হঠাৎ নেওয়া সিদ্ধান্তে বিপদে পড়তে পারেন। চলচিত্র ও যাত্রা শিল্পী, পরিচালকদের শুভ দিন। ধনাগম হবে। ... বিশদ
করোনার আবির্ভাবে ওয়ার্ক ফ্রম হোম এবং ছোটদের ক্ষেত্রে অনলাইন ক্লাস জনপ্রিয় হয়েছে। তবে যত দিন যাচ্ছে, ততই বাড়িতে থেকে কাজ ও অনলাইন ক্লাসের কুপ্রভাবগুলিও নজরে আসছে। ছোট থেকে বড়, প্রায় সকলের মধ্যেই দেখা দিচ্ছে চোখের সমস্যা। এছাড়া ঘাড়, পিঠ এবং কোমরের ব্যথায় তো সকলেই কমবেশি ভুগছে। এই ধরনের শারীরিক জটিলতার পিছনে মূল কারণ হল অবৈজ্ঞানিকভাবে মোবাইল, ল্যাপটপ ও টিভির লাগাতার ব্যবহার। নজর দেওয়া যাক শারীরিক সমস্যাগুলিতে—
চোখ: ইলেকট্রনিক স্ক্রিন মানেই ক্রমাগত স্ক্রোলিং হচ্ছে। উপর-নীচে স্ক্রিন নড়ছে। একটানা এইরকমভাবে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখের পেশিগুলিও ক্রমাগত সংকুচিত ও প্রসারিত হতে থাকে। ফলে ছোট বড় সকলের ড্রাই আইজ, চোখে ব্যথা, লাল চোখ বা চোখ থেকে জল পড়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকী কমবয়সে চোখে গ্লকোমার হানা দেওয়ার ভয়ও দূর করা যায় না।
ঘাড়: মোবাইল এবং কম্পিউটার ব্যবহার করতে গিয়ে সাধারণত আমরা মাথা ও ঘাড় সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে রাখি। এমন অভ্যেসে ঘাড়ের পেশিতে টান পড়ে ও ব্যথা শুরু হয়। যে হাত দিয়ে মোবাইল ব্যবহার করা হচ্ছে, সেই দিকের কাঁধ ও হাতেও অনেকের ব্যথা দেখা যায়। এইসব ক্ষেত্রে সার্ভাইক্যাল স্লিপ ডিস্কের প্রবণতা বেড়ে যায়। সমস্যা গুরুতর হলে অনেকের ক্ষেত্রে অপারেশন পর্যন্ত করতে হতে পারে।
হাত ও কব্জি: মোবাইল ও ল্যাপটপ বেশি ব্যবহার করা থেকে কব্জিতে কার্পাল টানেল সিনড্রোম বা বিশেষ ধরনের নার্ভের সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার থেকে বুড়ো আঙুলে ডি কিউ (কোয়্যারভেন) ডিজিজ হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এক্ষেত্রেও উপসর্গ ব্যথা।
শিরদাঁড়া ও কোমর: মোবাইল ও ল্যাপটপ ব্যবহার করতে গিয়ে সামনের দিকে মাথা ঝোঁকানোর কারণে অনেকের ক্ষেত্রে শিরদাঁড়া ও কোমরেও মারাত্মক ব্যথা হতে পারে।
ঘুম: রাতে শোয়ার সময় মোবাইল-ল্যাপটপের অতিরিক্ত ব্যবহার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। অনিদ্রাও আসতে পারে। ঘুম ভালো না হলে শরীরের মাংসপেশিগুলো উপযুক্ত বিশ্রাম পায় না। ফলে চোট লাগার আশঙ্কা বেড়েই যায়।
কীভাবে ব্যবহার করবেন মোবাইল-ল্যাপটপ?
১. যে কোনওরকম চোট বা আঘাত এড়াতে শরীরের পেশিগুলোকে সচল রাখা জরুরি। তাই রোজ নিয়ম করে অন্তত ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট শরীরচর্চা আবশ্যিক। বাড়িতে থাকলে শলভাসন, ভুজঙ্গাসন, পবন মুক্তাসন অভ্যেস করলে কোমরের ব্যথা এড়ানো যেতে পারে। কিন্তু যাঁরা ইতিমধ্যেই কোমরের যন্ত্রণায় ভুগছেন, তাঁরা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে তবেই আসন অভ্যেস করুন।
২. রাত্রে ঘুমানোর এক ঘণ্টা আগে ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের ব্যবহার বন্ধ করতে দিন। ওই সময়টা বই পড়ুন, বা হালকা বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গীত শুনতে পারেন।
৩. অনেকেই বিছানায় বসে বা শুয়ে ল্যাপটপে কাজ করেন। ফলে নানা ধরনের ব্যথা বাড়ার আশঙ্কা থাকে। ল্যাপটপের পরিবর্তে চেয়ার টেবিলে বসে ডেস্কটপে কাজ করা অনেক বেশি বিজ্ঞানসম্মত। ল্যাপটপে কাজ করতে হলে এক্সটার্নাল কি-বোর্ড এবং মাউসের ব্যবহার করলে ভালো হয়।
৪. যে কোনওরকম ইলেকট্রনিক স্ক্রিনের দিকে একটানা ২০ মিনিটের বেশি তাকাবেন না। ২০ মিনিট পর অন্তত ২০ সেকেন্ড চোখ বন্ধ করুন। তারপর আবার স্ক্রিনের চোখ রাখুন। পাশাপাশি আর্টিফিশিয়াল টিয়ার ড্রপ ব্যবহার করলেও চোখের আরাম হয়। দিনে তিন-চারবার এই ধরনের ড্রপ ব্যবহার করা যেতে পারে। এছাড়া ঘণ্টাখানেক পর চেয়ার ছেড়ে উঠে পায়চারি করুন। তারপর কাজে বসুন।
৫. মোবাইল ব্যবহার করার সময় ঘাড় ঝোঁকাবেন না। বরং হাতে মোবাইল ধরে তা মুখের সোজাসুজি ও সামনে আনুন।