মাতৃকুল থেকে সম্পত্তি প্রাপ্তির যোগ। ডাক্তার, আইনজীবী, প্রমুখের পেশার প্রসার, সুনাম ও উপার্জন বৃদ্ধির সম্ভাবনা। ... বিশদ
ইতিহাসের পাতায় রাজাদের জয় পরাজয়ের নানা কথা স্তরে স্তরে সাজানো। বৈভব, ঐশ্বর্য আর তাদের কৃতকর্মের জয়গানে সমৃদ্ধ সে গল্প। কিন্তু প্রদীপের নিচে অন্ধকারের মতো দুঃখ, ক্ষোভ লুকিয়ে থাকে সব বৈভবের পশ্চাদপটেই। এই নাটক খিড়কির আড়ালে থাকা সেই সব জেনানাদের সুখ দুঃখের কথা বলে। সৈয়দ শামসুল হকের এই কাব্য নাটকের পরতে পরতে সেই অভাগা নারীদের কথা রয়েছে।
সময়কাল ১৭৫৭। পলাশীর যুদ্ধে পরাজয়ের পর হত্যা করা হয়েছে সিরাজকে। বাংলার শেষ নবাবের আকস্মিক মৃত্যুতে অনিশ্চিত পরিবারের মহিলাদের ভবিষ্যৎ। বিজয়োন্মত্ত ব্রিটিশ রাজ সিরাজের মৃতদেহ নিয়ে বাংলা বিজয়ের উল্লাসে রাজপথ ধরে শোভাযাত্রা বের করে। এই উল্লাসের তরঙ্গ স্পর্শ করে সিরাজের পরিবারের মহিলাদের। পরাধীনতার সুযোগ নিয়ে লোভ, লালসা, ক্রোধ আছড়ে পড়ে নারী শরীরের উপর।
নাটকে সাতজন নারী চরিত্রের মধ্যে দিয়ে এই আশঙ্কার প্রহরকে উপস্থান করেছেন পরিচালক কৌশিক চট্টোপাধ্যায়। পরাজয় পরবর্তী জীবন কেমন ভয়ংকর অনিশ্চয়তার উপর দাঁড়িয়ে থাকে, তা তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিটি চরিত্র নিজের ভাবমূর্তিকে সাধ্যমতো তুলে ধরতে চেষ্টা করছেন। সঞ্চিতা, কৌশানী মুখোপাধ্যায়, দোলা মুখোপাধ্যায়, বর্ণালী চট্টোপাধ্যায়, সুচরিতা মান্নার অভিনয় ভালো লাগে। কুতুব নামে চারটি রহস্যময় চরিত্রকে সৃষ্টি করেছেন পরিচালক। বাতাসের তরঙ্গের মতো মাঝে মাঝে মঞ্চ থেকে অডিটোরিয়াম জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে তাদের ধারাবিবরণী। এই চরিত্রগুলিকে দারুণ ভাবে তুলে ধরেছেন সঞ্জীব সিনহা, পলাশ কর্মকার, কৌশিক চক্রবর্তী ও শুভময় ঘোষ। মোম ভট্টাচার্যের পোশাক পরিকল্পনা সময়োচিত। অরুণ মণ্ডলের মঞ্চ ভাবনা ও নির্মাণ এবং প্রিয়ব্রত চট্টোপাধ্যায়ের আলোক প্রক্ষেপণ নাটক পরিবেশনায় যোগ্য সঙ্গত করেছে। নাটকটিকে আবহে সুন্দর বেঁধেছেন উজান চট্টোপাধ্যায়। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে রচিত হলেও এই নাটক আজও সমান প্রাসঙ্গিক।