‘সরকারিভাবে’ ফিরতে চলেছে নগদে লেনদেন। বছর খানেক আগে কলকাতা পুরসভার পার্কিং লটগুলিতে চালু হয়েছে ই-পস মেশিন। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তখন থেকেই মেশিনে কিউআর কোড স্ক্যান করে অনলাইনে পার্কিং ফি মেটানো শুরু হয়। সেই সঙ্গে নগদ লেনদেন পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। উদ্দেশ্য ছিল, নগদ লেনদেন বন্ধ করা গেলে বেআইনিভাবে বাড়তি পার্কিং ফি নেওয়ার অভিযোগ ঘুচবে। কিন্তু বেআইনিভাবে টাকা নেওয়া জারি রয়েছে বলেই অভিযোগ। তাছাড়া, অনলাইনে ফি মেটাতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন অনেকে। তাই অনলাইন পেমেন্টের পাশাপাশি ফের টাকা নেওয়ার ব্যবস্থাও চালুর পরিকল্পনা করছে পুরসভা। আগামী মেয়র পরিষদের বৈঠকে এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হওয়ার কথা।
পুরসভার পার্কিং বিভাগ সূত্রে খবর, বছর খানেক ধরে এই মেশিনের মাধ্যমে অনলাইন পেমেন্ট চালু হলেও সাফল্য আসেনি। বেআইনি পার্কিং বা অবৈধভাবে বাড়তি ফি নেওয়ার ‘রোগ’ কমেনি। উল্টে তা বেড়েছে। পার্কিং লটের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন এজেন্সিকে ই-পস মেশিন তুলে দেওয়া হলেও তাঁরা খারাপ নেটওয়ার্ক এবং সার্ভারের সমস্যার অজুহাত দেখিয়ে সেগুলি ব্যবহার করছে না বলে অভিযোগ। পুরসভা সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত ৫৬২টি ই-পস মেশিন দেওয়া হয়েছে। সমস্ত এজেন্সি এই মেশিন নেয়নি। সম্প্রতি শহরের বেআইনি পার্কিং নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর নড়েচড়ে বসে পুরসভা এবং পুলিস। নতুন করে সরকার স্বীকৃত পার্কিং এরিয়াগুলি দাগ টেনে চিহ্নিত করা হচ্ছে। ঘণ্টা প্রতি কত টাকা দিতে হবে, সেই রেট চার্ট দেওয়া হচ্ছে গ্লো-সাইন বোর্ডে। সেই সঙ্গে পুরসভার প্রায় ৯৫০টি পার্কিং এরিয়ার দায়িত্ব বণ্টনের জন্য নতুন করে টেন্ডার ডাকা হয়েছে। সেই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলে নতুন এজেন্সির হাতে ই-পস মেশিন তুলে দেওয়া হবে এবং শহরের সর্বত্র এই মেশিন বাধ্যতামূলক করা হবে। কিন্তু ইতিমধ্যে পুরসভার কাছে বহু নাগরিক অভিযোগ জানিয়েছেন, যাঁদের কাছে স্মার্টফোন নেই বা থাকলেও অনলাইন পেমেন্টের ব্যবস্থা নেই, তাঁরা ফি মেটাতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন। উল্টে বাড়তি টাকা দিতে হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে পুরসভার পার্কিং বিভাগের এক কর্তা বলেন, ‘কারা মেশিন পেয়েও ব্যবহার করছে না, সমীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’ তাঁর আরও সংযোজন, অনলাইন পেমেন্টের পাশাপাশি সবার সুবিধার জন্য এবার নগদেও পার্কিং ফি নেওয়া হবে। তবে হাতে লেখা কোনও বিল দেওয়া যাবে না, ‘মেশিন জেনারেটেড’ বিলই দিতে হবে।- নিজস্ব চিত্র