আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সমাগমে আনন্দ বৃদ্ধি। চারুকলা শিল্পে উপার্জনের শুভ সূচনা। উচ্চশিক্ষায় সুযোগ। কর্মক্ষেত্রে অযথা হয়রানি। ... বিশদ
ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও দেখা যাচ্ছে, অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। আমি বলি, অযথা ভয় পাবেন না।
কেন দুটো ডোজ?
ভারতে আপাতত কো-ভ্যাকসিন ও কোভিশিল্ড—এই দুটো টিকা চালু রয়েছে। দুটোরই দুটো ডোজ। প্রথমটিকে বলা হচ্ছে ‘প্রাইমিং ডোজ’—অনেকটা প্রথম আলাপের মতো। পরিচিতির পর দেওয়া হচ্ছে দ্বিতীয় বা বুস্টিং ডোজ।
শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে মূলত দু’ধরনের কোষ। বি-সেল এবং টি-সেল। বি-সেল অ্যান্টিবডি তৈরি করে। টি-সেল ভাইরাস আক্রান্ত কোষগুলি নষ্ট করে। কিন্তু, এই দুটো রাতারাতি সম্ভব নয়। সময়ের প্রয়োজন। তাই নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়। তখন ইমিউনিটি আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। তাই বুঝতেই পারছেন, প্রথম ডোজের পরই ভ্যাকসিনের সুরক্ষা আমরা আংশিকভাবে পাই। এই সময় দেহে ভাইরাস প্রবেশ করায় সংক্রমণের উপসর্গ দেখা যেতেই পারে। আবার দুটো ডোজের পরেও যে ১০০ শতাংশ সুরক্ষিত, তাও বলা যাবে না। কারণ, শরীরে কতটা অ্যান্টিবডি তৈরি হবে, তা টিকা ছাড়াও শারীরিক অবস্থার উপরও নির্ভরশীল।
কত দিনের সুরক্ষা?
দ্বিতীয় ডোজের ১৪ দিনের পর থেকে শরীরে পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি দেখা যায়। তা বেশিকম হতে পারে। তখনও আমাদের দেহে করোনা আক্রমণ করতেই পারে। কারণ, শরীর তো আর যন্ত্র নয়, সুইচ টিপলেই সুরক্ষিত! টিকা নেওয়ার পরও মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহার, দূরত্ববিধি বজায়, হাত ধোওয়া সব চলবে।
ভ্যাকসিনের ব্যবধান
আগে চার থেকে ছয় সপ্তাহ পর কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হতো। এখন বেড়ে ছয় থেকে আট সপ্তাহ হয়েছে। ব্যবধান বাড়লে বি এবং টি-সেল আরও ভালো কাজ করে। এমনই ধরা হচ্ছে। আবার ফাইজারের ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে ২১ দিন, মডার্নায় ২৮ দিন মানা হচ্ছে।
টিকা নিয়েও পজিটিভ, কী করবেন?
ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নেওয়ার পরও রিপোর্ট পজিটিভ এলে উপসর্গ অনুসারে নিয়মমাফিক কোয়ারেন্টাইনে বা আইসোলেশনে থাকতে হবে। তারপর রিপোর্ট নেগেটিভ এলে ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ নিতে সমস্যা নেই।
যদি দেখা যায়, পজিটিভ হওয়ার জন্য দ্বিতীয় ডোজের নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাচ্ছে, তাহলেও ভয়ের কারণ নেই। রিপোর্ট নেগেটিভ আসার দু’সপ্তাহ পরে আবার ভ্যাকসিন নেওয়া যায়।
ভ্যাকসিনের বিকল্প নেই
ভ্যাকসিন নিতেই হবে। সাধারণ ইনফেকশন থেকে ১০০ শতাংশ অ্যান্টিবডি তৈরি হয় না। হার্ড ইমিউনিটির জন্য অপেক্ষা করলে আরও সমস্যা হবে। অনেকে ভ্যাকসিন নেওয়ার আগে অ্যান্টিজেন টেস্টের কথাও বলছেন। অ্যান্টিজেন নেগেটিভ মানেই যে ইনফেকশন হয়নি, তা কিন্তু নয়। ভুললে চলবে না, টিকা নিয়ে এদেশে এখনও তেমন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। হাল্কা জ্বর, ব্যথা বাচ্চাদের ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেও হয়।
গুজবে কান নয়
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে পাড়া-প্রতিবেশীদের মধ্যে করোনা এবং টিকা নিয়ে নানা মতামত ঘুরছে। দয়া করে গুজবে কান দেবেন না।
করোনা নিয়ে হেল্পলাইন ও কাউন্সেলিং ফোন নম্বর রয়েছে। সেখানে সরাসরি ফোন করে সমস্যা জানান। সবশেষে অনুরোধ করি, বিজ্ঞানকে প্রাধান্য দিন, গুজবকে নয়।