নয়াদিল্লি, ১১ জুলাই (পিটিআই): কেন্দ্রীয় বাজেটে দেশকে উচ্চ আর্থিক বৃদ্ধির রাস্তায় নিয়ে যাওয়ার সুস্পষ্ট কোনও রূপরেখা নেই। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় এই দাবি করলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। বাজেট নিয়ে বিতর্কে বক্তব্য রাখতে গিয়ে চিদম্বরম জানান, বর্তমানে দেশের অর্থনীতি খুবই দুর্বল। দ্রুত আর্থিক বৃদ্ধির পথে দেশকে নিয়ে যেতে শক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। যা একমাত্র প্রধানমন্ত্রী মোদিই নিতে পারেন। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বাজেট বক্তৃতাকে ‘পানসে’ তকমা দিয়ে তিনি দাবি করেন, এই বাজেটে লগ্নি ও সঞ্চয় বৃদ্ধির বিষয়ে একটি শব্দও খরচ করা হয়নি। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের মধ্যে ভারতের অর্থনীতিকে ৫ লক্ষ কোটি ডলারের পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রার কথা জানিয়েছে মোদি সরকার। এদিন সেই প্রসঙ্গেও মুখ খুলেছেন বর্ষীয়ান এই কংগ্রেস নেতা। বিষয়টিকে একেবারেই গুরুত্ব দিতে নারাজ চিদম্বরম জানান, আগামী ৬-৭ বছরে দেশের অর্থনীতি ‘চক্রবৃদ্ধির জাদু’তে নিজে থেকেই দ্বিগুণ হবে। এর জন্য কোনও প্রধানমন্ত্রী অথবা অর্থমন্ত্রীর প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, ‘৫ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। খুব ভালো কথা। আমি আপনাদের আরও ভালো লক্ষ্যমাত্রা দিচ্ছি। ১৯৯০-৯১ অর্থবর্ষে ভারতের অর্থনীতি ছিল ৩২০০ কোটি ডলারের। ২০০৩-০৪ অর্থবর্ষে সেটা দ্বিগুণ হয়ে ৬১৮০ কোটি ডলারে পৌঁছে যায়। তারপর ইউপিএ সরকার ক্ষমতায় আসার মাত্র চার বছরে ৬১৮০ কোটি ডলারের অর্থনীতি বেড়ে ১.২২ লক্ষ কোটি ডলার হয়। আবার সেখান থেকে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে দেশের অর্থনীতি ২.৪৮ লক্ষ কোটি ডলারে পৌঁছে যায়। আগামী পাঁচ বছরে সেটা আরও বেড়ে পাঁচ লক্ষ কোটি ডলার হবে। এর জন্য কোনও প্রধানমন্ত্রী অথবা অর্থমন্ত্রীর প্রয়োজন নেই। এই বৃদ্ধি ঘটবেই। এটাই তো চক্রবৃদ্ধির জাদু।’ ঋণদাতা এবং গ্রহীতা মাত্রই এই অঙ্ক জানেন বলেই দাবি করেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী।
এদিন রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে সরাসরি আক্রমণ করে চিদম্বরম জানান, বাজেটে কোনও গোদা পরিসংখ্যান পেশ করেননি নির্মলা। কিন্তু, বাজেট ভাষণে সেগুলির উল্লেখ করা দরকার ছিল। মানুষ সেগুলোই জানতে চায়। কারণ, তাঁদের পক্ষে বাজেটের আনুষঙ্গিক নথিপত্রগুলি দেখা সম্ভব হয়ে ওঠে না। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সাম্প্রতিক অতীতে এমন পরিসংখ্যানহীন বাজেট বক্তৃতা আমার মনে পড়ছে না।’