সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় নজর দেওয়া প্রয়োজন। অতিরিক্ত পরিশ্রমে শরীরে অবনতি। নানাভাবে অর্থ অপচয়। কর্মপরিবর্তনের সম্ভাবনা বৃদ্ধি।প্রতিকার: ... বিশদ
ক্রনিক কিডনি ডিজিজ বা সিকেডি কী?
ধীরে ধীরে কিডনির কাজ করার ক্ষমতা কমে যাওয়াকে সিকেডি বলা হয়। এটা কয়েক মাস থেকে শুরু করে বছর খানেকের মধ্যে হতে পারে। রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা ও প্রস্রাবে প্রোটিনের মাত্রা দেখে অতি সহজে এই রোগ নির্ণয় করা যায়।
কিডনির কাজের ক্ষমতাকে ‘আনুমানিক গ্লোমেরুলার ফিলট্রেসন রেট’ (সংক্ষেপে ইজিএফআর) হিসেবে প্রকাশ করা হয়। ইজিএফআর-এর হিসাবে সিকেডি’কে পাঁচটি পর্যায়ে ভাগ করা হয়।
স্টেজ ১: ইজিএফআর—৯০
স্টেজ ২: ইজিএফআর—৬০-৮৯
স্টেজ ৩: ইজিএফআর—৩০-৫৯
স্টেজ ৪ : ইজিএফআর—১৫-২৯
স্টেজ ৫: ইজিএফআর <১৫
(একে এন্ড স্টেজ রেনাল ডিজিজও বলা হয়)
লক্ষণ
দীর্ঘদিন ধরে বমি ভাব হওয়া, অবসাদ, পা ফুলে যাওয়া, সারা শরীরে চুলকানি, শ্বাসকষ্ট, প্রস্রাব কমে যাওয়া, রাতে বারবার প্রস্রাব হওয়া ইত্যাদি।
তাই এবারের বিশ্ব কিডনি দিবসে এই রোগকে প্রতিহত করতে এবং তার অগ্রগতিকে থামাতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থায় বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।
নানাভাবে এই রোগ প্রতিরোধ করা যেতে পারে।
প্রাইমারি প্রিভেনশন
হাই ব্লাডপ্রেশার, সুগার, অস্বাস্থ্যকর খাদ্য, কিডনি ও মূত্রনালীর গঠনগত অস্বাভাবিকতা (যেমন—বয়স্কদের ক্ষেত্রে বর্ধিত প্রস্টেট গ্রন্থি, মূত্রথলির সমস্যা বা কিডনির রাস্তায় পাথর ইত্যাদি) ইত্যাদি সমস্যা কিডনির অসুখের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই এই রোগগুলো নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।
সেকেন্ডারি প্রিভেনশন
যাঁদের কিডনিতে আগে থেকেই সমস্যা আছে, তাঁরা অতিঅবশ্যই প্রেশার ও সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখুন। যৎসামান্য নুন খাওয়া (দিনে পাঁচ গ্রামের কম) এবং স্বল্প প্রোটিনজাত খাদ্য (<০.৮ গ্রাম/প্রতি কেজি ওজনে রোজ) গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া ডায়েটে শাকসব্জি বেশি রাখতে হবে।
টার্সিয়ারি প্রিভেনশন
যাঁদের কিডনি রোগ অ্যাডভান্সড স্টেজে চলে গিয়েছে, তাঁদের নানারকম শারীরিক জটিলতা যেমন—রক্তাল্পতা, হাড়ের সমস্যা, শরীরে অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যাওয়া, হার্টের সমস্যা ইত্যাদি দেখা দেয়। এগুলি নিয়ন্ত্রণ করার ব্যাপারেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। এই পর্যায়ে কিডনি প্রতিস্থাপন বা ডায়ালিসিসই হল নির্দিষ্ট চিকিৎসা।
কিডনি সুস্থ রাখার আটটি ‘গোল্ডেন রুলস’
১. সঠিক ওজন বজায় রাখুন ২. খাবারে নুনের মাত্রা কমান। রোজ সর্বোচ্চ এক চা চামচ বা পাঁচ গ্রামের কম নুন খাবেন। ৩. বাইরে খাবার এড়িয়ে চলুন। ৪. অনেকে জানেনই না তাঁদের সুগার আছে। সুগার পরীক্ষা করিয়ে নিন। আর যদি সুগার ধরা পড়ে, নিয়মিত রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষা করা খুবই জরুরি। সুগার ধরা পড়ার প্রথম বছরে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে কড়াকড়ি প্রয়োজন। ৫. হাই ব্লাডপ্রেশার কিডনির জন্য ক্ষতিকারক। ৬. প্রচুর পরিমাণ জল পান— একজন সাধারণ মানুষের দিনে কমপক্ষে দুই থেকে তিন লিটার জলপান করা উচিত। ৭. সিগারেট, বিড়ি কিডনির রক্ত প্রবাহ কমিয়ে দেয় এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি ৫০ শতাংশ বাড়ায়। তাই অবিলম্বে ছাড়ুন।
৮. অযথা পেইন কিলার (ব্রুফেন জাতীয়) এবং বিনা প্রেসক্রিপশনে ওভার দি কাউন্টার মেডিসিন নেবেন না। খাবেন না। কিডনিতে আগে থেকেই সমস্যা থাকলে পেইন কিলারের একটা ডোজই কিডনি নষ্ট করে দিতে পারে। তাই ডাক্তারের নির্দেশ অনুযায়ীই পেইন কিলার খান। ৯. সুগার, হাই প্রেশার এবং অতিরিক্ত ওজন থাকলে অবশ্যই নিয়মিত কিডনি ফাংশন টেস্ট করানো উচিত।
আমাদের মতো স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলিতে ডায়ালিসিস ও কিডনি প্রতিস্থাপনের পর্যাপ্ত সুবিধা সবার জন্য নেই। তাছাড়া কিডনি রোগীর চিকিৎসা খরচসাপেক্ষ বিষয়। তাই লাইফস্টাইল চেঞ্জ করে শুরুতেই রোগ থামান। ভালো থাকুন।