মনোরম স্থানে সপরিবারে ভ্রমণ ও আনন্দ উপভোগ। সম্পত্তি সংরক্ষণে সচেষ্ট না হলে পরে ঝামেলায় পড়তে ... বিশদ
আমানের সাঙ্গীতিক জীবনে ডোভার লেন এক বিশেষ জায়গায় রয়েছে। প্রথমবার বাজানোর কথা মনে পড়ে? আমান বলেন, ‘১৯৯৮ সালে প্রথমবার এখানে বাজানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। তবলায় সঙ্গত করেছিলেন পণ্ডিত অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানের আগে বেশ চিন্তায় ছিলাম। প্রথম বাজনা। তবে পণ্ডিতজির সঙ্গে বসার পর সব স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছিল।’ কথায় কথায় শিল্পী ফিরে গিয়েছিলেন অতীতে। ‘ডোভার লেন ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের মক্কা। এই সঙ্গীত সম্মেলনে অংশগ্ৰহণ করার সুযোগ পাওয়াটা অত্যন্ত গর্বের বিষয়। বাংলার মানুষের থেকে অনেক ভালোবাসা আর আশীর্বাদ পেয়েছি সবসময়। এখানকার শ্রোতা পরিশ্রমের কদর করেন। ডোভার লেনে আসা মানেই ঘরে ফেরা’, বললেন শিল্পী।
সাঙ্গীতিক ঘরানায় জন্ম এবং বড় হয়ে ওঠা আমানের। পারিবারিক ঐতিহ্যের কদর করতে জানেন তিনি। স্বীকার করলেন, ‘উস্তাদ আমজাদ আলি খানের ছেলে না হলে হয়তো এই জায়গায় পৌঁছতে আরও ২০ থেকে ৩০ বছর সময় লেগে যেত। তবে সুযোগ নষ্ট করা সবথেকে বড় অপরাধ। বাবা সবসময় বলেন, পরিশ্রম করে যাও। তাহলেই যারা তোমায় বিশ্বাস করে না, তাদের ভুল প্রমাণিত করতে পারবে। আর সবসময় বিনম্র থাকবে।’
উস্তাদ আমজাদ আলি খানের জ্যেষ্ঠপুত্র। উস্তাদ হাফিজ আলি খানের নাতি। প্রসিদ্ধ ঘরানার উত্তরসূরি হিসেবে নিশ্চয়ই বাড়তি চাপ থাকে? সরোদশিল্পীর জবাব, ‘এই পরিবারে জন্মগ্রহণ করতে পেরে আমি ধন্য। শিল্পীর থেকে শ্রোতাদের কোনও প্রত্যাশা না থাকলে চাপ থাকে না। আশা-আকাঙ্ক্ষা থাকলে তবেই খারাপ-ভালোর প্রসঙ্গ আসে। মানুষ তাদেরই সমালোচনা করেন যাদের থেকে তাঁরা কিছু আশা করেন। তবে ধারাবাহিকতা বজায় রাখাটাই আসল।’
সাফল্য একদিনে আসে না। অতীতের শিল্পীদের পরিশ্রমেই আজ ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত বিশ্বজনীন। এবিষয় শিল্পী বলেন, ‘এক সময় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পীরা বাসে যাতায়াত করতে পারতেন না। আজ বিমানে সহজেই দেশ-বিদেশ যেতে পারেন। পণ্ডিত রবিশঙ্কর, উস্তাদ বিলায়েত খান, উস্তাদ জাকির হুসেন, উস্তাদ আমজাদ আলি খান, পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া, পণ্ডিত শিবকুমার শর্মার মতো মহীরুহদের অক্লান্ত পরিশ্রম ছাড়া এমনটা সম্ভব হতো না।’
কোভিড পর্বে অনুষ্ঠানের পরিমাণ অনেকটাই কমে গিয়েছিল। তারপর কেটে গিয়েছে বেশ কিছুটা সময়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে?
আমানের কথায়, ‘কোভিডের সময় মানুষ বুঝতে পেরেছেন জীবনের আয়ু কতটা সীমিত। আজ প্রেক্ষাগৃহে উপচে পড়া ভিড় দেখলেই তা বোঝা যায়।’
সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়া এখন জীবন কার্যত অচল। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রচারে সোশ্যাল মিডিয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ ? সরোদশিল্পীর স্পষ্ট জবাব, ‘সোশ্যাল মিডিয়া পরিচিতি দেয় ঠিকই। কিন্তু ভাবনা আর বিষয়বস্তু উন্নত না হলে টিকে থাকা সম্ভব নয়।’