আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সমাগমে আনন্দ বৃদ্ধি। চারুকলা শিল্পে উপার্জনের শুভ সূচনা। উচ্চশিক্ষায় সুযোগ। কর্মক্ষেত্রে অযথা হয়রানি। ... বিশদ
আসল লড়াই শুরু হয় এবার।
যে মুহুর্তে টেস্ট রিপোর্ট পজিটিভ আসে, অজানা ভয় যেন গ্রাস করে নেয়। ‘তাহলে কি আমাকে হাসপাতালে থাকতে হবে?’ স্বামী দূর থেকে বলে ওঠেন, ‘যা হয়েছে হয়েছে, কাউকে বলা যাবে না। সোসাইটি জানতে পারলে হাসপাতাল বা কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে যেতে বাধ্য করবে।’ কাজের লোককে ছুটি দেওয়াতে খুব সন্দেহের চোখে উত্তর দেয়, ‘ও মাগো, কি হবে? আমি কিন্তু একমাস আসবো না।’ এখানেই শেষ নয়, ওষুধের দোকানে ফোন করে ওষুধ চাইতে গেলে তারা কোভিডের ওষুধ বিল্ডিং সিকিউরিটির কাছে রেখে যাবে না, শুনতে হয়। হোম ডেলিভারি অর্ডার দেওয়ায়, সিকিউরিটি গার্ড বলে দেয়, ‘আপনার ফ্ল্যাটে আমরা খাবার পৌঁছে দেব না।’ কোভিডের থেকেও বড় লড়াই বোধ হয় এগুলি!
কিন্তু আমার প্রশ্ন অন্য। আমি তো অসুস্থ, অপরাধী তো নই। তাহলে আমাকে ঘিরে এই ভয় বা আতঙ্ক কেন? মাস্ক, স্যানিটাইজার, সামাজিক দূরত্ব এবং সুষম খাদ্যের মাধ্যমে কোভিডকে মোকাবিলা যে করতে পারি, এগুলি গত এক বছর ধরে আমরা শিখেছি, সচেতনও হয়েছি। আবার এও জানি, কোভিড এমন একটি অসুখ যা সংক্রামক এবং চিকিৎসায় দেরি হলে প্রাণঘাতী হতে পারে। তবে কেন কোনও ডাক্তার অবলীলায় বলেন, ‘প্যারাসিটামল খান, তিন দিন পর টেস্ট করান?’ উনি কি জানতেন না, তিনদিনে এই রোগ ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে? কেন মানুষের মনে এই সহজ কথাটি সহজভাবে বোঝানো হচ্ছে না যে, শুধু কোভিড নয়, যে কোনো রোগনির্ণয়েই দেরি হলে তা প্রাণঘাতী হতে পারে। এমনকী সাধারণ ফ্লু, সেটিও কিন্তু সংক্রমিত একটি ভাইরাস। চিকিৎসার দেরি হলে সেটিও হতে পারে প্রাণঘাতী। কেন সমাজের এই অদ্ভূত আচরণ? একজন কোভিড রোগী যদি সামাজিক সহায়তার অভাবে, লজ্জায় জ্বরের ওষুধ খেয়ে ধামাচাপা দিয়ে আরও চারটি মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ান, তাহলে তো ক্ষতিটা অনেক বেশি, তাই না? কোভিড নিয়ে আতঙ্ক, অভিমান, লজ্জা, কোনটাই নয়, ভ্যাকসিন, সঠিক সময়ে টেস্ট এবং যথাযথ ওষুধের মাধ্যমে আমরা প্রতিটি মানুষ হয়ে উঠতে পারি প্রকৃত কোভিড যোদ্ধা।