বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহযোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন হতে ... বিশদ
সদ্য কুড়ির কোঠায় পা রাখা সাম্প্রতিক প্রজন্মই অঞ্জনের ছবির কুশীলব। যারা অঞ্জনের ভাষায়, ‘কমিটমেন্ট ফোবিয়ায় আক্রান্ত, দায়িত্ব নিতে অনিচ্ছুক।’ সেই রকম একটি জুটিকে কেন্দ্র করেই তৈরি হয়েছে ছবিটি। যাদের বিয়ে করতে ভয়। অঙ্গীকারবদ্ধ হতে অনীহা। অঞ্জনের দাবি, ‘এই প্রবণতাটা শুধু আমার গল্পের প্রোটাগনিস্টদের জন্য নয়, গোটা জেনারেশনটার। যৌথ পরিবার তো গিয়েছেই, এখন মাইক্রো পরিবারগুলোও যেতে বসেছে। এসো কিছুদিন একসঙ্গে থাকি — এই জাতীয় মনোভাব আজকের ছেলেমেয়েদের মধ্যে। এই প্রবণতার খারাপ দিকটাই আমি গল্পের আকারে ছবিতে তুলে ধরতে চাইছি।’
ছবিতে অভিনয় করছেন টলিউড ইন্ডাস্ট্রির ‘আজকের অভিনেতা-অভিনেত্রী’রা। তাঁরা এই ‘লিভ ইন’ সম্পর্ককে কী চোখে দেখছেন? কতটাই বা তারা ছবির বিষয়ের সঙ্গে একমত? ছবির দুই মুখ্য চরিত্র নীল ও তুষি। নীল নদীয়ার ছেলে। কলকাতায় একটি বহুজাতিক সংস্থায় চাকরি করে। বিপরীতে, তুষি মফস্সলের একটি ছোট শহর থেকে চাকরি খুঁজতে কলকাতায় এসেছে। একা মেয়েকে প্রাথমিকভাবে কেউ বাড়িভাড়া দেয় না। বন্ধুদের সূত্রে আলাপ হয় নীলের সঙ্গে। সে নীলের ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করে। সেখান থেকে একটি সম্পর্কের শুরু। চরিত্র দুটিতে অভিনয় করছেন অঞ্জন পুত্র অনুভব ও ‘সোয়েটার’ খ্যাত ঈশা সাহা। অনুভবের মতে, ‘লিভ ইন রিলেশন আর বিয়ের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নেই। কিন্তু কমিটমেন্ট জোরালো হলে সেই সম্পর্কটাই বিয়ের থেকে আলাদা কিছু নয়। তাই দুটোর গুরুত্বই আমার কাছে সমান।’
বৈবাহিক সম্পর্ককে বিশ্বাসী ঈশাও ‘লিভ ইন’ রিলেশনের পক্ষে। ‘আমার কোনওটাতেই আপত্তি নেই’ একথা বলার পরেও ঈশা প্রশ্ন তোলেন, ‘বিয়ে হলেই কী সম্পর্কটা সিকিওর থাকে? তাহলে এত ডিভোর্স হচ্ছে কেন?’ তাঁর মতে, ‘দুটো ক্ষেত্রেই দুটি প্রাপ্ত বয়স্ক নারী-পুরুষের পারস্পরিক ভালোবাসা ও বিশ্বাসের বুনিয়াদটা সুদৃঢ় হতে হবে।’
পাশাপাশি রয়েছে পূজা চৌধুরী। উচ্চাকাঙ্খী মেয়ে। সাফল্যটা তার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। তার জীবনেও প্রেম আছে। কিন্তু সেই সম্পর্ক নিয়ে সে দ্বিধায়। পূজা সবসময় সচেতন, সম্পর্ক যেন তার কেরিয়ারের কোনও ক্ষতি করতে না পারে। লিভ-ইন রিলেশনের পক্ষে জোরালো সওয়ালই করলেন চরিত্রটির অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ। তাঁর মতে, ‘অচেনা লোক বা প্রেম করে বিয়ে করে, তার সঙ্গে কিছুদিন থেকে সম্পর্ক ভাঙার চেয়ে, বিয়ের আগে একসঙ্গে থেকে একে অপরকে বোঝা উচিত তারা থাকতে পারবে কিনা না। সুপ্রিম কোর্ট যেখানে এই লিভ-ইন রিলেশন নিয়ে স্পষ্ট মত দিচ্ছে, সেখানে নিশ্চয়ই এই সম্পর্কটাকে নিয়ে আজকের সমাজ ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছে।’ এছাড়াও আছেন দেবলীনা দত্ত। কেরিয়ারে এই প্রথম দেবলীনা এক দাপুটে কাজের মহিলার চরিত্রে অভিনয় করছেন। চরিত্রটির নাম ‘কলাবতী’। যে কথা বলে ঠেট ভাষায়। তার যত সমস্যা পিকুকে নিয়ে। চরিত্রটিতে অভিনয় করছেন রাহুল চক্রবর্তী। যে তুষির মেন্টর, বন্ধু, গাইড ও ফিলজফার।
ছবির ডিওপি সদ্য কান থেকে শ্রেষ্ঠ মহিলা সিনেমাটোগ্রাফারের পুরস্কার পাওয়া মধুরা পালিত। ছবিতে সুর করেছেন সৌমঋত। গান গেয়েছেন শুভমিতা, রূপঙ্কর, দুনির্বার। একটি গান গাইতে পারেন শান। অতিথি শিল্পী পরিচালকের যৌবনবেলার বন্ধু ব্রাত্য বসু। প্রযোজনা করছেন পরিচালকের বন্ধু ও প্রাক্তন ছাত্ররা। ‘সহবাসে’ মুক্তি পেতে পারে পুজোর পর।
প্রিয়ব্রত দত্ত