হঠাৎ নেওয়া সিদ্ধান্তে বিপদে পড়তে পারেন। চলচিত্র ও যাত্রা শিল্পী, পরিচালকদের শুভ দিন। ধনাগম হবে। ... বিশদ
ঘুমে সর্বাধিক বঞ্চিত দেশগুলির মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। কোভিড ১৯-এর পর্যায়ে লকডাউনে ঘুম নিয়ে মারাত্মক সমস্যায় ভুগেছেন অসংখ্য মানুষ।
ঘুমের কাজ কী কী?
ঘুমের কাজের শেষ নেই। এক, সারাদিনে শরীরের প্রত্যেকটি কোষে নানা জৈব রাসায়নিক কাজকর্ম চলে। এই কাজকর্মগুলি কোষের মধ্যে তৈরি করে ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থ। এমনকী মস্তিষ্কের কোষেও এমন ক্ষতিকর বর্জ্য রাসায়নিক তৈরি হয়। সঠিক সময়ে কোষগুলি বর্জ্য বের করার সময় না পেলে শরীরে প্রদাহকারক পদার্থের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। কমতে শুরু করে ইমিউনিটি। দুই, স্মৃতিশক্তির বিষয়টিও নির্ভর করে ঘুমের উপর। ঘুমের মধ্যেই অপ্রয়োজনীয় স্মৃতিকে ব্রেন মুছে দেয় ও প্রয়োজনীয় স্মৃতি ধরে রাখে। তাই ভালো ঘুম হলে, মন ভালো থাকে। তিন, ভালো ঘুম হার্ট শক্তিশালী রাখে। চার, পর্যাপ্ত ঘুমে রক্তে ইনসুলিনের ক্ষরণ ভালো হয়। সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকায় ডায়াবেটিস প্রতিরোধ হয়। স্থূলত্বের ঝুঁকিও কমে।
স্লিপ অ্যাপনিয়া
ভালো ঘুম না হলেই শুরু হয় বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা। আর ভালো ঘুমের অভাবের অন্যতম কারণ হল স্লিপ অ্যাপনিয়া। এই সমস্যায় ঘুমের মধ্যেই রোগীর অজান্তে শ্বাসক্রিয়া সামান্য সময়ের জন্য বারবার বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ঘুম ভেঙে যায় বারংবার। গভীর ঘুম হয় না। এইসব রোগীদের শ্বাসনালীতে সঠিক মাত্রায় বাতাস ঢুকতে না পারায় রাতে শোওয়ার সময় নাক ডাকেন। ঘুম থেকে ওঠার পর তরতাজা অনুভব করেন না। কাজ করতে করতেই ঘুমে ঢলে পড়েন। জনসংখ্যার ১৭ থেকে ২০ শতাংশ মানুষ স্লিপ অ্যাপনিয়ার সমস্যায় ভোগেন! স্লিপ অ্যাপনিয়ার কারণে বাড়ে হৃদরোগ, স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের আশঙ্কা। এখন প্রশ্ন হল স্লিপ অ্যাপনিয়ার কারণ কী? সেগুলি হল, টনসিল ও অ্যাডিনয়েডস গ্ল্যান্ডের ফুলে ওঠা শ্বাসনালীর চারপাশে ফ্যাট জমা নাকের কোনও হাড় বাঁকা থাকা নাকে পলিপ জমা ইত্যাদি।
কম ঘুমে আর কী কী সমস্যা?
শুধু স্লিপ অ্যাপনিয়াই নয়, ঘুম কম হলে ডিমেনশিয়ার মতো অসুখের আশঙ্কা বাড়ে। রোগীর অবস্থার অবনতি ঘটে। এছাড়া মৃগী রোগীর ঘুম না হলে ওষুধ খাওয়ার পরেও সমস্যা বাড়ে। ঘুম না হলে মাইগ্রেনের রোগীর মাথাব্যথার সমস্যাও বারবার হানা দেয়।
কতক্ষণ ঘুমাবেন?
৬ থেকে ১৩ বছর বয়সি বাচ্চাদের প্রতিদিন ৯ থেকে ১১ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। ১৪ থেকে ১৭ বছর বয়সি বয়ঃসন্ধির কিশোর-কিশোরীদের দরকার ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা ঘুম। অন্যদিকে প্রাপ্তবয়স্ক প্রত্যেক ব্যক্তির সারাদিনে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমের দরকার।
কম ঘুমের চিকিৎসা
রোগীর প্রয়োজনীয় ঘুম হচ্ছে কি না তা জানার জন্য রয়েছে পলিসোমনোগ্রাফি টেস্ট বা স্লিপ স্টাডি। এই টেস্ট থেকেই বোঝা যায় রোগীর জীবনযাত্রার পরিবর্তন কতখানি করতে হবে, স্লিপ অ্যাপ ডিভাইস লাগবে কি না ইত্যাদি। তবে কিছু মানুষের সার্জারি করার প্রয়োজনীয়তাও থাকতে পারে। জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মধ্যে অন্যতম বিষয় হল ওজন কমানো।
ভালো ঘুমের মোক্ষম দাওয়াই
শুধুমাত্র রাতে ঘুমানোর জন্যই বিছানা ব্যবহার করতে হবে। বিছানায় শুয়ে কোনওভাবেই টিভি বা মোবাইলে চোখ রাখা চলবে না। • প্রত্যেকদিন রাতে নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমোতে যাওয়া ও সকালে নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে ওঠা অভ্যেস করতে হবে। • দিনে ঘুমানো যাবে না। • রাতে ঘরের সবরকমের আলো নিভিয়ে দিন। বিকেল পাঁটচটার পর কফি, চা, কোল্ডড্রিংকস, মদ্যপান করা চলবে না।