বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
কলকাতা
 

দাদার মৃত্যুর পর স্নায়ুরোগে আক্রান্ত
ভাইও, চিকিৎসার খরচ জোগাড়ে হিমশিম

সংবাদদাতা, বনগাঁ: ক্লাস ওয়ানের ছাত্র ঋক বৈদ্য। আর পাঁচটা ছেলের মতো স্কুলে যেত। বন্ধুদের সঙ্গে খেলা করত। এখন সে স্কুলে যেতে পারে না। বন্ধুদের সঙ্গে খেলাও বন্ধ তার। হাঁটতে গেলে ওর পা বেঁকে বেঁকে যায়। বিরল একটি স্নায়ুর রোগে আক্রান্ত সে। ঋকের বাবা সত্য বৈদ্য ঠিকাশ্রমিক। মা গৃহবধূ। উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা থানার শশাডাঙায় ওদের টালির বাড়ি। সে বাড়ি বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘেরা। বন্ধুরা ওদের বাড়ির সামনে দিয়ে মাঠে খেলতে যায়। ঋক বেড়ার ফাঁক দিয়ে ওদের যাওয়া আসা দেখে। কোনও কোনওদিন চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে আসে ওর। 
ঋকের দাদা সুরজের মৃত্যু হয়েছে চার বছর আগে। সুরজের যখন পাঁচ বছর বয়স তখন ওর পা বেঁকে বেঁকে যাওয়া শুরু হয়েছিল। ধীরে ধীরে শিরদাঁড়াও বেঁকে যায়। একদিন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় হাঁটা। সাধ্যমতো চিকিৎসা করেও ছেলেকে বাঁচাতে পারেনি বৈদ্য দম্পতি। ১৬ বছর বয়সে পা দিয়ে মৃত্যু হয়েছিল সুরজের। তারপর প্রায় নিঃস্ব হয়ে যায় ওই পরিবার।
তবে সুস্থ সবল শিশু ঋককে দেখে আশার আলো দেখেছিলেন বাবা-মা। সেই আশায় আচমকা ছন্দপতন। মাস ছয়েক আগে ছোট ছেলের মধ্যেও তার দাদার মতো অসুস্থতার লক্ষণ দেখা গেল। এঁকে বেঁকে হাঁটতে গিয়ে পড়ে যায় ও। কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিউরো মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসা শুরু হয় ঋকের। চিকিৎসকরা একটি শারীরিক পরীক্ষা করাতে বলেন। সেটির রিপোর্ট দু’মাস পর মিলবে। মা মিঠু বৈদ্য বললেন, দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে ছেলের শরীর। একসময় যে ছেলে সারাদিন ছুটে বেড়াত, সে আজ ঘরে শুয়ে থাকে। বনগাঁ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, বিরল এক রোগে আক্রান্ত ছেলেটি। এটি জিনগত কারণে হয়ে থাকতে পারে।  
বড় ছেলের উপযুক্ত চিকিৎসা করাতে গিয়ে প্রায় সর্বস্বান্ত ঠিকা শ্রমিক সত্য বৈদ্য। ছোট ছেলের চিকিৎসা যে কীভাবে হবে, তা নিয়ে এখন দুশ্চিন্তার শেষ নেই। এই অবস্থায় আশার আলো দেখা দিয়েছে খানিকটা। গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোবিন্দ দাস বলেছেন, ছেলেটির যাতে ভালো চিকিৎসা হয় তার ব্যবস্থা করব। রবিবার অসুস্থ শিশুটিকে দেখতে তার বাড়িতে যান রাজ্য শিশু সুরক্ষা দপ্তরের দুই প্রতিনিধি। শিশুটির পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। চিকিৎসার খুঁটিনাটি নিয়েও খোঁজ নেন।
ঋক ওদের ছোট বারান্দায় বসে মায়ের রান্না করা দেখতে দেখতে বলে, মাঠে খেলতে যাব। দু’মাস অপেক্ষা করতে বলেন মা। দু’মাস বাদে আসবে ঋকের রিপোর্ট। তারপর চিকিৎসা শুরু করতে হবে। তার জন্য বহু টাকা খরচ। ছোট্ট ছেলেটা এত কিছু বোঝে না। আর ভেবে কূলকিনারা পান না মা নিজেও। ছ’বছরের একদা ছটফটে ছেলেকে রান্না করতে করতে আড়চোখে দেখেন। চোখের জল আর বাঁধ মানে না।

29th     March,   2023
 
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ