আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সমাগমে আনন্দ বৃদ্ধি। চারুকলা শিল্পে উপার্জনের শুভ সূচনা। উচ্চশিক্ষায় সুযোগ। কর্মক্ষেত্রে অযথা হয়রানি। ... বিশদ
বিধানসভা ভোটের উত্তাপে টগবগিয়ে ফুটছে বাংলা। এর সঙ্গে আবার যোগ দিয়েছে সূর্যের তেজ। সকাল একটু গড়াতে না গড়াতেই চাঁদি ফাটা গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। তবে রোদ বলে তো আর ভোট প্রচার থেমে থাকবে না। সকাল সকালই দলীয় সমর্থকদের সঙ্গী করে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে বেরাচ্ছেন প্রার্থীরা। চলছে একনাগারে প্রচার। পায়ে হেঁটে বা হুড খোলা গাড়িতে চেপে মানুষের মনের দুয়ারে পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে। কোথাও কোথাও আবার খানিক দাঁড়িয়ে দিতে হচ্ছে গরম বক্তৃতা। এসব করতে করতে কখন যে সকাল পেরিয়ে দুপুর হয়ে যাচ্ছে, বোঝার উপায় নেই। এমতবস্থায় গরমের পাওয়ার প্লে ব্যাটিং থেকে শরীরকে সুস্থ রাখতে বিশেষ উদ্যোগ না নিলে শারীরিক সমস্যা হওয়া খুবই স্বাভাবিক। তাই হেভিওয়েট ভোট প্রার্থী থেকে একবারে নিচুতলার দলীয় কর্মী, রোদের দাপট থেকে নিজেদের বাঁচানোর পন্থা শিখতেই হবে। তবেই সুস্থ শরীরে ভোট ময়দানে লড়াই করা সম্ভব।
রোদ্দুর ঝঞ্ঝাট
অত্যধিক গরম থেকে হতে পারে হিট এক্সজশ্চন। আর্দ্রতা বেশি থাকার কারণে ক্রমাগত ঘামতে ঘামতে মানুষ এই সমস্যায় আক্রান্ত হন। এই সমস্যার শুরু হয় মাথাব্যথা দিয়ে। তারপর বিভ্রান্তি, কোনও জিনিসকে দু’টি দেখা, বমিবমিভাব ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। মানুষ অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারেন। এক্ষেত্রে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে চিকিৎসা প্রয়োজন।
দীর্ঘক্ষণ রোদে থাকলে হতে পারে হিট স্ট্রোক। এক্ষেত্রে গরম থেকে শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যায়। রোগীর বিভ্রান্তি, অস্পষ্ট কথা ইত্যাদি থাকতে পারে। পাশাপাশি মাথাব্যথা, বমিবমিভাব বা বমি হয়ে যাওয়া, দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাসের মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে। আপৎকালীন অবস্থায় এর চিকিৎসা দরকার।
কারা বেশি সাবধান?
বয়স ৫০-এর বেশি ডায়াবেটিস, হাই ব্লাডপ্রেশার বা অন্য কোনও ক্রনিক রোগ রয়েছে খিঁচুনি, মানসিক সমস্যা, মূত্র বাড়ানোর ওষুধ, ব্লাডপ্রেশারের কিছু ধরনের ওষুধ খেলে গরম থেকে সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
সমাধান
সকাল সকাল প্রচার সেরে ফেলতে হবে। সকাল ৬টা থেকে ১০ পর্যন্ত মিটিং, মিছিল করা যেতে পারে। সেই সময় সূর্যের তেজ থাকে সহনযোগ্য। তারপর আবার বিকেল পেরিয়ে রোদ পড়লে প্রচারে বেরনো যায়। সন্ধে থেকে রাত পর্যন্ত চলতেই পারে প্রচার অভিযান। দুপুর বেলায় চড়া রোদে বাড়িতে বসে সেরে ফেলা যায় মিটিং। এর মাধ্যমে গোটা দিনটাই খুব ভালো মতো ব্যবহার করা যাবে।
সকালে প্রচারে বেরিয়ে মাথায় টুপি পরতেই হবে। চাইলে ছাতাও ব্যবহার করতে পারেন। এর মাধ্যমে রোদ সরাসরি মাথায় লাগবে না।
রোদ এড়িয়ে ছাওয়ায় দাঁড়ানোই ভালো। তা সম্ভব না হলে মাঝে মাঝে রোদ থেকে ছাওয়ায় এসে দুই-তিন মিনিট দাঁড়াতে হবে। শরীর হবে ঠান্ডা।
সকাল হোক বা রাত, প্রচারে বেরিয়ে জল পান করা চাই। তবে মাত্রা ছাড়িয়ে জল পান করবেন না। এর ফলে শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা হঠাৎ কমে বিপদ হতে পারে। এক্ষেত্রে তৃষ্ণা পেলেই জল পান করুন। তৃষ্ণাকে অবহেলা করবেন না।
সঙ্গে রাখুন এক প্যাকেট ওআরএস জল। ওআরএস ঘামের সঙ্গে বেরিয়ে যাওয়া ইলেকট্রোলাইটসের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনে।
ডাব, তরমুজ, শসার মতো জলের পরিমাণ বেশি থাকা ফল অবশ্যই খান। অন্যান্য মরশুমি ফলও খেতে হবে।
অতিরিক্ত তেল, ঝাল, মশলা যুক্ত খাবার, ফাস্টফুড খেলে গরমে শরীরে অস্বস্তি বাড়ে। এর বদলে বাড়ির তৈরি হালকা খাবার খেতে হবে।
কফি, মদ্যপান ডিহাইড্রেশন বাড়ায়। এগুলি এড়িয়ে চলুন।
চোখে ধোঁয়াশা লাগছে, মাথা ব্যথা করছে— ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিলে ঠান্ডা হাওয়ায় বসুন। ভালো হয় এসি ঘরে বসতে পারলে। মুখে, ঘাড়ে বরফ ঠান্ডা জল দিন। সঙ্গে জল পান করতে হবে। খুব বেশি সমস্যা দেখা দিলে হাসপাতালে যেতে হবে।