বেশি বন্ধু-বান্ধব রাখা ঠিক হবে না। প্রেম-ভালোবাসায় সাফল্য আসবে। বিবাহযোগ আছে। কর্ম পরিবেশ পরিবর্তন হতে ... বিশদ
নির্দিষ্টভাবে কাটমানি প্রসঙ্গে আলোচনার জন্য এদিন কোনও নির্ধারিত সূচি ছিল না অধিবেশনে। মন্ত্রী-বিধায়কদের দৈনিক ভাতা এক হাজার টাকা করে বাড়ানোর ব্যাপারে সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণাকে পাকাপোক্ত রূপ দিতে এদিন একটি বিল পাশের ব্যবস্থা করা হয়। প্রাক্তন বিধায়কদের চিকিৎসা ও ভ্রমণ ভাতা বৃদ্ধি এবং সরকারি কর্মচারীদের পে-কমিশন ও বকেয়া ডিএ’র ব্যাপারে সরকার কোনও পদক্ষেপ না করার অভিযোগে বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী সেই বিলকে মৌখিকভাবে সমর্থন জানাননি। আলোচনা শেষে জবাবি ভাষণ দেওয়ার সময় সাংগঠনিক নিয়ম অনুযায়ী সুজনবাবুদের বেতন বা ভাতার টাকার একাংশ দলীয় তহবিলে জমা দেওয়া বাধ্যবাধকতার কারণে তাঁরা এই বৃদ্ধির জন্য খুশি হতে পারছেন না বলে কটাক্ষ করেন পার্থবাবু। সেই সঙ্গে সুজনবাবুদের খরচ কীভাবে এই টাকায় চলে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। তখনই বাম বিধায়কদের বেঞ্চ থেকে পাল্টা ‘কাটমানি, কাটমানি’ বলে টিপ্পনি করা হয়। সেই শুনেই কিঞ্চিৎ চটে যান পরিষদীয়মন্ত্রী। তিনি তখনই কাটমানি ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীর নেওয়া পদক্ষেপ এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে নানা জায়গায় শাসকদলের নেতা-কর্মীদের বাড়ি বা অফিসে বিক্ষোভ দেখানোর প্রসঙ্গে কিছু কড়া কথা বলেন।
বাম শিবিরের উদ্দেশে পার্থবাবু বলেন, আরে রাখুন, কাটমানি। আপনাদের সময় কত কেলেঙ্কারি হয়েছিল মনে নেই। জমি কেলেঙ্কারি, ট্রেজারি কেলেঙ্কারি, আরও কত কী। সবচেয়ে বড় কথা, এই সদনেরই একদা সদস্য তথা তৎকালীন ভূমিমন্ত্রী বিনয় চৌধুরী একদিন বলেছিলেন, তাঁদের সরকার প্রোমোটার, ঠিকাদারদের সরকারে পরিণত হয়েছে। আর একজন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তো চোরেদের সরকারে থাকবেন না বলে ইস্তফা দিয়েছিলেন। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী তো সাহস করে বলেছেন, দরজা খুলে দিলাম। অভিযোগ করুন। সত্যতা থাকলে তার বিহিত করা হবে। কিন্তু পতাকা নিয়ে ঘোরার দরকার কী? হাওয়া তুলে বাড়িতে বাড়িতে গেলাম—এটা ঠিক নয়। মুখ্যমন্ত্রী একটা ভালো উদ্যোগ নিয়েছেন। সবাই তো খারাপ নয়। প্রমাণ দিন, কে কাটমানি খেয়েছে, আর কেই বা দিয়েছে। মনে রাখবেন যারা টাকা নিয়েছে বা দিয়েছে, তাদের সবাইকেই জেলে যেতে হবে। আর যারা পতাকা নিয়ে ওইসব করছে, তাদেরও জেলে যেতে হবে।
পার্থবাবুর এহেন বক্তব্য শুনে অবশ্য সুজনবাবু পরে বলেন, একেই বোধহয় বলে চোরের মায়ের বড় গলা। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই দলীয় বৈঠকে বারবার বলেছেন যে, আবাস যোজনার বাড়ি বা শৌচালয় তৈরি থেকে শুরু করে মৃতদেহ সৎকারের সমব্যাথী প্রকল্পের টাকা থেকেও কাটমানি খাচ্ছেন শাসকদলের নেতা-কর্মীরা। গ্রাম বা শহরের গরিব মানুষ বাসস্থান বা অন্যান্য সরকারি সুবিধা পেতে এই কাটমানি দিতে বাধ্য হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর তারা সেই টাকাই ফেরত চাইছে। এখন পার্থবাবুরা সেই টাকা ফেরতের জন্য গণবিক্ষোভ ঠেকাতে সেই কাটমানি দেওয়ার অপরাধে নিরীহ সাধারণ মানুষকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, যাতে তারা এগিয়ে না আসে।